মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষকদের ৮ম গ্রেডে বেতন দেওয়ার দাবি
মাদ্রাসা শিক্ষকদের মর্যাদা ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহকারী শিক্ষকদের ৮ম গ্রেডের বেতন কাঠামো চালুর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মাদ্রাসা জেনারেল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমজিটিএ)। একই সঙ্গে শিক্ষা খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ এবং সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন-সংগঠনের সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, বর্তমানে শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের তুলনায় অনেক কম। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বরাদ্দকৃত ৯৪ হাজার ৭১১ কোটি টাকা জাতীয় বাজেটের মাত্র ১১.৮৮ শতাংশ, যা জিডিপির ১.৬৯ শতাংশ। অথচ ইউনেস্কোর পরামর্শ অনুযায়ী জিডিপির অন্তত ৬ শতাংশ শিক্ষায় বরাদ্দ থাকা উচিত।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষা খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ দিয়ে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ এবং মাদ্রাসা সহকারী শিক্ষকদের ৮ম গ্রেডের বেতন নিশ্চিত করতে হবে।
সংগঠনের উত্থাপিত প্রধান দাবিগুলো হলো- এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা প্রদান, সরকারি নিয়মে মেডিকেল ও বাড়িভাড়া প্রদান, মাদ্রাসা সহকারী শিক্ষকদের ৮ম গ্রেড প্রদান, অনুপাত প্রথা বাতিল করে প্রভাষকদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা এমপিওভুক্তকরণ, শিক্ষা কমিশন গঠন, এনটিআরসিএর মাধ্যমে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ ও মাদ্রাসার প্রশাসনিক পদে জেনারেল শিক্ষকদের নিয়োগ।
সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন- সংগঠনের মহাসচিব ফিরোজ আলম। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন- সিনিয়র সহসভাপতি সুলতান মাহমুদ, ফকরুল ইসলাম, কে এমন শামীম, আবদুস সাকুর, মোহাম্মদ আলী, আব্দুল হাই, ফজলুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মেহেদী হাসান সরকার, সিনিয়র সাংগঠনিক সম্পাদক মো. এলিন তালুকদার, অর্থ সম্পাদক আলাউদ্দিন, রেজাউল হক মণ্ডল প্রমুখ।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
আবাসন সংকট ও বাজেট বৈষম্যের প্রতিবাদে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র উদ্দেশ্যে পদযাত্রার (লং মার্চ) কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠকে আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্ত নেয়।মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়। তারা জানান, আগামীকাল বুধবার যমুনার উদ্দেশ্যে লং মার্চ শুরু হবে। প্রয়োজনে যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও অবরোধও দিতে প্রস্তুত তারা। এই কর্মসূচির সময় ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।এর আগে সোমবার (১২ মে) শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে ক্যাম্পাসে এক ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার শিক্ষক সমিতি ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা ইউজিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করলেও বৈঠক থেকে কার্যকর কোনো সমাধান না আসায় ক্ষুব্ধ হন শিক্ষার্থীরা।আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের আবাসন সংকট ও বাজেট বৈষম্য নিয়ে বারবার দাবি জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কেবল আশ্বাস দিয়েই দায় সারছে। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা অস্থায়ী ও অনিরাপদ পরিবেশে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন।১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. তৌহিদ আল মাহমুদ নাবিল বলেন, “জবির শিক্ষার্থীদের কষ্টের মাত্রা দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে অনেক বেশি। আমরা চাই না কেউ আমাদের করুণা করুক, আমরা চাই সমান সুযোগ। যদি না পারেন সমাধান দিতে, তাহলে জবি বন্ধ করে দিন।”শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ফয়সাল মুরাদ বলেন, “আমরা বাজেট ১৫৪ কোটি থেকে ৩০৫ কোটি টাকা করার দাবি জানিয়েছিলাম। ইউজিসি সেটি নাকচ করে দিয়েছে। তারা বলেছে, তারা সমস্যাটা জানে, কিন্তু কিছুই করার ক্ষমতা তাদের নেই। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছেও গিয়েছি, সেখান থেকেও সাড়া আসেনি। তাই এবার আমরা সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাচ্ছি আমাদের ন্যায্য দাবির কথা জানাতে।”জানা গেছে, যমুনা অভিমুখে এই লং মার্চে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আন্দোলনকারীরা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।ভোরের আকাশ/হ.র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্যাম্পাসে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৪) নামে এক শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১৩ মে) রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসংলগ্ন কালিমন্দির গেটের সামনে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।নিহত সাম্য ঢাবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায়। তিনি ফখরুল আলমের ছেলে।বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সাম্য স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে হত্যাকাণ্ডের কারণ ও জড়িতদের পরিচয় সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্র সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে এবং দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে বিচার দাবি করা হয়েছে। ভোরের আকাশ/হ.র
কৃষিবিদদের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও পেশাগত বৈষম্য নিরসনের ছয় দফা দাবিতে কৃষি সচিবের সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথ অবরোধ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা।মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বার মোড়ে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা এই অবরোধ শুরু করেন। তবে অবরোধের সময় কোনো ট্রেন আটকে পড়েনি।কর্মসূচিতে শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন এবং তারা 'তুমি কে আমি কে — কৃষিবিদ কৃষিবিদ', 'কৃষিবিদের একশন, ডাইরেক্ট একশন'সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।সন্ধ্যা ৮টা ৫০ মিনিটে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম প্রিন্স ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করলে রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়।বাকৃবির কৃষি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিম আকরাম বলেন,“এদেশে ডিপ্লোমা পাস করেও কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ ডাক্তার, কেউ কৃষিবিদ সেজে বসে। কৃষিবিদদের প্রকৃত দাবি আদায় না হলে আমরা দেশের সব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউনের পথে যাব।”এর আগে বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান-এর সঙ্গে বৈঠকে বসে।বৈঠকে উপস্থিত বাকৃবির শিক্ষার্থী ও কৃষিবিদ ঐক্য পরিষদের সংগঠক নাজমুল আলম বলেন,“সচিব মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনায় কোনো স্পষ্ট আশ্বাস মেলেনি। আমরা স্মারকলিপিও দিয়েছি। তিনি কেআইবি (কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ)-এর মাধ্যমে আলোচনার পথ খোঁজার পরামর্শ দিয়েছেন।”শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি:১. ডিএই, বিএডিসি ও অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ১০ম গ্রেডের পদ কৃষিবিদদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে।২. কৃষি সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানে ৯ম গ্রেডে নিয়মিত পদোন্নতি ও পদসংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।৩. বিনা পরীক্ষায় বিএডিসি কোটায় ৯ম গ্রেডে পদোন্নতি বন্ধ করতে হবে; গেজেটের বাইরে পৃথক পদসোপান রাখতে হবে।৪. কৃষি ডিপ্লোমাধারীদের জন্য আলাদা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।৫. শুধুমাত্র কৃষি/কৃষি সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতকধারীদেরই 'কৃষিবিদ' উপাধি ব্যবহারের অনুমতি দিতে হবে এবং তা নিয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।৬. কৃষি বিষয়ক ডিপ্লোমা বা কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) আওতায় রাখতে হবে।এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হলে আরও বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ভোরের আকাশ/হ.র
শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলনের মুখে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) প্রশাসনিক পদে বড় ধরনের রদবদল আনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষকে সরিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম।মঙ্গলবার (১৩ মে) রাতে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের প্রজ্ঞাপনে এই নিয়োগ দেওয়া হয়। প্রজ্ঞাপনটি স্বাক্ষর করেন বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব এ এস এম কাসেম।ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলম রাবির ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৬-এর ১০(১) ও ১০(৩) ধারা অনুযায়ী তাকে পূর্ণকালীন উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতন-ভাতা পাবেন; বিধি অনুযায়ী অন্যান্য পদসংশ্লিষ্ট সুবিধাও ভোগ করবেন; তাকে সার্বক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে হবে; রাষ্ট্রপতি ও আচার্য যেকোনো সময় এই নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।এর আগে একই রাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানী এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. মামুন অর রশিদকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।উল্লেখ্য, গত ৪ মে থেকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অনিয়ম ও প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামেন। একপর্যায়ে তারা আমরণ অনশনে বসেন। শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবির মুখে প্রশাসনপদে এই পরিবর্তন আনল সরকার। ভোরের আকাশ/হ.র