ছবি: ভোরের আকাশ
প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে কক্সবাজারে প্রধান শিক্ষক ও প্রাথমিক শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। সভার সভাপতিত্ব করেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল মান্নান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, “ইতোমধ্যে জেলার সকল উপজেলায় নতুন পাঠ্যবই পৌঁছে গেছে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “পরীক্ষার সময় শিক্ষকদের আন্দোলন কেউই ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো পূরণে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে পরীক্ষায় বিঘ্ন ঘটিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষতির সুযোগ নেই। একজন শিক্ষক তার মূল দায়িত্ব পালন না করলে তাকে প্রকৃত শিক্ষক বলা যায় না।”
শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশের বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, “শিশুর জন্মের পর থেকেই পরিবার ও সমাজ থেকে ভাষা শেখা শুরু হয়। পাঠ্যপুস্তক শিশুর বিকাশের একটি অংশ মাত্র; সহপাঠ্যবই ও সহশিক্ষা কার্যক্রম শিশুকে শারীরিকভাবে বিকশিত হতে সাহায্য করে। আনন্দময় শিক্ষা পরিবেশই স্কুলকে শিশুদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “জীবনে সফল হতে শুধু জিপিএ–৫ প্রয়োজন নেই। প্রকৃত শিক্ষা মানুষের মাধ্যমে মানুষের কাছেই ছড়িয়ে পড়ে। সঠিক বাংলা ভাষা শেখানো ও স্বাক্ষরতা দূরীকরণে শিক্ষকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন।”
প্রধান শিক্ষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “সাংগঠনিক নেতৃত্ব ও প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারলে আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনে দক্ষ মানবসম্পদ হয়ে উঠবে। প্রাথমিক স্তরে ঘাটতি থাকলে উপরিস্তরে তা পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই শিক্ষার্থীদের নিজেদের সন্তানের মতো গড়ে তুলতে হবে।”
জেলা প্রশাসক আ: মান্নান বলেন জেলায় প্রাথমিক শিক্ষা মানোন্নয়ন লক্ষ্য যেসকল স্কুল পিছিয়ে আছে প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বের মাধ্যমে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন জেলায় শিক্ষার হার ৬৭% এটি আরও দুর এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে লার্নিং এন্ড শেয়ারিং মাধ্যমে যে স্কুলগুলো পিছিয়ে পড়ে আছে সেগুলো নিয়ে কাজ করতে হবে।আমি আপনারা সবাই মিলে কক্সবাজার জেলার প্রাথমিক শিক্ষা এগিয়ে নিয়ে যায়,বিশিষ্ট জেলা কক্সবাজার ৬৪ জেলার মধ্যে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া মত অবস্থান আছে এই জেলায়, সেই ক্ষেত্রে আমাকে আপনাকে গুরুত্ব দায়িত্ব রয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক সহকারী শিক্ষকদের একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে।
অন্যান্য বক্তারা জানান, কক্সবাজার জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর যেসব অবকাঠামোগত ঘাটতি রয়েছে তা পর্যায়ক্রমে পূরণ করা হবে। জরাজীর্ণ ভবন সংস্কার, মাঠ উন্নয়নসহ বিভিন্ন কাজ পিডিপি-৫ প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। যেসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা-সংক্রান্ত ঘাটতি রয়েছে, তা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন তারা।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নুর মো. শামসুজ্জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
ভোরের আকাশ/জাআ
সংশ্লিষ্ট
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ এবং বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সমগ্র দেশব্যাপী পরিচালিত "অদম্য নারী পুরস্কার-" শীর্ষক কর্মসূচি পালিত হলো।এতে সমাজ উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন যে নারী ক্যাটাগরিতে লালমনিরহাট জেলা পর্যায়ে শামস ই রহমান নুপুর এই পদকে ভূষিত হয়েছেন।উল্লেখ্য, তিনি সমাজ উন্নয়নে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও উন্নয়নে লালমনিরহাট জেলায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। দুস্থ নারীদের স্বাবলম্বী করার প্রয়াসে নির্ভীক নারী নামে একটি সংগঠন তিনি পরিচালনা করেন। তার অধীনে হস্ত ও কুটিরশিল্পে কাজ করে গ্রামাঞ্চলে অনেক নারী স্বাবলম্বী হয়েছেন। তিনি বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি, বৃক্ষরোপণ, মাদকবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে চলেছেন। কুসংস্কার দূর করে নারীদের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কথা বলেন। তিনি নিজে একজন আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছেন।ভোরের আকাশ/জাআ
দিনাজপুর বিজিবি সেক্টরে সীমান্ত বিষয়ে বিজিবির প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বিজিবির উত্তর পশ্চিম রংপুর এর আওতায় দিনাজপুর বিজিবির সেক্টরের হলরুমে সীমান্ত বিষয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাথে প্রেস ব্রিফিং করেন।প্রেসব্রিফিং এ সভাপত্বি করেন ফুলবাড়ী ২৯ বিজিবির অধিনায়ক লে: কর্ণেল জাবের বিন জব্বার (পিএসসি)। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন দিনাজপুর বিজিবির সেক্টর কমান্ডার মোহাম্মাদ ফয়সাল হাসান খান, বিজিবিএম, পিবিজিএম, পিএসসি।তিনি বলেন, প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ আপনারা অবগত আছেন, রংপুর রিজিয়নের দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকা ১,৬৬৮.৮৫৪ কিঃ মিঃ। অত্র রিজিয়নের অধীনে ৪টি সেক্টর ও ১৫টি ব্যাটালিয়ন রয়েছে। রংপুর রিজিয়নের প্রতিটি বিজিবি সদস্য সীমান্ত সুরক্ষায় নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক হিসেবে নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত নভেম্বর ২০২৫ মাসে মাদক, অস্ত্র ও অন্যান্য মালামাল চোরাচালান রোধ, নারী ও শিশুসহ মানব পাচার প্রতিরোধ, সীমান্ত সুরক্ষা ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বিজিবি কার্যকর ভূমিকা রাখছে।চোরাচালানী মালামাল আটক। রংপুর রিজিয়ন এর আওতাধীন ব্যাটালিয়নে কর্মরত বিজিবি সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করে এ বছরে ৪৮ জন আসাসিসহ প্রায় ৪ কোটি টাকার অধিক মূল্যের বিভিন্ন প্রকার মাদক ও চোরাচালানী মালামাল আটক করতে সক্ষম হয়েছেঃআটককৃত মাদকদ্রব্য। ফেন্সিডিল ৯৬৬ বোতল, বিদেশি মদ ১,০০০ বোতল, ইয়াবা ৩,৪৬৯ পিস, গাঁজা ২২৮.০১৯ কেজি, ভারতীয় বিভিন্ন প্রকার নেশাজাতীয় সিরাপ ২,০৫১ বোতল, ভারতীয় মেটাডক্সিন ট্যাবলেট ৮,৫৯০ পিস, ভারতীয় ট্যাপেন্টাডল ট্যাবলেট ১৭,৯৬৭ পিস এবং ভারতীয় নেশা জাতীয় ইঞ্জেকশন ৫,৭৪৩ পিস।পুরুষ, নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধে গৃহিত কার্যক্রম। দেশের অন্যান্য সীমান্তের ন্যায় রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন সেক্টর সমূহের অধীনস্থ ব্যাটালিয়নসমূহ দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় পুরুষ, নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধে সর্বদা সজাগ ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। নিয়মিত টহল ও বিশেষ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন সীমান্ত এলাকা হতে নভেম্বর ২০২৫ মাসে পুরুষ, নারী ও শিশু পাচারকারী চক্রের সদস্য ১ জন (ভারতীয় নগরিক)’সহ বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা হতে পুরুষ-০৫ জন, নারী- ০৩ জন ও শিশু-০২ জনকে উদ্ধার করতঃ আইনের আওতায় এনেছে।এছাড়াও সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার রয়েছে এবং পাচারের কুফল সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য সীমান্তবর্তী এলাকার জনসাধারণদের মধ্যে জনসচেতনতামূলক সভার মাধ্যমে নিয়মিত প্রেষণা প্রদান ও সতর্ক করা হচ্ছে। অস্ত্র ও গোলাবারুদ। ০৬ রাউন্ড গুলিসহ ০৩টি বিদেশী ওয়ান শুটার গান এবং ২.৩ কেজি গান পাউডার।আটককৃত চোরাচালানী মালামাল। ভারতীয় প্রসাধনী সামগ্রী- ১০২৬০ পিস, বিভিন্ন প্রকার ভারতীয় ঔষধ সামগ্রী- ৬৮৭৭টি, বিভিন্ন প্রকার ভারতীয় খাবার সামগ্রী-১৯০৩টি, বিভিন্ন প্রকার ভারতীয় শাড়ী-৯১ পিস, ভারতীয় লেহেঙ্গা-০২ পিস, ভারতীয় প্যান্টের কাপড়-০৪ পিস, ভারতীয় কম্বল-৮২ পিস, ভারতীয় শাল চাদর-৯০ পিস, ভারতীয় জিরা-৬৯৪ কেজি, ভারতীয় ধান-৭৬০ কেজি, ভারতীয় চিনি-১৫৪ কেজি, ভারতীয় পিয়াজ- ১৭৭৫ কেজি, ভারতীয় আপেল- ১০১ কেজি, ট্রাক-০১টি, ইজি বাইক-০৩টি, ইঞ্জিন চালিত নৌকা-০৬টি, মোটরসাইকেল- ২৫টি, ভারতীয় বাইসাইকেল-১৫টি এবং বিভিন্ন প্রকার মোবাইল ৬৬টি।আটককৃত গবাদিপশু। গরু ১১৫টি, মহিষ ১৩টি এবং ছাগল- ০২টি।ইলিশ ধরা ও পাচার রোধ। রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন রাজশাহী জেলায় অবস্থিত পদ্ম এলাকায় সরকার ঘোষিত ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা, আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাত করণ, ক্রয়-বিক্রয় এবং পার্শ্ববর্তী দেশে প্রচার প্রতিরোধে বিজিবি সদস্যগণ নিয়মিত টহল পরিচালনার মাধ্যমে সক্রিয়ভাবে ভূমিকা পালন করে আসছে।জাল টাকা পাচার প্রতিরোধে গৃহিত কার্যক্রম। জাল টাকার উপস্থিতি যে কোন দেশের অর্থনীতির জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরুপ। জাল টাকার বিস্তার প্রতিরোধে দেশের অন্যান্য সীমান্তের ন্যায় রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন সেক্টর সমূহের অধীনস্থ ব্যাটালিয়নসমূহ দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা কার্যক্রম ও টহল তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিজিবি’র চেকপোষ্ট এবং সন্দেহজনক স্থান সমূহে তল্লাশীর মাধ্যমে সজাগ দৃষ্টি রাখছে।আন্তঃসীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধে গৃহিত কার্যক্রম। সীমান্ত হত্যা, অবৈধ অনুপ্রবেশ, নারী ও শিশু পাচার, পুশ ইন, গবাদি পশু ও মাদকদ্রব্যসহ যে কোন ধরনের চোরাচালান এবং আন্তঃ সীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধের লক্ষ্যে দেশের অন্যান্য সীমান্তের ন্যায় রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন সেক্টর সমূহের অধীনস্থ ব্যাটালিয়নসমূহ দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় ২৪ ঘন্টা টহল পরিচালনা করে আসছে। এছাড়াও বিশেষ টহল দ্বারা প্রতিনিয়ত তালিকাভূক্ত চোরাকারবারীদের নজরদারীর মাধ্যমে আইনের আওতায় আনার জন্য সদা তৎপর রয়েছে। এছাড়াও প্রতিপক্ষ বিএসএফ এর সাথে সমন্বিত টহল পরিচালনা ও নিয়মিত পতাকা বৈঠক ও সৌজন্য সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। দেশের অন্যান্য সীমান্তের ন্যায় রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন সেক্টর সমূহের অধীনস্থ ব্যাটালিয়নসমূহ দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় নভেম্বর ২০২৫ মাসে বিজিবি-বিএসএফ বিভিন্ন পর্যায়ে সর্বমোট ৪১৩টি পতাকা বৈঠক/সৌজন্য সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিজিবি সর্বদা সীমান্ত অপরাধ নিমূল করতঃ সীমান্ত এলাকার জনগন যাতে স্বাভাবিক জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয় সেই চেষ্টা অব্যহত রেখেছে।সীমান্ত রক্ষায় সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নতুন বিওপি স্থাপন। দেশের অন্যান্য সীমান্তের ন্যায় রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন সেক্টর সমূহের অধীনস্থ ব্যাটালিয়নসমূহ দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা প্রদানে বিজিবি’র কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন সীমান্ত এলাকায় নতুন ০৬টি বিওপি স্থাপন করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত নভেম্বর ২০২৫ মাসে রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন লালমনিরহাট জেলার সীমান্ত এলাকায় (৬১ বিজিবি’র আওতাধীন) চতুরবাড়ী বিওপি উদ্বোধন করা হয়েছে। সীমান্ত এলাকায় নতুন নতুন বিওপি স্থাপনের ফলে সীমান্তে নজরদারি ও টহল কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে সীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধ এবং জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বিজিবি’র সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিজিবি’র ভূমিকা। বেসামরিক প্রশাসনের সহায়তায় অভ্যন্তরীণ আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ নিশ্চিত করতে রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন সেক্টর সমূহের অধীনস্থ ব্যাটালিয়নসমূহের সদস্যগণ সদা প্রস্তুত রয়েছে। আপনারা জানেন, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজীয় সহায়তা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় সাধারণ জনগনের আস্থা অর্জন করতে স্বক্ষম হয়েছে।জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম।দেশের অন্যান্য সীমান্তের ন্যায় রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন সেক্টর সমূহের অধীনস্থ ব্যাটালিয়নসমূহ দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম পরিচালনায় সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৯ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে দিনাজপুর জেলার বিরল সীমান্তবর্তী এলাকায় ৩০০ জন গরীব ও দুঃস্থদের মাঝে ৩০০টি শীত বস্ত্র (কম্বল) এবং বাচ্চাদের জন্য ১০০টি শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়। এছাড়াও মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে স্থানীয় ৫০০ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও প্রয়োজনীয় ঔষধ সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। বিজিবি কর্তৃক গরীব ও দুঃস্থদের মাঝে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাস জুড়েও এ ধরণের শীতবস্ত্র বিতরণ ও মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম। দেশের অন্যান্য সীমান্তের ন্যায় রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন সেক্টর সমূহের অধীনস্থ ব্যাটালিয়নসমূহ দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি সীমান্তবর্তী জনসাধারণ ও জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে নিয়মিতভাবে জনসচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। সীমান্ত দূর্ঘটনা এড়ানো, চোরাচালান রোধ, চোরাচালানে সম্পৃক্ত না হওয়া, সীমান্ত অতিক্রম না করা, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ, মানব পাচার ও বিভিন্ন ধরনের সীমান্তবর্তী সমস্যা দূরীকরণের লক্ষ্যে দেশের অন্যান্য সীমান্তের ন্যায় রংপুর রিজিয়নের আওতাধীন সেক্টর সমূহের অধীনস্থ ব্যাটালিয়নসমূহ নভেম্বর ২০২৫ মাসে সীমান্ত এলাকায় বিভিন্ন পর্যায়ে সর্বমোট ২৫৮৬টি জনসচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা হয়েছে। ব্যবস্থাপনায় ছিলেন, ফুলবাড়ী ২৯ বিজিবি ব্যাটালিয়ন।ভোরের আকাশ/জাআ
গোটা জীবনের অশ্রু-হাহাকার যেন সঞ্চিত হয়ে আছে ৬৫ বছরের এই নারী, তাসলিমা খাতুনের চোখে। এক সময় স্বামী-সন্তান নিয়ে যিনি নিরবে সংসার সামলাতেন, ভাগ্যের নির্মম আঘাতে সেই মানুষটি আজ দুঃখ-বেদনার এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি।স্বামীহীন জীবনে দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করেই দিন কাটছিল। কিন্তু কয়েক বছর আগে ঘটে যাওয়া ছোট্ট একটি দুর্ঘটনা তার জীবনটাকে মুহূর্তেই পাল্টে দেয়। বড়োই গাছের নিচে কাজ করার সময় একটি ছোট্ট কাঁটা ফোটে পায়ে। ধীরে ধীরে ভয়ঙ্কর ইনফেকশনে পরিণত হয় সেখানে। চিকিৎসার খরচ সামলাতে হিমশিম খাওয়া পরিবার শেষে জানতে পারে—তাসলিমার ডান পা আর বাঁচানোর উপায় নেই।জীবন বাঁচলেও পা হারানোর সেই দুঃসহ মুহূর্ত থেকে তার পৃথিবী যেন থমকে যায়। ধীরে ধীরে ডান হাতসহ শরীরের অন্যান্য অংশও অবশ হয়ে পড়ে। ছয় মাস ধরে ঘরবন্দি হয়ে একটি একাকী লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। নড়াচড়ার সামর্থ্য না থাকায় প্রতিটি মুহূর্তে অন্যের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছিল। একটি হুইলচেয়ার তার জীবনে ছিল অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু দীর্ঘ চিকিৎসার ব্যয় তার শেষ সম্বলটুকুও শেষ করে দিয়েছে। অসহায়তা যেন পায়ের ব্যথার চেয়েও বড়ো যন্ত্রণা হয়ে উঠেছিল।ঠিক এই কঠিন সময়ে তার জীবনে আলো হয়ে আসেন গাজীপুর জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ভূইয়া। তাসলিমার দুর্বিষহ অবস্থার কথা জেনে তিনি ব্যক্তিগত মানবিক উদ্যোগে একটি হুইলচেয়ার কিনে মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে পৌঁছে দেন তার বাড়িতে।হুইলচেয়ার পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাসলিমা। কাঁপা কণ্ঠে বলেন, “স্বামীকে হারিয়ে অনেক কষ্ট করেছি। কিন্তু পা হারানোর পর মনে হয়েছিল আমার জীবন শেষ। আজ মনে হচ্ছে—আল্লাহ আবার আমাকে চলার শক্তি দিয়ে দিলেন। এই হুইলচেয়ার শুধু আমার বসার চাকা নয়—এটা আমার বেঁচে থাকার নতুন ভরসা।”হুইলচেয়ার হস্তান্তরে শফিকুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, “অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো শুধু মানবিক দায়িত্ব নয়; এটি সাংবাদিকতার নৈতিকতাও। গাজীপুর জেলা প্রেসক্লাবসহ শ্রীপুরের সাংবাদিক সমাজ এই মায়ের পাশে দাঁড়াতে পেরে গর্বিত।”এ সময় উপস্থিত ছিলেন মো. নাসির উদ্দীন মাস্টার, বাবুল সরকার, সাংবাদিক মুনসুরুল ইসলাম মাসুমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।হুইলচেয়ারে বসে যখন তাসলিমা ধীরে ধীরে সামনে এগিয়ে গেলেন। তার মুখে ফুটে ওঠা হাসিটি যেন ছয় মাসের গৃহবন্দি জীবনের সব অন্ধকার ছাপিয়ে উঠেছিল। মনে হচ্ছিল—তিনি আবার আলো দেখছেন, আবার নতুনভাবে বাঁচার পথ খুঁজে পাচ্ছেন।ভোরের আকাশ/জাআ
আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে রাজবাড়ীতে মানববন্ধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি, রাজবাড়ী। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মুখে আমচত্বরে মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জনাব মো. তারিফ-উল-হাসান।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ী জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব সুলতানা আক্তার। তিনি আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দুর্নীতিকে ‘না’ বলতে হবে।” তিনি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ী জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ মনজুর মোরশেদ। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষক–শিক্ষার্থী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।ভোরের আকাশ/জাআ