আতঙ্ক ছড়াচ্ছে শীতজনিত রোগ

শিপংকর শীল
আতঙ্ক ছড়াচ্ছে শীতজনিত রোগ
  • সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, টনসিলাইটিস, ব্রঙ্কিওলাইটিস, সাইনোসাইটিস, অ্যাজমা, চর্মরোগ, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ার তীব্রতা বেড়েছে।
  • গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫৭ জনের। তাদের মধ্যে ৫০ জনের শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ছিল।
  • এ সময়ে মোট আক্রান্ত ১ লাখ ৫০ হাজার ৬১০ জন। এর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ আট হাজার ৫৭৬ জন আর শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত ৪২ হাজার ৩৪ জন।

মাঝারি থেকে তীব্র শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। শীতকালে সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, টনসিলাইটিস, ব্রঙ্কিওলাইটিস, সাইনোসাইটিস, অ্যাজমা, চর্মরোগ, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়ার তীব্রতা বাড়ে। পহেলা নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত শীতজনিত রোগের মৌসুম ধরা হয় বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। চলতি মৌসুমে পহেলা নভেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন শীতজনিত রোগে মারা গেছেন ৫৭ জন। মারা যাওয়া ৫৭ জনের মধ্যে ৫০ জনই শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর এসময়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, শীতে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় বাতাসে জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়। ফলে বিভিন্ন কারণে শীতজনিত রোগব্যাধির আগমন ঘটে। এবারও এ ধরনের রোগব্যাধি দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, হাঁপানি, টনসিলাইটিস, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ (ব্রঙ্কিওলাইটিস), সাইনোসাইটিস, বাত, আর্থ্রাইটিস ও চামড়ার শুষ্কতা অন্যতম। এ সময় শীতে এসব রোগ থেকে মুক্ত থাকার জন্য ঠান্ডা অনুসারে গরম কাপড় ব্যবহার, যতটা সম্ভব ঠান্ডা পরিবেশ এড়িয়ে চলা জরুরি।

নতুন বছরের জানুয়ারির চারদিনে শীতজনিত রোগে মারা গেছেন ৬ জন। আর গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে আক্রান্ত হয়েছেন মোট এক লাখ ৫০ হাজার ৬১০ জন। এর মধ্যে ডায়রিয়াতে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ আট হাজার ৫৭৬। এ ছাড়া শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন ৪২ হাজার ৩৪ জন।

এদিকে মারা যাওয়া ৫১ জনের মধ্যে ৫০ জনই শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছিলেন। অপরজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গত পহেলা নভেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, শীতে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে ঢাকা বিভাগে, ১১ হাজার ২০৪ জন। এ বিভাগে মৃত্যু হয়েছে ছয়জনের। তবে মৃত্যুর সংখ্যায় এগিয়ে রয়েছে ময়মনসিংহ। এ বিভাগে আক্রান্ত তিন হাজার ৬২২ জনের মধ্যে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এর বাইরে চট্টগ্রাম বিভাগে সাত হাজার ৬৪ জন আক্রান্ত এবং মারা গেছেন ১০ জন। একইভাবে খুলনা বিভাগে সাত হাজার ১৪৭ জন আক্রান্ত ও পাঁজনের মৃত্যু, বরিশাল বিভাগে দুই হাজার ১১৫ জন আক্রান্ত ও তিনজনের মৃত্যু এবং সিলেট বিভাগে চার হাজার ৬৭৪ জন আক্রান্ত ও একজনের মৃত্যু হয়েছে।

এ ছাড়া রাজশাহী বিভাগে এক হাজার ৯৯৪ জন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এ বিভাগে কারো মৃত্যু খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে ডায়রিয়ার আক্রান্ত এক লাখ আট হাজার ৫৭৬ জনের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে চিকিৎসাধীন একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ বিভাগে ডায়রিয়ায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৮৭৪ জন। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে ১২ হাজার ৯৯৮, ময়মনসিংহ বিভাগে পাঁচ হাজার ৬১০, রাজশাহী বিভাগে আট হাজার ৯৫৩, রংপুর বিভাগে ১৯ হাজার ৯৪৮, খুলনায় ১৯ হাজার ৮৪২, বরিশা বিভাগে সাত হাজার ৮৫২ এবং সিলেট বিভাগে পাঁচ হাজার ৪৬৩ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এক মাস আগেই হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে এক মাস আগেই আমরা হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি। শীতজনিত রোগীর চিকিৎসায় বিশেষ গাইড লাইন তৈরি করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব গাইড লাইনে হাসপাতালে রোগীদের কম্বল ব্যবহার, হাসপাতালের ভাঙা জানালা দরজা মেরামত, নেবুলাইজার মেশিন ঠিক করা, অক্সিজেন সিলিন্ডারে অক্সিজেন রাখা ইত্যাদি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন এসবের খোঁজ নিচ্ছি। অক্সিজন ও এন্টিবায়োটিকসহ কোনো ধরনের ওষুধ বা সরঞ্জামাদির সংকটের কোনো তথ্য আমরা পাইনি। বাচ্চা ও বয়স্কÑ এই দুই বয়সীদের অবশ্যই শীতের থেকে দূরে রাখতে হবে। এদের নিউমোনিয়া, ফুসফুসে সংক্রমণ, শ্বাসতন্ত্রের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। যতটুকু সম্ভব ঘরের বাইরে না যাওয়া ও ঘরের ভেতর থাকতে হবে। সে রকম কষ্ট হলে নিকটস্থ হাসপাতালের যেতে হবে। বাসায় থেকে ঝুঁকি নেওয়ার দরকার নেই বলে জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ শফি আহমেদ বলেন, শীতে সর্দি, কাশি, ব্রঙ্কিওলাইটিস ও এ্যাজমার প্রকোপ বাড়ছে। চর্মরোগ ও ডায়ারিয়াও বাড়ছে। শিশুদের ঠান্ডা থেকে দূরে রাখতে হবে। গরমের কাপড় পরিধান করাতে হবে। বিশুদ্ধ পানি খেতে হবে। নাক দিয়ে পানি আসলে নরমাল স্যালাইন দিয়ে নাক পরিষ্কার করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এন্টিহিস্টামিন ও এন্টিবায়োটিক খাওয়া যাবে না। শ্বাসকষ্ট হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন অধ্যাপক ডা. সৈয়দ শফি আহমেদ।

এদিকে গতকাল রোববার সরেজমিন রাজধানীর বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের শিশু বিভাগে দেখা গেছে, নিউমোনিয়া ও জ্বরসহ ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেশি। দুই ওয়ার্ডে ৪০ শয্যায় রোগী ভর্তি রয়েছে ৮৭ জন। ধারণক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণ রোগী থাকায় হিমশিম খাচ্ছেন নার্স ও চিকিৎসকরা।

শিশু ওয়ার্ডে মায়ের কোলে কান্নাকাটি করছিল পাঁচ বছরের শিশু ইয়াকুব। হাতে ক্যানোলা লাগানো আর নাকে স্যালাইনের নল। শ্বাসকষ্ট না কমায় শিশুটির মুখে নেবুলাইজার দিয়ে রাখছেন তার মা আমেনা বেগম। তিনি জানান, তার বাচ্চা চার দিন ধরে এখানে ভর্তি। কিছুই খাচ্ছে না। শুধু কান্নাকাটি আর খিঁচুনি দিয়ে ওঠে। মেঝেতে থাকার কারণে বাচ্চাটার অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে।

হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, মেঝে ও বারান্দায় পাটি, কাঁথা-বালিশ বিছিয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ও তাদের স্বজনসহ অসংখ্য মানুষ-শুয়ে বসে রয়েছেন। সেখানে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন রোগীরা।

ঢাকা শিশু হাসপাতালের নবজাতক ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. শাকিল সরোয়ার বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, নিউমোনিয়া, ও শীতকালীন ডায়রিয়ায় শিশুরা অনেক বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিবছর এমন চিত্র দেখা যায়। এসব রোগ প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই। শীতজনিত রোগ থেকে রক্ষায় শিশুর গরম পোশাক পরিধান করাতে হবে। মাঝে মাঝে মধু, চিনিসহ গরম পানি পান করাতে হবে। বাসার বাইরে গেলে অবশ্যই শীত প্রতিরোধী পোশাক পরতে হবে। শুধু শিশুদের নয়, একই পরামর্শ বয়স্কদের জন্য। জ্বর, ঠান্ডা, কাশি, নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে শিশুকে অবশ্যই হাসপাতালে নিতে হবে।

ময়মনসিংহে বেশি মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ভারত সীমান্তঘেঁষা জেলার গারো পাহাড়ি জনপদে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাস। ঠান্ডায় কাজ করতে হচ্ছে তাদের। এতে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত জটিলতা বেশি দেখা দিচ্ছে। তবে মৃত্যু বেশি কেন তা বলতে পারব না।’

চট্টগ্রামে আক্রান্ত বেশি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ নুরুল হায়দার বলেন, ‘শীত বাড়ায় নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত জটিলতাসহ বিভিন্ন রোগ বাড়ছে। এ ছাড়া আমাদের রিপোর্টিংয়ের মান আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। প্রত্যেক রোগীর তথ্য প্রতিবেদনে চলে আসছে। আগে সেভাবে রোগীর তথ্য সংরক্ষণ করা হতো না।’ সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব মনে বলেন এই বিশেষজ্ঞ।

২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতাল, শ্যামলী, ঢাকার উপ-পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার ভোরের আকাশকে বলেন, তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। একই সঙ্গে পরিবেশের শুষ্কতার কারণে বাতাসে জলীয়বাষ্পের মাত্রা বা আর্দ্রতা কমে যায়। এ কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসের ভেতরে সহজেই জীবাণু প্রবেশ করে। কিন্তু শরীর থেকে তা সহজে বের হয় না। তখন জীবাণুরা বংশ বিস্তার করে ও শ্বাসতন্ত্র আক্রমণ করে। এ সময় বায়ুদূষণের মাত্রাও অনেক বেড়ে যায়, যা শ্বাসকষ্টের সবচেয়ে বড় কারণ।

তিনি আরও জানান, শীতে শিশু এবং বয়স্কদের নিউমোনিয়ায় বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায়। তাই তাদের দিকে বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে। শীতে কাপড়-চোপড় ঠিকমতো পরিধান করতে হবে। বাইরে বের হলে ঠান্ডা যাতে না লাগে সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে এবং একটু কুসুম গরম পানি পান করতে হবে। সেই সঙ্গে হালকা কুসুম গরম পানিতে প্রতিদিন গোসল করা দরকার। শিশুরা খেলাধুলা করার সময় ঘেমে যায়, তাই ঘামটা ভালোমতো মুছে দিতে হবে এবং রাতে যখন তারা লেপ বা কম্বলের নিচে ঘুমাবে তখন ঘেমে যাচ্ছে কি না সেদিকটা অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। ঠান্ডা লেগে নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। শীতের সময় শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে ত্বকও শুষ্ক হয়ে ওঠে। ফলে অনেক সময় চুলকানি হয় অথবা চামড়া ফেটে যায়। নিয়মিতভাবে লোশন বা অলিভ অয়েল, গ্লিসারিন ব্যবহার করা যেতে পারে। তা হলে চামড়া স্বাভাবিক থাকবে। ধুলাবালি থেকে অ্যালার্জিটা খুব বেশি হয়ে থাকে, হাঁচি-কাশি হতে পারে। তাই ধুলাবালি এড়িয়ে চলতে হবে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া খুব বেশি বাইরে বের না হওয়াই ভালো। ত্বকের বিশেষ সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ক্রিম বা মলম ব্যবহার করা উচিত। নিজে থেকে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক-ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।

শীতে সুস্থ থাকতে বাইরে বের হওয়ার সময় একটি মাফলার দিয়ে নাক-মুখ ভালো করে ঢেকে অথবা মাস্ক পরে বের হতে হবে। কারণ শীতের ঠান্ডা বাতাস নাক-মুখ দিয়ে ভেতরে গেলে বা ফুসফুসে প্রবেশ করলে অ্যাজমা রোগীরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। ঠান্ডা, শুষ্ক বাতাস এবং আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তন অ্যাজমা রোগীদের শ্বাসনালিকে সংকুচিত করে। এ কারণে শ্বাসকষ্ট আরও বেড়ে যায়। অনেকেই ঠান্ডায় আগুন পোহায়, সেখান থেকে দগ্ধ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এসব বিষয়ে খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন ডা. আয়শা আক্তার।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য