-->
শিরোনাম

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের বাজেট বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন

বিশেষ প্রতিবেদক
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের বাজেট বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেত্রীরা। ছবিটি তুলেছেন মুসাফির

রোববার সকাল ১১টায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এর উদ্যোগে ‘নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠায় বিনিয়োগ: প্রস্তাবিত বাজেট ২০২৪-২৫ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি, সেগুনবাগিচা-ঢাকাতে। সংবাদ সম্মেলনে মডারেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।

স্বাগত বক্তব্য দেন, সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু। কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শরমিন্দ নিলোর্মী।

স্বাগত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারী পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠার দাবিতে প্রণীত জেন্ডার বাজেট কোন আলাদা বাজেট নয়, বরং সামগ্রিক বাজেটের একটি। নারী পুরুষের বৈষম্য দূরীকরণে জেন্ডার বাজেটের প্রভাব মূল্যায়নে এবারের বাজেটে সুশীল সমাজকে অর্ন্তভূক্ত করে একটি পরীবীক্ষণ কমিটি গঠন করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে- যা নারীআন্দোলনের দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো। এবারের জেন্ডার বাজেটের যথাযথ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও ব্যাংকিং ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং দূর্নীতি দূর করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

লিখিত বক্তব্যে শরমিন্দ নিলোর্মী বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জেন্ডার বাজেট প্রণয়নে জেন্ডার ফিন্যান্স ট্রাকিং মডেল নামে একটি নতুন মডেল তৈরি করা সহ, একীভূত করে জেন্ডার সংশ্লিষ্ট বরাদ্দের শ্রেণিবিন্যাস এবং মূল্যায়ন পদ্ধতির একটি সম্যক ধারণা প্রদান করা এবং গত বছরগুলোতে জেন্ডার বাজেট প্রণয়নের পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের মোট পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে জেন্ডার প্রাসঙ্গিক বরাদ্দ কী পরিমাণ রয়েছে, সেটি নিরূপণের জন্য মডেল ব্যবহার করা হয়েছে। এর মাধ্যমে একাধিক বিষয় ভিত্তিক কাজে কোন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ যুক্ত থাকলে সেই মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দকৃত বাজেট ব্যয়ের চিত্র উপস্থাপন করা সম্ভব হবে। এ বছরের জেন্ডার ফাইনাস ট্রাকিং মডেলটি চারটি বিষয়: নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক অংশগ্রহণ ও সমতা, সরকারি সর্বজনীন পরিষেবা গুলোতে নারীদের কার্যকর প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি করা এবং নারী উন্নয়নের জন্য শিক্ষা,স্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে জেন্ডার সংশ্লিষ্ট বাজেট বরাদ্দ ও ব্যায়ের ধারা উপস্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি জেন্ডার বাজেটে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষায় মেয়েদের পিছিয়ে পড়ার বিষয়টি স্বীকার করে এর কারণ হিসেবে বাল্য বিবাহ, ইভটিজিং, স্কুলে স্যানিটেশন ও হাইজিন সমস্যা চিহ্নিত করে এগিয়ে যাওয়ার বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশসমূহ মন্ত্রণালয় বিভাগসমূহ খানিকটা করলেও অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে বলে বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে। যা দূরীকরণ একক কোনো মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। চারটি থিমেটিক এরিয়াতে যে ২২টি সূচকের স্বাপেক্ষে বাজেট ব্যয়ের অগ্রগতির প্রভাব দেখতে হবে।

মডারেটরের বক্তব্যে ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রস্তাবিত জেন্ডার বাজেটে করণীয় উত্থাপনের মাধ্যমে সরকার এবং নারী আন্দোলনের অবস্থান পরিস্কার হয়েছে এবং সমন্বিতভাবে কাজ করার উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তবে জেন্ডার বাজেটের লক্ষ্যেও সাথে নারী আন্দোলনের লক্ষ্য সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলে সামাজিক অগ্রগতি খুব অগ্রসর হবেনা বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি এসময় স্বাধীনতা যুদ্ধের অঙ্গীকার ও চেতনাকে অক্ষুণ্ণ রেখে গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক এবং সমতাপূর্ণ বাংলাদেশ গড়তে হলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, অর্থপাচার রোধ এবং সম্পদ নিজস্ব স্বার্থে পুঞ্জীভূত রেখে বৈষম্য সৃষ্টির মত পরিস্থিতির উত্তরণে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এবং কালো টাকা সাদা করার সুযোগ না দিয়ে বরং কালো টাকার পাহাড় যাতে কেউ গড়তে না পারে তার উপর গুরুত্ব আরোপ করতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সংবাদ-সম্মেলনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির নেত্রীবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিক এবং সংগঠনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠনাটি সঞ্চালনা করেন আন্দোলন সম্পাদক রাবেয়া খাতুন শান্তি।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version