গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রিক অস্থিরতার রেশ এখনো কাটেনি। এরই মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে প্রশাসনে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে সর্বস্তরের কর্মকর্তার মধ্যে এ অস্থিরতা চলছে। প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (বাসা) এবং দেশের সব জেলা প্রশাসক (ডিসি) প্রতিবাদ জানিয়েছেন। শুধু প্রশাসন নয়; স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মাঝেও ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে গতকাল রোববার শোডাউন করেছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। তবে আলোচনায় বসার কথা জানিয়েছেন জনপ্রশাসন সচিব মো. মোখলেস উর রহমান।
উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের কোটা কমাতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গতকাল সচিবালয়ে নজিরবিহীন শোডাউন দিয়েছেন কর্মকর্তারা। এরপর বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমানের কাছে লিখিত দাবি-দাওয়া পেশ করেন তারা।
জনপ্রশাসন সচিব বলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার নিয়ে অনেকের মতামত আছে, তারা মতামত দিচ্ছেন। বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন লিখিতভাবে তাদের প্রস্তাবনা দিয়েছেন। আমরা এটা কমিশনে জমা দেব। তিনি বলেন, কমিশনের সুপারিশ চূড়ান্ত করার আগে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনায় বসা হবে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এই আলোচনা হবে। আশা করছি, এই আলোচনার পরে বিভিন্ন ক্যাডারের মধ্যে আর ভুল বোঝাবুঝির কোনো অবকাশ থাকবে না।
জানা গেছে, রোববার সকাল সাড়ে ১১টার পর থেকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সচিবালয়ের তিন নম্বর ভবনের সামনে জড়ো হন। ঢাকার মধ্যে যেসব কর্মকর্তাদের অফিস তাদের অনেকেও সচিবালয়ে আসেন। বেলা পৌনে ১২টার দিকে কয়েকশ কর্মকর্তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মন্ত্রণালয়ের দ্বিতীয় তলায় জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধানের দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন। অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ১৫-২০ জন কর্মকর্তা জনপ্রশাসন সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের দাবি-দাওয়া উত্থাপন করেন।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ এবং সাবেক আমলারা মনে করছেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পর থেকেই প্রশাসনে রদ-বদল, নিয়োগ এবং চাকরিচ্যুত করার ঘটনায় সৃষ্ট অস্থিরতা এখনও পুরোপুরি দূর হয়নি। বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ ও রাগ-অভিমান। এর মধ্যেই আলোচনায় চলে এলো জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবের বিষয়টি। আবার ফুঁসে উঠেছে উত্তেজনার পারদ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে বর্তমান জনপ্রশাসন ঢেলে সাজাতে সুন্দর গঠনমূলক প্রস্তাব দেওয়ার জন্য। বর্তমানে এ কমিশনের কিছু প্রস্তাব বিতর্ক ও ক্ষোভ তৈরি করেছে। অবিলম্বে এ অস্থিরতার প্রশমন না করলে সরকারের ঝুঁকিতে পড়ার শঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে সরকার। কয়েকটি কমিশন ইতোমধ্যে তাদের কাজ এগিয়ে এনেছে বলে জানা গেছে। এরমধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের সুপারিশ জমা দেবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। গত ১৭ ডিসেম্বর সচিবালয় বিটের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান। এ সময় তার সঙ্গে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য সচিব মো. মোখলেস উর রহমানও উপস্থিত ছিলেন। এদিন তারা জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত বেশকিছু সুপারিশ সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। যেগুলো নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
কমিশন যেসব সুপারিশ করবে বলে জানিয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হলো-সরকারি চাকরিতে নিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিল; সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) বিদ্যমান ২৬টি ক্যাডার থেকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্যাডার বাদ দেওয়া; উপসচিব ও যুগ্মসচিব পদে পরীক্ষা দিয়ে পদোন্নতি; উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য ৫০% এবং অন্য ক্যাডার থেকে ৫০% করা।
এসব প্রস্তাবিত সুপারিশের কয়েকটি নিয়ে প্রশসানের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে। আর সেই অসন্তোষ এতোটাই প্রকট যে আমলাদের বিভিন্ন সংগঠন থেকে এসব বিষয় নিয়ে বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে। এমনকি কমিশন সরকারের কাছে প্রতিবদেন জমা দেওয়ার আগেই সেটি জনসম্মুখে প্রকাশ করার কারণেও ক্ষুব্ধ হয়েছেন সরকারি কর্মকর্তারা। এখন পর্যন্ত ৬৪ জেলা প্রশাসকের পাশাপাশি অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন, বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন, বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের মতো বড় সংগঠন এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে।
৬৪ জেলা প্রশাসকের প্রতিবাদ : উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য ৫০% ও অন্য ক্যাডারের জন্য ৫০% করা বিষয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের সব জেলার জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)। মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের দপ্তরে এ সংক্রান্ত যৌথ প্রতিবাদ লিপি জমা দিয়েছেন তারা।
এতে বলা হয়েছে, দেশের সর্বোচ্চ আদালতে মীমাংসিত একটি বিষয় নিয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের আনুষ্ঠানিক লিখিত প্রতিবেদন সরকারের কাছে জমা দেওয়ার আগেই আকস্মিকভাবে এই ধরনের ঘোষণা অনভিপ্রেত, আপত্তিকর ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে দুর্বল করার শামিল।
উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংস্কার কমিশন যে ধরনের সুপারিশ করার চিন্তা করছে, তা বাস্তবতা বিবর্জিত। এ ধরনের উদ্যোগ কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়, রাষ্ট্রে প্রশাসন ক্যাডারের কার্যপরিধির সঙ্গে নীতি নির্ধারণের নিবিড় সম্পর্ক। প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে অন্য ক্যাডারের বড় পার্থক্য হলো- প্রশাসন ক্যাডারের কাজের ধরন সামগ্রিক বিষয়কে ধারণ করে। যেখানে অন্যান্য ক্যাডারের কাজের ধরন বিশেষায়িত।
উল্লেখ্য, বর্তমানে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা ৭৫% এবং অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা ২৫% পদোন্নতি পেয়ে থাকেন।
অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবাদ : উপসচিব পদে পদোন্নতির শতকরা হারের বিষয়ে কমিশনের সুপারিশ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। উপসচিব/যুগ্মসচিব/অতিরিক্ত সচিব/সচিব পদে শতভাগ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন হওয়া উচিত বলেও মনে করে সংগঠনটি। গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আপত্তির কথা জানায় সংগঠনটি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৭ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন থেকে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় কমিশন প্রধানের দেওয়া বক্তব্যের প্রতি বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। কমিশন প্রধান সরকারের উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য বিদ্যমান ৭৫% থেকে কমিয়ে ৫০% করার সুপারিশের বিষয় অবহিত করেছেন। একটি জনমুখী, দক্ষ, নিরপেক্ষ এবং যুগোপযোগী জনপ্রশাসন বিনির্মাণে প্রজাতন্ত্রের সর্বনিম্নতম বেতন গ্রেডের কর্মচারি থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ বেতন গ্রেডের কর্মকর্তা পর্যন্ত বিবেচনা করে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানে সমন্বিত সুপারিশ প্রণয়ন করাই কমিশনের মূল উদ্দেশ্য হওয়া আবশ্যক বলে অ্যাসোসিয়েশন মনে করে।
এতে বলা হয়, উপসচিব পদোন্নতি প্রত্যাশী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মতামত, জরিপ, সমীক্ষা সংগ্রহ করে তার ভিত্তিতে পর্যাপ্ত বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়নি বলে জানা যায়। ফলে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে মাঠ প্রশাসনসহ সকল স্তরে কর্মরত বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন কমিশন প্রধানের এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, প্রশাসনসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন সার্ভিসের কর্মকর্তারা যখন অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনামতে আইনশৃঙ্খলাসহ স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং সার্বিক পরিস্থিতি উন্নয়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন, সেখানে এ ধরনের একটি বক্তব্য আন্তঃসার্ভিস দ্বন্দ্বকে উসকে দিতে পারে এবং সংস্কার উদ্যোগসহ জনপ্রশাসনকে দুর্বল করে দিতে পারে বলে অ্যাসোসিয়েশন আশঙ্কা ব্যক্ত করছে। কমিশনের লিখিত রিপোর্ট সরকারের কাছে দাখিলের আগেই আকস্মিকভাবে এ ধরনের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কেন প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হলো এবং তা কোনো মহলের ইন্ধনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রমকে অস্থিতিশীল করার অপপ্রয়াস কি-না তা খতিয়ে দেখার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানানো হচ্ছে।
বিসিএস ‘ক্যাডার’ থেকে বাদ পড়তে পারেন শিক্ষক ও চিকিৎসকরা : সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা অত্যন্ত যৌক্তিকভাবে রাষ্ট্রের কল্যাণের স্বার্থে মনে করি, চারটি কারণে উপসচিব/যুগ্মসচিব/অতিরিক্ত সচিব/সচিব পদে শতভাগ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন হওয়া উচিত।
ক্ষুব্ধ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা : বিসিএস সাধারণ শিক্ষাকে ক্যাডার বহির্ভূত করার খসড়া সুপারিশ প্রত্যাখান করে প্রতিবাদলিপি দিয়েছেন বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার ও বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারকে কাঠামোর বাইরে রাখার সুপারিশ করতে যাচ্ছে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ১৬ হাজার সদস্যের একক মুখপাত্র বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন এই সুপারিশ সর্বোতভাবে সর্বতভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। ২০১২ সালে অনুরূপ একটি প্রচেষ্টা আমরা প্রতিহত করেছি। বিষয়টি মীমাংসিত। এতে আরও বলা হয়, সংস্কারের মাধ্যমে সব বৈষম্য নিরসন ও গতিশীল জনবান্ধব জনপ্রশাসন তৈরির লক্ষ্যে গঠিত কমিশনের এ ধরনের সুপারিশ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বৈষম্যবিরোধী মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই এ সুপারিশ প্রত্যাহার করা না হলে কার্যকর প্রশাসনিক সংস্কার ব্যর্থ হবে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে কোনোরূপ আলোচনা না করে কমিশনের এমন প্রস্তাবনা তৈরি এবং গণমাধ্যমে একতরফাভাবে প্রচার করা সুবিবেচনা প্রসূত নয়। শিক্ষা খাতে অস্থিরতা তৈরি করে সরকারকে অস্থিতিশীল করার এটি কোনো ষড়যন্ত্র কি-না তা খতিয়ে দেখা উচিত।
ক্ষোভ স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তাদের : বিশেষায়িত বিভাগ বিবেচনা করে স্বাস্থ্যকে ক্যাডার থেকে বাদ দিতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন যে সুপারিশ করতে যাচ্ছে, সেটির প্রতিবাদ জানিয়েছে বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন। অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক মো. নেয়ামত হোসেন এবং সদস্য সচিব উম্মে তানিয়া নাসরিন স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদলিপিতে এসব কথা বলা হয়।
বাংলাদেশ হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, ক্যাডার কাঠামোর বাইরে রাখার যে সুপারিশ সংস্কার কমিশন করতে যাচ্ছে, সেই সংস্কার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন।
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্যের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অনভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের পদায়ন করায় স্বাস্থ্য খাত বিজ্ঞানভিত্তিক ও যুগোপযোগী হয়নি। উল্টো পথে হেঁটে আমলাতান্ত্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কায়েম হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল ও নীতিনির্ধারণী পদগুলোতে মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন স্বাস্থ্য ক্যাডারের দক্ষ কর্মকর্তাদের পদায়ন করে প্রকৃত বিজ্ঞানভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব।
এতে বলা হয়, সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্য নিরসন, গতিশীল ও জনবান্ধব জনপ্রশাসন তৈরির লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশন প্রকৃত সংস্কার প্রস্তাব বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যকে ক্যাডার-বহির্ভূত করার হঠকারী সুপারিশ করা হচ্ছে। এটি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন তৈরি ও বৈষম্যবিরোধী মূল চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই সুপারিশ প্রত্যাহার করা না হলে প্রশাসনিক সংস্কার ব্যর্থ হবে।
আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে জানাতে চাই, হেলথ ক্যাডারের সাথে আলোচনা ছাড়া কোনো সংস্কার প্রস্তাব মেনে নেওয়া হবে না।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য