-->

আজ ঢাকায় আসছে আইএমএফ মিশন

ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
আজ ঢাকায় আসছে আইএমএফ মিশন

ঋণের চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের আগে শর্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি দেখতে আজ ঢাকায় আসছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মিশন। আইএমএফের গবেষণা বিভাগের ডেভেলপমেন্ট ম্যাক্রোইকোনমিকস বিভাগের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিওর নেতৃত্বে দশ সদস্যের মিশন গত জুনভিত্তিক বিভিন্ন শর্ত বাস্তবায়ন এবং সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আসছেন তারা।

আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। এর এক দিন পর প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। গত বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তিতে পাওয়া যায় ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। প্রায় একই পরিমাণ অর্থ পরের কিস্তিগুলোতে পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সরকারের বাড়তি চাহিদা থাকায় গত জুনে তৃতীয় কিস্তিতে ১১৫ কোটি ডলার পায় বাংলাদেশ। তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। চতুর্থ কিস্তিতেও ১০০ কোটি ডলারের বেশি পাওয়া যাবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে। এই মিশন ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত আইএমএফ কর্মসূচির তৃতীয় পর্যালোচনার জন্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করবে। চতুর্থ কিস্তির জন্য জুনভিত্তিক দেওয়া বিভিন্ন শর্তের মধ্যে কর সংগ্রহ ছাড়া সব শর্ত পূরণ করায় চতুর্থ কিস্তিতে বাড়তি ডলারসহ নতুন ঋণের আওতায় আরও আর্থিক সহায়তা পাওয়া যেতে পারে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানান, প্রথম কিস্তি ছাড় করার পর পরবর্তী অর্থ সমান ছয় কিস্তিতে ছাড় করার কথা ছিল। সে হিসাবে প্রতি কিস্তির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৭০ কোটি ডলার। কিন্তু বাংলাদেশ ডলার সংকট কাটিয়ে উঠতে তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির পরিমাণ বাড়ানোর অনুরোধ করলে সংস্কার কার্যক্রমে সন্তুষ্ট হয়ে বাড়তি অর্থ ছাড়ে সম্মত হয় আইএমএফ। তাই আসন্ন মিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ডিসেম্বরের শেষ বা আগামী জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকে চতুর্থ কিস্তি বাবদ প্রায় ১১৫ কোটি ডলার পেতে পারে বাংলাদেশ। চতুর্থ কিস্তির জন্য গত জুনভিত্তিক অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে দেওয়া শর্ত বাস্তবায়ন করার কথা রয়েছে। শর্ত অনুযায়ী জুন শেষে নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমপক্ষে ১৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার রাখার কথা। ওই সময় নিট রিজার্ভ ছিল ১৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। অবশ্য গত ৩০ জুনের মধ্যে রিজার্ভ রাখার মূল লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। তবে তৎকালীন সরকারের অনুরোধে গত মে মাসের শেষের দিকে আইএমএফ তা সংশোধন করে ১৪ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রাথমিক বাজেট ঘাটতি নির্ধারিত সংখ্যায় নামিয়ে আনাসহ বেশ কিছু কাঠামোগত শর্ত বাস্তবায়ন সম্ভব হলেও কর রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। গত অর্থবছরে কর-রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয় ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা। অর্থ বিভাগের তথ্য বলছে, গত জুন পর্যন্ত সরকার ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২০৯ কোটি টাকা কর আদায় করেছে। এটি আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২৫ হাজার ৩২১ কোটি টাকা কম। ঋণ কর্মসূচির শুরু থেকেই অন্যান্য শর্ত ভালোভাবেই পূরণ করা সম্ভব হলেও কর রাজস্ব ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে থেকেছে সরকার। তবে দুটি ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ঋণ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে আইএমএফ।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য

Beta version