-->

ট্রাইব্যুনালে হেফাজতে ইসলাম

শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্ত ৫০

ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
ট্রাইব্যুনালে হেফাজতে ইসলাম

রাজধানীর শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে গণহত্যা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ অভিযোগ দাখিল করেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতা জুনায়েদ আল হাবিব ও মাওলানা মামুনুল হকের পক্ষে আজিজুল হক ইসলামাবাদী। এতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ, শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ ৫০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

হেফাজত নেতা মুফতি হারুন ইজহারের আগে গত ২০ আগস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় শেখ হাসিনাসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ দাখিল করেন। ওই অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের; সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন; ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস; সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদ; সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান; সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ; নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি শামীম ওসমান; সাবেক এমপি হাজি সেলিম; সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকী; সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক; সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ; ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ; ডিএমপির সাবেক উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার; একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির; নির্মূল কমিটির সদস্য অধ্যাপক মুনতাসির মামুন; আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ; গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকার; একাত্তর টিভির সাবেক সিইও মোজাম্মেল হক বাবু; সময় টিভির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আহমেদ জোবায়ের; এবিনিউজ২৪ ডটকমের সম্পাদক সুভাস সিংহ রায়; সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব নাঈমুল ইসলাম খান এবং এনএসআইয়ের মো. মনজুর আহমেদের নাম রয়েছে।এদিকে গতকাল অভিযোগ দাখিলের পর হেফাজত ইসলামের নেতারা জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এই গণহত্যার বিচার তো হয়নি; বরং তাদের সংগঠনের অনেক নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে বছরের পর বছর কারাগারে আটক রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। এখন অন্তর্বর্তী সরকার এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করবে বলে আশা করছেন তারা।

ইসলামবিরোধী ব্লগারদের শাস্তির দাবিতে ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলে সমাবেশ ডাকে হেফাজত ইসলাম। সেই সমাবেশ ঘিরে পুরো মতিঝিল এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা আর তাণ্ডব চলে। পরে সেই রাতে যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের মতিঝিল থেকে সরানো হয়। শাপলা চত্বরের অভিযানে ৬১ জন নিহত হন বলে সে সময় এক প্রতিবেদনে দাবি করে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’। যদিও পুলিশের দাবি, রাতের অভিযানে কেউ মারা যাননি। তবে দিনভর সংঘাতে নিহতের সংখ্যা ১১।

অধিকারের প্রতিবেদনে প্রকাশিত সংখ্যাটি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হলে ওই বছরের ১০ আগস্ট গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে জিডিটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। ওই মামলায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্বে থাকা অধিকার সম্পাদক আদিলুর রহমান খান শুভ্র ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ওই মামলায় তাদের দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়ে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর রায় দেওয়া হয়। পরে তারা জামিনে মুক্তি পান। আদিলুর রহমান খান বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বে রয়েছেন। আর ২৪ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা হয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক নায়েবে আমির ও সুন্নি দেওবন্দি ইসলামী পণ্ডিত আ ফ ম খালিদ হাসান। তিনি চরমোনাইয়ের পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলনের শিক্ষা উপদেষ্টা ও মাসিক আত তাওহীদের সম্পাদক।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য

Beta version