-->
শিরোনাম
হাত গুটিয়ে নিচ্ছে দাতা সংস্থা

অর্থ-সংকটে রোহিঙ্গা তহবিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
অর্থ-সংকটে রোহিঙ্গা তহবিল
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরু হওয়ার পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখ ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় আর্থিক অনুদান দেওয়া থেকে হাত গুটিয়ে নিচ্ছে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দাতা দেশগুলো। ফলে সামনের দিনগুলোয় অন্তত সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি বাড়তি চাপে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে মানবিক কারণে এখন পর্যন্ত বাজেটে রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারের ব্যয় হয়েছে ১৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। যা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল বলছেন খোদ সরকারের সংশ্লিষ্টরাই।

কক্সবাজার স্থানীয় প্রশাসন ও জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা উইএনএইচসিআর এর তথ্য বলছে, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরু হওয়ার পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখ ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

১৯৭৮ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত কয়েক দফায় এসে কক্সবাজারে অবস্থান করছিল আরো চার লাখ রোহিঙ্গা। জন্ম নিয়েছে আরো প্রায় ৬৫ হাজার শিশু। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে।

এখন পর্যন্ত বাজেটে রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারের ব্যয় হয়েছে ১৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এর বাইরে কক্সবাজারে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করতে গিয়েই সরকারকে খরচ করতে হয়েছে ১০০ কোটি টাকা।

রোহিঙ্গাদের ভাসানচর স্থানান্তরে সেখানকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সরকারের খরচ হয়েছে অতিরিক্ত আরো তিন হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সরকারের অন্যান্য প্রায় চার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী সময়-শ্রম দিচ্ছেন। এই অর্থও সরকারকেই বহন করতে হচ্ছে। দাতাদের কাছ থেকে চাহিদা অনুযায়ী মিলছে না অর্থ।

রোহিঙ্গা সংকটের শুরু থেকেই মিয়ানমারের এই শরণার্থী জনগোষ্ঠীর জন্য অর্থ সংগ্রহে প্রতি বছর জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান (জেআরপি) প্রস্তুত করে আসছে জাতিসংঘ। বৈশ্বিক এ সংস্থাটির নেতৃত্বাধীন স্ট্র্যাটেজিক এক্সিকিউটিভ গ্রুপ মূলত অর্থের চাহিদা নির্ধারণ, তহবিল সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার কাজটি সম্পন্ন করে থাকে। বৈশ্বিক এ সংকটে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়, বাসস্থান, খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি গত চার বছর ধরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

রোহিঙ্গাদের অর্থায়ন নিয়ে জাতিসংঘের জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানের (জেআরপি) নথি ঘেঁটে দেখা গেছে, প্রতি বছর রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থের চাহিদা নির্ধারণ করা হলেও গড়ে ১৩ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ সংগ্রহ করতে পেরেছে আন্তর্জাতিক এই দাতা সংস্থটি।

রোহিঙ্গা সংকটের শুরুর দিকে বিভিন্ন দেশ ও দাতা গোষ্ঠীগুলো তাদের মানবাধিকার প্রশ্নে বেশ সোচ্চার ছিল। এমনকি তাদের মানবিক সংকট মোকাবিলায় স্থল ও আকাশপথে কার্গো বোঝাই খাদ্যপণ্য ও জরুরি সুরক্ষাসামগ্রীও পাঠিয়ে ছিল। যেটি অপ্রত্যাশিতভাবে কমে যাচ্ছে বলে একাধিকবার জরুরি বৈঠক করতে হয়েছে দাতা গোষ্ঠীগুলোর।

প্রতি বছর ঘাটতি গড়ে ৩০ থেকে ৮৭ ভাগ অর্থ

জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানের (জেআরপি) তথ্য বলছে, সদ্য বিদায়ী বছরে ৯৪৩ দশমিক ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের চাহিদা থাকলেও ৬৫২ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করতে পেরেছিল জাতিসংঘ। অর্থাৎ সদ্য বিদায়ী বছরে ৭০ শতাংশ অর্থ সংগ্রহ করতে পেরেছিল এবং ঘাটতি ছিল ৩০ শতাংশ।

এর আগে ২০২০ সালে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চাহিদা ছিল। সংগ্রহ হয়েছিল ৫৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ২০২০ সালে প্রায় ১৩ শতাংশ অর্থ সংগ্রহ করতে পেরেছিল। সে হিসাবে ঘাটতি ছিল প্রায় ৮৭ শতাংশ।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত চাহিদা অনুযায়ী তহবিল সংগ্রহ করতে পারেনি জাতিসংঘ।

২০১৭ সালে লক্ষ্যমাত্রার ৭৩ শতাংশ, ২০১৮ সালে ৬৯ শতাংশ, ২০১৯ সালে ৬৭ শতাংশ, ২০২০ সালে ১৩ শতাংশ এবং ২০২১ সালে ৭০ শতাংশ অর্থ সংগ্রহ করতে পেরেছিল। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিলম্ব হওয়ায় দাতাদের গুটিয়ে নেওয়া অর্থায়ন রোহিঙ্গাদের আরো ঝুঁকিতে ফেলবে।

জাতিসংঘের জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানের (জেআরপি) সর্বশেষ নথি ঘেঁটে এসব তথ্য পেয়েছে দৈনিক ভোরের আকাশ।

তহবিলের একটি বড় অংশই জোগান দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন

দেশ দুটি জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানের (জেআরপি) বাইরেও তাদের অনুদান অব্যাহত রেখেছে। ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মোট সহায়তার পরিমাণ ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।

আর যুক্তরাজ্যের মোট সহায়তার পরিমাণ ৪৩০ দশমিক ৮০ মিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া জাপান ১৪০ মিলিয়ন ও অস্ট্রেলিয়া ২৪০ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ সহায়তা দিয়েছিল।

 

 

অর্থ সংগ্রহ ও ব্যয়ের তথ্য নেই সরকারের কাছে

জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের জন্য কীভাবে অর্থ সংগ্রহ করে এবং কোন প্রক্রিয়ায় এর ব্যয় নির্ধারণ হয় এ বিষয়ে সরকারের কাছে কোনো তথ্য নেই।

জানতে চাইলে ভোরের আকাশকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘তহবিল সংগ্রহ সম্পর্কে আমাদের কিছুই জানানো হয় না, তারা নিজেদের মতো খরচ করে।

‘বহুবার আমরা তাদের (জাতিসংঘ) বলেছি, এত বিশাল সংখ্যার একটি জনগোষ্ঠীকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। তাদের পেছনে প্রতি বছর আমাদেরও হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। তোমরাও খরচ করো, আমরাও করি। কিন্তু এসবের কোনো সমন্বয় নেই।’

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যেসব এনজিও কাজ করে এদের পেছনেই বেশি অর্থ খরচ হয়ে যায়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যথাযথ আলোচনা ছাড়াই রোহিঙ্গা ইস্যুতে দাতাদের সম্মেলন ডাকা হয়।

‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে চাপ দেওয়া থেকেও দাতাদের বেশি নজর থাকে তহবিল সংগ্রহে। তারা রোহিঙ্গাদের দীর্ঘমেয়াদি মানবিক সহায়তার পরিকল্পনা ও উচ্চমানের জীবনযাপনের কথা ভাবছে, যা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সঙ্গে মেলে না।’

প্রত্যাবাসন আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, ‘যদি সম্ভব হয় আমরা আগামীকাল তাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে প্রস্তুত। তাদের উচিত হবে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রত্যাবাসন দ্রুত করার জন্য চাপ দেওয়া।

‘রোহিঙ্গাদের জন্য বৈশ্বিক তহবিল ঘাটতি আমাদের ওপরে আরো চাপ বাড়াবে। এমনিতেই তাদের জন্য আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আমাদের যে আর্থ-সামাজিক ক্ষতি হয়েছে সেসব দাতাদের কাছে উপস্থাপন করেছি।’

মাসে রোহিঙ্গাদের পেছনে সরকারের ব্যয় ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার

রোহিঙ্গাদের পেছনে সরকারের ব্যয় প্রসঙ্গে এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রতি মাসে ব্যয় করছে ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সে হিসাব ধরে এগুলো পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী এখন পর্যন্ত সরকারের ব্যয় হয়েছে ১৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার।

দিন দিন কমছে অনুদান

এনজিও ব্যুরোর তথ্য বলছে, এনজিও খাতে রোহিঙ্গাদের জন্য ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ১ হাজার ৩১৪ কোটি টাকার অনুদান এসেছে। পরের অর্থবছরে তা কমে ১ হাজার ২১২ কোটি টাকায় দাঁড়ায়।

আর ২০১৯-২০ অর্থবছরে রোহিঙ্গাদের জন্য এনজিও খাতে বিদেশি অনুদান এসেছে ৮০৫ কোটি টাকা। সবশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত ১১০ কোটি টাকার অনুদান এসেছে।

মিয়ানমারেও ব্যয় করা হয় অনুদানের অর্থ

জাতিসংঘের সংগ্রহ করা এসব অর্থ যে শুধু বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্যই ব্যয় করা হচ্ছে বিষয়টি এমন নয় জানিয়ে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো ভোরের আকাশকে বলেন, ‘এসব অর্থ মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চল পুনর্গঠন এবং সেখানকার রোহিঙ্গাদের জন্যও খরচ করা হয়ে থাকে।

‘এ ছাড়া বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্যও এই তহবিল ব্যবহার হয়ে থাকে।’

জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানে প্রত্যাশিত অর্থ প্রাপ্তি না হওয়ার বিষয়টিকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারির এই সময়ে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে বাড়তি যে অর্থের প্রয়োজন হচ্ছে, সেটিও সংগ্রহ করাটা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে।

‘এজন্য দাতাদের নিয়ে জরুরি বৈঠকেরও প্রয়োজন হয়। এরই মধ্যে আমরা এ ধরনের বৈঠক হতে দেখেছি। বিশাল সংখ্যার শরণার্থীদের জন্য প্রাপ্ত অর্থ যথেষ্ট নয়, রোহিঙ্গাদের আগামী দিনগুলো অর্থের জোগান নিয়ে আমরা শঙ্কিত।’

তহবিলের বড় অংশ ভ্রমণ-প্রশাসনিক কাজে খরচ

রোহিঙ্গা তহবিলের অনেকাংশই জাতিসংঘ বা এনজিও কর্মকর্তাদের ভ্রমণ বা প্রশাসনিক কাজেই খরচ হয়ে যায়। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে এমন অভিযোগ করা হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বহুবার এ নিয়ে প্রতিবেদন হয়েছে।

এ অভিযোগ সম্পর্কে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো বলেন, ‘তহবিল থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য এবং অন্যান্য বাবদ কতটা ব্যয় হয় সেটি আমার জানা নেই।’

প্রতি মাসে দুই রাউন্ডে খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছে রোহিঙ্গারা

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির আওতায় প্রতি মাসে দুই রাউন্ডে খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছে রোহিঙ্গারা। দুই থেকে তিন সদস্যবিশিষ্ট পরিবারের জন্য প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল, ৯ কেজি ডাল ও ৩ লিটার ভোজ্যতেল দেওয়া হচ্ছে।

চার থেকে সাত সদস্যের পরিবারের জন্য জনপ্রতি মাসে ৬০ কেজি চাল, ১৮ কেজি ডাল ও ৬ লিটার ভোজ্যতেল এবং ৮-এর অধিক সদস্যের পরিবারের জন্য প্রতি মাসে ১২০ কেজি চাল, ২৭ কেজি ডাল এবং ১২ লিটার ভোজ্যতেল সরবরাহ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের ব্যয় নিয়ে জাতিসংঘের মূল্যায়ন

জাতিসংঘ বলছে, বাংলাদেশের মানুষের পেছনে সরকারের মাসিক ব্যয় মাথাপিছু ৭০০ ডলার। অথচ এ বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রার চাহিদা মেটাতে একই পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের। কিন্তু এই ব্যয়ভার বহনের জন্য কোনো আয়ের উৎস নেই। তবুও ব্যয় থেমে নেই। আর এ কারণেই টানা দুই বছর এই বিশাল ব্যয়ভার বহন করতে হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারকেই।

মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখা অপরিহার্য

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশের পাঁচ বছর পূর্তিতে সম্প্রতি এক নিবন্ধে ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন লেখেন, ‘যেহেতু রোহিঙ্গা শরণার্থীরা খুব শিগগির নিজ দেশে ফিরতে পারছে না, তাই স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের আগ পর্যন্ত কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখা অপরিহার্য।

‘এ ক্ষেত্রে আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা সবাই চাই যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যেন নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে রাখাইনে তাদের নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে পারে। রোহিঙ্গারা নিজ দেশে না ফেরা পর্যন্ত তাদের জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে।’

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি

কক্সবাজার বনবিভাগ ও জেলা প্রশাসনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে উজাড় হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার একর সংরক্ষিত বনভূমি। পাহার কেটে সমতল ভূমিতে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয় হিসাবে এই পরিমাণ জমির দাম প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। যা সরকারের নিজস্ব সম্পত্তি। এতে দেশের ৩৯৭ কোটি ১৮ লাখ ৩৭ হাজার ৩৯৩ টাকার সমপরিমাণ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয়েছে।

প্রতিবেদনের এই তথ্যও জাতিসংঘের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

মন্তব্য

Beta version