সংকটে ডিজিটাল নিউজ মিডিয়া

ইমরুল শাহেদ
সংকটে ডিজিটাল নিউজ মিডিয়া

ডিজিটাল মিডিয়ায় প্রচারিত সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে। ফেসবুক, ইউটিউব বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত সংবাদ কতটা সত্য বা কতটা অসত্য, তা নিয়ে এসব প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারকারীরা ধোঁয়াশায় পড়েন। অনেকেই এসব সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বিভিন্ন দৈনিকের পোর্টালে যান। উল্লেখিত ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো অধিক ভিউজের প্রত্যাশায় সত্য-মিথ্যা মিলিয়ে সিরিয়াস বিষয়গুলোকে বিনোদনমূলক করে পরিবেশন করে। এ কারণে সংবাদ পরিবেশনার ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অন্যদিকে রয়েছে বিগ টেক জায়ান্টগুলোর চাপ।

ভারতের জি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি তাদের কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ডিজিটাল নিউজ মিডিয়া নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। সেখানে তিনি ডিজিটাল নিউজ ব্যবসায় গুগল ও মেটার মতো বিগ টেক কোম্পানিগুলোর মনোপলির কথা উল্লেখ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে গণতন্ত্র রক্ষায় অনলাইন গণমাধ্যমকে সুরক্ষিত করতে নীতি নির্ধারণের ওপর জোর দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিগ টেক কোম্পানিগুলো দীর্ঘদিন ধরে ডিজিটাল মিডিয়ায় প্রভাবশালী অবস্থান ধরে রেখেছে। অনলাইন মিডিয়া হাউসগুলোকে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ না দিয়েই তারা সেই হাউসগুলোর তৈরি সামগ্রী থেকে বিপুল আয় করে চলেছে। এর ফলে ডিজিটাল নিউজ প্ল্যাটফর্মগুলো অনিশ্চিত পরিস্থিতির মুখোমুখি।

দীর্ঘদিনের অভিযোগ, টেক জায়ান্টগুলো ‘হয় নিন, নয়তো ছেড়ে দিন’ মনোভাব নিয়ে চলে এবং কোনো আলোচনায় আসতে চায় না। ফলে ডিজিটাল নিউজ মিডিয়াগুলো টেক জায়ান্টদের নির্ধারিত শর্ত মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প খুঁজে পায় না।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ, যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে বিগ টেক কোম্পানিগুলোর কার্যকলাপের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার হয়েছে। ভারতের সিসিআই-ও এ নিয়ে সমীক্ষা শুরু করেছে। যদিও এখনও বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। ডিজিটাল মিডিয়ার নিয়ন্ত্রণ ও বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষায় জোরালো দাবি উঠছে।

এখানে টেক জায়ান্টদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সার্চ ইঞ্জিনগুলোর ভূমিকার কথাও উল্লেখযোগ্য। অনেক সময় বিভ্রান্তিকর খবরগুলো শীর্ষে জায়গা করে নেয়, যা উদ্বেগজনক। এর পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উদ্ভাবন, চ্যাটজিপিটি ও জেমিনির মতো এআই সরঞ্জামের উত্থান, এবং ছবি ও ভিডিও সম্পাদনায় এআই-এর ব্যবহার অনলাইন সাংবাদিকতায় সত্য-অসত্য যাচাইকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। এজন্য প্রয়োজন সাম্য, স্বচ্ছতা ও মৌলিক অধিকার বজায় রেখে ডিজিটাল ল্যান্ডস্কেপে একটি সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়ন।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য