নতুন বছরেও পুরোপুরি শুরু হচ্ছে না শিক্ষা কার্যক্রম। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ঘোষিত নতুনসূচিতে নতুন শিক্ষাবর্ষেও প্রতিটি শ্রেণিতে ক্লাসের সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তবে শ্রেণিকক্ষের পাশাপাশি চলবে অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম। গত বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক স্তরে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার এই নতুন সূচি প্রকাশ করে মাউশি।
ঘোষিত সূচি অনুযায়ী এ বছর এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রতিদিন চারটি বিষয়ে ক্লাস নিতে হবে। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে প্রতিদিন তিনটি বিষয়ে, অষ্টম ও নবম শ্রেণির জন্য সপ্তাহে দুই দিন তিনটি করে বিষয়ের ওপর ক্লাস নিতে হবে। এছাড়াও ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে একদিন নিতে হবে তিনটি বিষয়ে ক্লাস।
এছাড়াও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিগুলোর কার্যক্রম প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালিত হবে বলেও মাউশির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনলাইন শ্রেণি কার্যক্রম চলমান রাখবে।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। শিক্ষার্থীদের নিরাপদে রাখতে ১৭ মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সেই থেকে দফায় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘ দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধ রাখা হয়। পরবর্তীতে অনলাইনে চালু করা হয় শিক্ষা কার্যক্রম। যদিও সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমান সুবিধা না থাকা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সামর্থ্যে ঘাটতি ইত্যাদি নানা কারণে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রমের সুবিধা সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা পুরোপুরি নিতে পারেনি। ৫৪৪ দিন পর ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুললেও নিয়মিত পাঠদান তখন থেকেই সম্ভব হচ্ছে না। সপ্তাহে একদিন দুটি করে ক্লাস নিলেও বাকি দিনগুলোতে অনলাইন কার্যক্রম অব্যাহত করা হয়। এছাড়াও অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়ার মতো স্বল্প পরিসরে কার্যক্রম চালানো হয়েছে। এ পরিস্থিতির ভেতরেই মাত্র তিনটি করে বিষয়ের ওপরে নেওয়া হয় এসএসসি পরীক্ষা যার ফলও ঘোষণা হয়েছে ৩০ ডিসেম্বর। পরে ডিসেম্বরে নেওয়া হয় এইচএসসি পরীক্ষা। যদিও এর আগের বছরে সবচেয়ে বড় পাবলিক পরীক্ষা দুটি নেওয়া সম্ভবই হয়নি।
গত নভেম্বরে স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রমের আওতায় নেওয়া হয় যা এখনও চলমান। এ বছরের শুরুতে স্কুলগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু নিয়ে নানা সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পুরোপুরি দূর না হওয়ায় এবং বিশ্বজুড়ে করোনার আরেক ধরন ওমিক্রনের মাত্রাতিরিক্ত সংক্রমণ শুরু হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় আবারও সতর্ক। তাছাড়া সব শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় এখনো আনা সম্ভব না হওয়ায় নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতে পুরোদমে ক্লাস চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়ার উপায়ও ছিল না।
তবে এর আগে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা হবে। এই সময়ের মধ্যে নতুন করে সংক্রমণ না বাড়লে শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে পারে।
মন্তব্য