আলহাজ অ্যাডভোকেট মো. শাহ আলম ধনাঢ্য ব্যবসায়ী। তিনি প্রথমসারির শিল্প উদ্যোক্তা। তার প্রতিষ্ঠিত ম্যাটাডোর গ্রুপে প্রায় ৪ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। তিনি একই সঙ্গে একজন প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী। সমাজসেবক হিসেবে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। তিনি রাজধানীর লালবাগ ও হাজারীবাগ এলাকার জাতীয়তাবাদী চিন্তাচেতনার উদারপন্থি সমাজসেবক, ইসলামিক চিন্তাবিদ ও জনহিতৈষী হিসেবে সুপরিচিত। গরিব-দুঃখীদের তিনি নানাভাবে সহযোগিতা করে থাকেন। নানা ইস্যুতে সম্প্রতি তিনি ভোরের আকাশ এর সঙ্গে খোলামেলা কথাবার্তা বলেছেন। তিনি বলেছেন, তিনি ব্যবসা নয়, সমাজসেবাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিশেষ প্রতিবেদক সাজেদা হক।
ভোরের আকাশ: কেমন আছেন?শাহ আলম: আলহামদুলিল্লাহ। সকলের দোয়ায় ভালোই আছি।ভোরের আকাশ: ম্যাটাডোর সম্পর্কে কিছু বলুন?শাহ আলম: আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষ হিসেবে যা করার আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। এলাকাবাসীর জন্য ভালো কিছু করে যেতে চেয়েছি। আমি আমার জানামতে এলাকাবাসী এবং আমার স্বজনদের মঙ্গল কামনা ছাড়া কোনোদিন অমঙ্গল কামনা করিনি। ১৯৮০ সালে ম্যাটাডোর পেন দিয়ে ব্যবসার জগতে পা রাখি। আমি এবং আমার শ্রমিকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ম্যাটাডোর গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এখন সুপ্রতিষ্ঠিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান। স্টেশনারি, ব্যক্তিগত যত্ন পণ্য, খাদ্যপণ্য, নির্মাণসামগ্রী, প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রী, বিনোদন এবং স্বাস্থ্যসেবা বা হাসপাতালসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছি।ভোরের আকাশ: আরও কিছু করার পরিকল্পনা আছে?শাহ আলম: আছে। আমি যা করতে পারিনি, আমার সন্তানরা তা করবে—এটাই আল্লাহর কাছে দোয়া করছি। আপনারা সবাই আমার ও আমার সন্তানদের জন্য দোয়া করবেন।ভোরের আকাশ: ব্যবসায়ী না সমাজসেবক—কোন পরিচয়ে বেশি তৃপ্ত আপনি?শাহ আলম: এলাকায় রফিকুল ইসলাম মোল্লা মাদরাসা এবং মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ করেছি; যার ব্যয় কোটি টাকার উপরে। হাজারীবাগ বোরহানপুর জামে মসজিদ তৈরি করেছি সৌদি আরবের মসজিদের আদলে। কাজিরবাগ মসজিদ-মাদরাসা, আজিম উদ্দিন হুজুরের এতিমখানা, ম্যাটাডোর স্টাফ কোয়ার্টার মসজিদ, চাঁদপুর হাজিগঞ্জ জয়সারা চৌধুরী বাড়ি মসজিদ, মাদরাসাসহ এতিমখানায় আমি সাধ্যমতো দান করি। এছাড়া ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের অনেক মসজিদ ও মাদরাসা নির্মাণে অর্থ সহায়তা দিয়েছি। এছাড়াও সিলেট, হবিগঞ্জ জেলায় নির্মিত মসজিদ ছাড়াও সারাদেশের শত শত মাদরাসা, এতিমখানা ও মসজিদে আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। এসব কাজের বাইরেও মনে শান্তি আনে—এমন কাজের তালিকায় সবার উপরে রয়েছে অস্বচ্ছল মানুষদের হজ করানো। এই কাজটা করে আমি সবচেয়ে বেশি তৃপ্তি পাই।ভোরের আকাশ: ম্যাটাডোরের কর্মচারীদের নিয়ে আপনার ভাবনা কী?শাহ আলম: ম্যাটাডোর আমার যৌবনের প্রথম উদ্যোগ। এই উদ্যোগের কারণেই আজ আমি মানুষের উপকার করতে পারছি। সুতরাং এখানকার কর্মচারীদের জন্য কোয়ার্টার, তাদের সন্তানদের জন্য আর্থিক সহায়তা, শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, এলাকার বেকারত্ব দূর করেছি। তাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেছি ম্যাটাডোর হাসপাতাল।ভোরের আকাশ: রাজনীতি করার কোনো আগ্রহ আছে কী?শাহ আলম: দ্যাখেন, আমি একজন আইনজীবী ও ব্যবসায়ী। সরকার আসে, সরকার যায়। আমি সরাসরি কোনো দলকেই সাপোর্ট করি না। আমার সন্তানরাও তা-ই। আমার একটাই দল, আমি মুসলিম, আমি আল্লাহর লোক। বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় সকলেই বলতো আমি তাদের লোক, আওয়ামী লীগের সময় বলতো আমি তাদের লোক। কিন্তু দিন শেষে আমি একজন আইনজীবী ও ব্যবসায়ী। পেশাই আমার নেশা। সাধারণ মানুষের উপকারে আসি। এর চেয়ে বড় তৃপ্তি আর কিছু নাই।ভোরের আকাশ: নিজেকে কিভাবে মূল্যায়ন করেন?শাহ আলম: কর্মজীবনের শুরুতে স্বাভাবিকভাবে যুদ্ধ চালাতে হয়েছে। দিন-রাত পরিশ্রমের পর দাঁড়িয়েছে একটার পর একটা প্রতিষ্ঠান। সেখান থেকে পেয়েছি আর্থিক স্বচ্ছলতা। পরবর্তীতে আমার সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করতে হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জন্য ভালো কিছু করতে চেয়েছি; যার সবটুকুই দৃশ্যমান। আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। বাকিটা বলতে পারবে আমার এলাকাবাসী এবং আপনারা যারা গণমাধ্যমে কাজ করছেন।ভোরের আকাশ: আপনাকে ধন্যবাদ।শাহ আলম: আপনাকেও ধন্যবাদ।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য