পটুয়াখালীর দক্ষিণ উপকূলে গত কয়েক দশকে জেগে উঠেছে বেশ কিছু চর। এসব চরের সৌন্দর্যও অপরূপ। এরমধ্যে বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে ওঠা বিশাল সম্ভাবনাময় ‘চরবিজয়’। প্রায় ১০ হাজার একর আয়তন নিয়ে জেগে ওঠা এ চরটি পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণে অবস্থিত। যা ইতোমধ্যে দৃষ্টি কেড়েছে পর্যটকদের।
বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে চরটির সন্ধান পাওয়ায় এর নাম রাখা হয় ‘চরবিজয়’। লাল কাঁকড়ার অবাধ ছুটোছুটি আর অতিথি পাখির কলকাকলি। দিগন্ত জোড়া আকাশ আর সমুদ্রের নীল জল রাশি আছড়ে পড়ছে কিনারায়। এছাড়া সাদা গাংচিলের দল এদিক-ওদিক উড়ে যাচ্ছে। মানুষহীন এ চরে মানুষের উপস্থিত টের পেলেই লাল কাঁকড়ার দল ছুটে পালিয়ে যায় এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। গর্তে লুকিয়ে থেকেও উঁকি দিয়ে পর্যটকদের গতিবিধি লক্ষ্য করে কাঁকড়াগুলো, যা বিমোহিত করে পর্যটকদের।
‘চরবিজয়’ দেখতে আসা মাহমুদা নামে এক পর্যটক জানান, চরটি পাখি ও লাল কাকঁড়ার দখলে থাকা একটি দ্বীপ, যে কোনো মানুষকে মুগ্ধ করবে। কুয়াকাটায় এসে যদি এ চরে না যাওয়া হয়, তবে অপূর্ণতা থেকেই যাবে। এ যেন কুয়াকাটার বুকে এক টুকরো সেন্টমার্টিন।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (কুটুম)-এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে আমার সাথে কয়েকজন সাংবাদিক ও স্থানীয়সহ মোট ১২ জন মিলে অজানার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে খুঁজতে খুঁজতে সন্ধান পাই এ চরের। তখনই নামকরণ করা হয় এ চরের। স্থানীয়, পর্যটন ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞদের সাথে আলাপ করলে তারাও সম্মতি জানায়। এরপর থেকেই কুয়াকাটায় আগত পর্যটক, স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন মানুষ ‘চরবিজয়’-এ যান। তবে সরকার যদি এ দ্বীপকে ঘিরে পর্যটকদের জন্য বিশেষভাবে উদ্যোগ নেয়, তবে এটি কুয়াকাটার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পাবে।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, ‘চরবিজয়’ বর্তমানে পর্যটন কেন্দ্রের আওতায় রয়েছে। যদিও চরটি এখন পর্যন্ত স্থায়ীভাবে বসবাসের উপযোগী হয়নি, তবে ওখানে যাওয়ার জন্য ইতোমধ্যে স্পীডবোট চালু রয়েছে। এছাড়াও ট্রলারের মাধ্যমে পর্যটকরা এ চরটি দেখতে যাচ্ছেন। এটাকে আরো উন্নত করার জন্য আমরা কাজ করছি যাতে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়ে।
ভোরের আকাশ/আসা
মন্তব্য