শ্রম আইন অনুসারে বেতন কাঠামো ও প্রাপ্য সব অধিকার প্রদানসহ ৮ দফা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ-সমাবেশে করেছে রেডিমেড দর্জি শ্রমিক ফেডারেশন।
রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানান ফেডারেশনের উপদেষ্টা মাসুদ রানা। সমাবেশে বাংলাদেশ শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি জহিরুল ইসলামসহ অর্ধশত দর্জি শ্রমিক উপস্থিত ছিলেন।
রেডিমেড দর্জি শ্রমিক ফেডারেশন বলছে- প্লেন ফুল শার্ট সেলাই মজুরি ৩৫ টাকা ও হাফ শার্টে ৩০ টাকা, জিপারযুক্ত গেঞ্জিতে ২০ টাকা ও প্লেন গেঞ্জিতে ১৫ টাকা দিতে হবে। শার্ট কাটিং রেট ৭ টাকা, লেদার জ্যাকেট কাটিং রেট ২০ টাকা, প্লে-বয় কাটিং রেট ১৫ টাকা, কাঁচা আস্তর বডি ১০ টাকা ও আস্তর টুকরা কাপড় কাটিং রেট ৮ টাকা এবং গেঞ্জি কাটিং রেট ৫ টাকা করতে হবে।
তাদের দাবির মধ্যে আছে মাসিক মজুরি মাস শেষে পরিশোধ করতে হবে। কাজের মাঝে নাস্তার ব্যবস্থা ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হবে। ঈদ বা উৎসব বোনাস ও সিজন বেনিফিট দিতে হবে। কারখানার স্বাস্থ্যসম্মত কর্মপরিবেশ, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাসহ প্রশস্ত সিঁড়ি নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র দিতে হবে। বিনা নোটিশে ছাঁটাই করা যাবে না।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, রেডিমেড পোশাকশিল্পে প্রচুর শিশু শ্রমিক কাজ করে। পেটের তাগিদে ১১/১২ বছর বয়সে কাজে যুক্ত হয় এই শ্রমিকরা। সাধারণত এক থেকে তিন বছর লাগে কাজ শিখে কারিগর হতে। এ সময় তারা খাওয়া খরচের বেশি কিছু পায় না।
বার্ধক্য আসার বা বয়স বাড়ার সঙ্গেসঙ্গে মূল্য কমে যায় তাদের। অবশেষে জীবনের ক্লান্তি মাথায় নিয়ে কাজ ছাড়েন এই শিল্পের শ্রমিকরা। তাদের অবসরকালীন বা ছাঁটাইজনিত পাওনা বলতে কিছু নেই। পান থেকে চুন খসলে ছাঁটাই হতে হয়।
বক্তারা বলেন, শ্রমিকরা যদি কোনো কারণে কাজ ছাড়তে চান এবং মালিক যদি টাকা পান- তবে তা পরিশোধ না করে যেতে পারেন না। তার বকেয়া মজুরি প্রায়ই তাৎক্ষণিক পাওয়া যায় না, অপেক্ষা করতে হয় ঈদের আগ পর্যন্ত।
তারা বলেন, করোনায় সবচেয়ে কষ্টকর জীবনযাপন করে গরিব-শ্রমজীবী মানুষ। মাসের পর মাস কাজ ছিল না। কেমন করে পরিবার-পরিজন নিয়ে সংসার চলেছে, মালিক খোঁজ পর্যন্ত রাখেনি। অথচ বছরের পর বছর শ্রমিকদের শ্রমে মালিকের মুনাফা বেড়েছে। এ অবস্থায় নিজেদের দাবি নিজেদেরই তুলে ধরতে হবে। গড়ে তুলতে হবে নিজেদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন।
সমাবেশে রেডিমেড দর্জি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সোচ্চার হয়ে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।
মন্তব্য