আবাসন সংকট নিরসনে ‘লং মার্চ টু যমুনা’র ঘোষণা জবি শিক্ষার্থীদের
আবাসন সংকট ও বাজেট বৈষম্যের প্রতিবাদে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র উদ্দেশ্যে পদযাত্রার (লং মার্চ) কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠকে আশানুরূপ অগ্রগতি না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এই সিদ্ধান্ত নেয়।
মঙ্গলবার (১৩ মে) সন্ধ্যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়। তারা জানান, আগামীকাল বুধবার যমুনার উদ্দেশ্যে লং মার্চ শুরু হবে। প্রয়োজনে যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি ও অবরোধও দিতে প্রস্তুত তারা। এই কর্মসূচির সময় ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।
এর আগে সোমবার (১২ মে) শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে ক্যাম্পাসে এক ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মঙ্গলবার শিক্ষক সমিতি ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা ইউজিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করলেও বৈঠক থেকে কার্যকর কোনো সমাধান না আসায় ক্ষুব্ধ হন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের আবাসন সংকট ও বাজেট বৈষম্য নিয়ে বারবার দাবি জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কেবল আশ্বাস দিয়েই দায় সারছে। বর্তমানে শিক্ষার্থীরা অস্থায়ী ও অনিরাপদ পরিবেশে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন।
১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. তৌহিদ আল মাহমুদ নাবিল বলেন, “জবির শিক্ষার্থীদের কষ্টের মাত্রা দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে অনেক বেশি। আমরা চাই না কেউ আমাদের করুণা করুক, আমরা চাই সমান সুযোগ। যদি না পারেন সমাধান দিতে, তাহলে জবি বন্ধ করে দিন।”
শিক্ষার্থী প্রতিনিধি ফয়সাল মুরাদ বলেন, “আমরা বাজেট ১৫৪ কোটি থেকে ৩০৫ কোটি টাকা করার দাবি জানিয়েছিলাম। ইউজিসি সেটি নাকচ করে দিয়েছে। তারা বলেছে, তারা সমস্যাটা জানে, কিন্তু কিছুই করার ক্ষমতা তাদের নেই। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছেও গিয়েছি, সেখান থেকেও সাড়া আসেনি। তাই এবার আমরা সরাসরি প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাচ্ছি আমাদের ন্যায্য দাবির কথা জানাতে।”
জানা গেছে, যমুনা অভিমুখে এই লং মার্চে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আন্দোলনকারীরা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
ভোরের আকাশ/হ.র
সংশ্লিষ্ট
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংকট দূর করতে বিশাল পরিসরে শিক্ষক নিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার। এক লাখ ৮২২টি এমপিওভুক্ত পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।সোমবার (১৬ জুন) এনটিআরসিএ সদস্য মো. শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, আবেদন শুরু হবে ২২ জুন থেকে, চলবে ১০ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত। আবেদন ফি জমা দেওয়া যাবে ১৩ জুলাই পর্যন্ত।স্কুল ও কলেজে ৪৬ হাজার ২১১টি, মাদরাসায় ৫৩ হাজার ৫০১টি, এবং কারিগরি ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনায় ১ হাজার ১১০টি পদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।প্রার্থীরা সর্বোচ্চ ৪০টি প্রতিষ্ঠানে পছন্দক্রম দিতে পারবেন। আবেদন ফি এক হাজার টাকা, যা টেলিটক ও এনটিআরসিএর ওয়েবসাইট থেকে জমা দেওয়া যাবে।বয়স ও নিবন্ধনের সনদসংক্রান্ত নিয়মে বলা হয়েছে, ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের তারিখ ৪ জুন ২০২৫–এর হিসাবে প্রার্থীর বয়স সর্বোচ্চ ৩৫ বছর হতে হবে। নিবন্ধন সনদের মেয়াদও ৪ জুন থেকে তিন বছর হিসেব করা হবে।বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ভুয়া বা মিথ্যা তথ্য দিয়ে আবেদন করলে সুপারিশ বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি কোনো প্রতিষ্ঠান সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীকে নিয়োগ না দেয়, তবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানপ্রধানের এমপিও স্থগিত বা বাতিল করা হবে এবং ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডি বাতিল করার পদক্ষেপ নেওয়া হবে।তবে, শূন্যপদের চাহিদা স্থানীয় শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে সংগৃহীত হওয়ায় চাহিদাজনিত ভুলের দায় এনটিআরসিএ নেবে না বলেও জানানো হয়।ভোরের আকাশ/আজাসা
দেশজুড়ে করোনা ভাইরাস ও ডেঙ্গু রোগের সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে আসন্ন উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। প্রতিটি পরীক্ষার কেন্দ্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সোমবার (১৬ জুন) সকালে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বোর্ডের এক অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের সময় পরীক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। একই সঙ্গে কেন্দ্রের প্রবেশপথে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে কেন্দ্রের ভেতরে ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং পরীক্ষা শুরুর আগে মশা নিধনের ওষুধ স্প্রে করতে হবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।এ ছাড়া পরীক্ষা কক্ষের আসন বিন্যাস বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী করতে হবে এবং প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রে মেডিকেল টিম সক্রিয় রাখতে হবে। সিভিল সার্জন বা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় রাখার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। জনসচেতনতা বাড়াতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে স্বাস্থ্যবিধি মানা নিশ্চিত করতে এবং পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে অভিভাবকদের ভিড় বা জটলা এড়াতে প্রচারণা চালানোর কথা বলা হয়েছে। নির্দেশনায় পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে শিক্ষক-পরীক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।উল্লেখ্য, বোর্ডের প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২৬ জুন শুরু হয়ে চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত, আর ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১১ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত। সম্প্রতি দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের হার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় সরকার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
দেশে করোনা এবং ডেঙ্গুর নতুন করে বৃদ্ধি পাওয়ায় আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। কিছু শিক্ষার্থী পরীক্ষার তারিখ পেছানোর দাবি করলেও শিক্ষা বোর্ডগুলো নির্ধারিত সময়েই পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে। তবে, পরীক্ষাকেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ এবং আসনের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব বাড়ানোর ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, দেশের করোনা সংক্রমণ ও ডেঙ্গুর প্রকোপ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ পরীক্ষার্থীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যদিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু শিক্ষার্থী স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখিয়ে পরীক্ষা পেছানোর দাবি তুলেছেন, তবে বোর্ডগুলো পরীক্ষা পেছানোর কোনও সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছেন।ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এসএম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, “পরীক্ষার সময় কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করা হবে। সাধারণত এক বেঞ্চে দুজন বা ৩ ফুট দূরত্ব থাকে, এবার প্রয়োজন হলে করোনাকালের মতোই আসন বিন্যাসে দূরত্ব আরও বাড়ানো হবে। ডেঙ্গু মোকাবেলায় কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হবে।”বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী আরও জানান, “পরীক্ষার সময় মাস্ক এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। এছাড়া, পরীক্ষার কক্ষে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা হবে।”ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক সফিউদ্দিন সেখ জানান, “পরীক্ষার প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আজ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।”এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় চলতি বছরে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছেন। এর মধ্যে ছাত্রী ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ এবং ছাত্র ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন। গত বছরের তুলনায় এ বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৮২ হাজার কম।ভোরের আকাশ//হ.র
দেশজুড়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি এবং করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের বিস্তার রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। রোববার (১৫ জুন) মাউশির এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা জারি করা হয়।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যৌথ নির্দেশনার আলোকে স্কুল, কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু ও করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন ও তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই কার্যক্রমের আওতায় আলোচনা সভা, র্যালি, দেয়ালপত্রিকা, পোস্টার তৈরি ও লিফলেট বিতরণসহ নানা উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।এই উদ্যোগ ‘ডেঙ্গু সচেতনতা: ভবিষ্যতে করণীয়’ শীর্ষক বৈঠকের সিদ্ধান্তের আলোকে বাস্তবায়ন করা হবে।করোনাভাইরাস প্রতিরোধে পাঁচ নির্দেশনাকরোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় পাঁচটি স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো—১. অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।২. জনবহুল স্থান এড়িয়ে চলা ও বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরা।৩. আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে দূরত্ব বজায় রাখা এবং তিন ফুট দূরে অবস্থান।৪. চোখ, নাক ও মুখে হাত দেওয়ার আগে হাত পরিষ্কার করা।৫. হাঁচি-কাশির সময় মুখ ঢাকতে টিস্যু, রুমাল বা কনুইয়ের ভাঁজ ব্যবহার করা।পুনরায় সতর্ক হওয়ার আহ্বানপ্রসঙ্গত, ২০২০ সালে দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর থেকে দেশে একাধিকবার সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হয় এবং জনস্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে। বর্তমানে আবার সংক্রমণের হার কিছুটা বাড়তে থাকায় সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।মাউশির এই নতুন নির্দেশনার মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্য সচেতনতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।ভোরের আকাশ//হ.র