বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ জরিপের প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে সাক্ষরতার হার ৭৭ দশমিক ৭ শতাংশ। গ্রামে এ হার ৭৪ দশমিক ৬ এবং শহরাঞ্চলে ৮৪ দশমিক ৮ শতাংশ। সেই হিসাবে গ্রামের চেয়ে শহরে সাক্ষরতার হার বেশি। তবে বৈশ্বিক সংগঠন গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশনের (জিএসএমএ) প্রতিবেদনের তথ্যমতে, লিখতে ও পড়তে না পারায় ইন্টারনেট ব্যবহার করছে না ঢাকাসহ শহরাঞ্চলে বাস করা অন্তত ২৮ শতাংশ মানুষ। অন্যদিকে সাক্ষরতার হার কম থাকা সত্ত্বেও গ্রামের মাত্র ১৯ শতাংশ মানুষ লিখতে-পড়তে না জানায় ইন্টারনেট ব্যবহার করছে না।
গত অক্টোবর মাসে প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে সর্বশেষ ২০২৩ সালের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের ১২টি নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের মানুষের ওপর চালানো সমীক্ষার তথ্যে প্রতিবেদন সাজিয়েছে জিএসএমএ। দেশগুলো হলো-মিশর, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, সেনেগাল, নাইজেরিয়া, উগান্ডা, বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, গুয়েতেমালা ও মেক্সিকো। অর্থাৎ, পিছিয়ে পড়া দেশগুলোর মধ্যেও আরও পিছিয়ে বাংলাদেশ।
জিএসএমএর প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের হার শহরাঞ্চলে ৪৩ শতাংশ এবং গ্রামে ২৭ শতাংশ। তবে তারা প্রতিদিন ইন্টারনেট ব্যবহার করে না। নিয়ম করে রোজ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হার শহরে ৪০ এবং গ্রামে ২৪ শতাংশ। সমীক্ষায় উঠে এসেছে, বাংলাদেশের ৭৫ শতাংশ মানুষ মোবাইল ইন্টারনেট সম্পর্কে জানে। তাদের মধ্যে যারা ব্যবহার করে না তাদের ক্ষেত্রে বড় বাধা হলো- সাক্ষরতা ও ডিজিটাল দক্ষতা না থাকা। তাছাড়া শহরের বড় একটি অংশ সাইবার অপরাধ থেকে নিজেদের নিরাপদ রাখতে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে না। তবে গ্রামের মানুষ জানিয়েছে, তাদের জন্য বড় বাধা ইন্টারনেটের দাম। ব্যবহার জানা ১১ শতাংশ মানুষের মতে, স্মার্টফোন কেনা এবং বেশি দাম দিয়ে ইন্টারনেট কিনে চালানোর সামর্থ্য নেই তাদের। অন্যদিকে শহরের ৮ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেটের দাম বেশি বলে জানিয়েছেন। তাছাড়া কর্মজীবীরা ‘যথেষ্ট সময়’ না থাকায় ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে।
মোবাইল অপারেটর রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়াতে হলে নীতিগত বিষয়ে শিগগির পরিবর্তন আনা দরকার। তাছাড়া মোবাইল ইন্টারনেট প্যাকেজের খরচ কমানোও সম্ভব। এ ব্যাপারেও সরকার-সংশ্লিষ্ট নীতিগুলোতে কিছু পরিবর্তন আনা হলে অপারেটরদের জন্য কাজটা আরও সহজ হবে।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য