ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:২৩ পিএম
ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত ময়মনসিংহের ইয়াসিন
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনের মিসাইল হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ইয়াসিন শেখ নামে এক যুবক। নিহত ইয়াসিনের বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলার মরিচালি গ্রামে। গত ২৭ মার্চ ইউক্রেনে যুদ্ধরত অবস্থায় নিহত হন ইয়াসিন শেখ। ঈদুল ফিতরের পরদিন (মঙ্গলবার) বিকেলে ইয়াসিনের এক সহযোদ্ধা ইয়াসিনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন তার পরিবারকে। তার মৃত্যুর খবরে শোকে বিহ্বল পরিবারের সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে ইয়াসিন শেখের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মৃত্যুর খবরে শোকে কাতর পরিবার। ছেলের ছবি হাতে নিয়ে বিলাপ করছেন মা ফিরোজা খাতুন। বড় ভাই রুহুল আমিন শেখের দুচোখ দিয়ে অঝোরে গড়িয়ে পড়ছে পানি। খাটের কোণে বসে কখনো নীরবে আবার কখনো হাউমাউ করে কেঁদে উঠছেন। মা আর ছেলের কান্না দেখে প্রতিবেশীরাও যেন বাকরুদ্ধ।
গৌরীপুরের ডৌহাখলা গ্রামের মৃত সত্তর মিয়ার ছোট ছেলে ইয়াসিন শেখ। চার ভাইবোনের মধ্যে দু’জন আগেই মারা গেছেন। মা আর বড় ভাইকে নিয়ে ছিল তার সংসার। বড় ভাই ব্যবসায়ী রুহুল আমিন তার পড়াশোনা ও বিদেশযাত্রার খরচ বহন করেন।
স্থানীয় জাহিদুল ইসলাম বলেন, ইয়াসিন এলাকায় খুব ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত। সে চাকরির জন্য বিদেশ যাওয়ায় আমরা সবাই খুব খুশি হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, ছেলেটা অনেক টাকা উপার্জন করে পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাবে। কিন্তু তা আর হলো না।
আহাজারি করতে করতে ইয়াসিনের মা ফিরোজা খাতুন বলছিলেন, ইয়াসিন ঢাকার পল্লবীর সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন। বাবা মারা যাওয়ার পর বড় ছেলে অনেক কষ্ট করে তাকে পড়াশোনা করিয়েছেন। ঋণ করে বিদেশে পাঠিয়েছেন। ছেলের মৃত্যুতে পরিবারের সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, এখন শুধু আমরা আমাদের ছেলের লাশটা ফেরত চাই।
গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজ্জাদুল হাসান জানান, বিষয়টি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। এ ব্যাপারে সকল প্রকার আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আমরা সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করবো। আমরা চাই পরিবারটি যেন তাদের সন্তানের লাশ দেশে এনে দাফন করতে পারে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ