-->
শিরোনাম
৪০ ভাগ নিহত মোটরসাইকেলে

দুই মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১,০০০

নিজস্ব প্রতিবেদক
দুই মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১,০০০

চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি দুই মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ১২ জন মারা গেছেন। এসময় ৮৪৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১ হাজার ১৪৬ জন। নিহতদের মধ্যে নারী ১৪৩ ও শিশু ১৩০ জন। এর মধ্যে ৩৫৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৪০৩ জন মারা গেছেন, যা মোট নিহতের ৩৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪২ দশমিক ২১ শতাংশ।

শনিবার (৫ মার্চ) যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত খবর বিশ্লেষণ করে এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনায় ২০২ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ১৪ দশমিক ৫২ শতাংশ বা ১৪৭ জন। এসময় ১২টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত হয়েছেন এবং ২৬টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনার বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২৩ দশমিক ২৩%, প্রাণহানি ২২ দশমিক ৭২ ভাগ। রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ, প্রাণহানি ১৯ দশমিক ০৭ শতাংশ; চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ২০ দশমিক ২৮ শতাংশ, প্রাণহানি ২২ দশমিক ৮২ শতাংশ; খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ৯ দশমিক ৪৩ শতাংশ, প্রাণহানি ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ; বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ, প্রাণহানি ৫ দশমিক ০৩ শতাংশ; সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ, প্রাণহানি ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ; রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ৯ দশমিক ১৯ শতাংশ, প্রাণহানি ১০ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ, প্রাণহানি ৭ দশমিক ২১ শতাংশ ঘটেছে।

দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী ৪০৩ জন (৩৯ দশমিক ৮২ শতাংশ), বাসযাত্রী ৬৬ জন (৬ দশমিক ৫২ শতাংশ), ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি যাত্রী ৫৭ জন (৫ দশমিক ৬৩ ভাগ), মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্সযাত্রী ২৫ জন (২ দশমিক ৪৭ ভাগ), থ্রি-হুইলারের যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান) ১৮১ জন (১৭ দশমিক ৮৮ ভাগ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্রা-টমটম-চান্দের গাড়ি-ডাম্পার-পাওয়ারটিলার) ৪৮ জন (৪ দশমিক ৭৪ ভাগ) এবং প্যাডেল রিকশা-রিকশাভ্যান-বাইসাইকেল আরোহী ৩০ জন (২ দশমিক ৯৬ ভাগ) নিহত হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৩৫৩টি (৪১ দশমিক ৬২ ভাগ) জাতীয় মহাসড়কে, ২৯৫টি (৩৪ দশমিক ৭৮ ভাগ) আঞ্চলিক সড়কে, ১৪৩টি (১৬ দশমিক ৮৬ ভাগ) গ্রামীণ সড়কে, ৪৬টি (৫ দশমিক ৪২ ভাগ) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ১১টি (১ দশমিক ২৯ ভাগ) সংঘটিত হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, সড়ক দুর্ঘটনায় গত দুই মাসে প্রতিদিন গড়ে ১৭ দশমিক ১৫ জন নিহত হয়েছেন। জানুয়ারি মাসে ৪৩১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৪৩ জন নিহত হয়েছিলেন। ফেব্রুয়ারি মাসে ৪১৭টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪৬৯ জন। এই হিসাবে জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়ারি মাসে দুর্ঘটনা বেড়েছে ৭ দশমিক ১২ শতাংশ এবং প্রাণহানি কমেছে ৪ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান নয় একথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে মূলত সড়ক পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যস্থাপনার কারণে। এ অবস্থার উন্নয়নে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।

মন্তব্য

Beta version