মাহে রমজান অনেক মর্যাদা ও ফজিলতপূর্ণ মাস। এ মাসে মহান আল্লাহ বান্দার প্রতি অবিরত রহমত বরকত নাজিল করেন। আর বান্দাকে মাগফেরাত ও নাজাত দান করেন। শাবান মাসের শেষ দিন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার উম্মতদের বিশেষ তাসবিহ ও দোয়া পড়তে বলেছেন।
প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতদের নসিহত করেছেন, রমজান মাসজুড়ে তাসবিহ, ইসতেগফার ও দোয়ার মাধ্যমে অতিবাহিত করতে হবে, যাতে মানুষ এ বিশেষ তাসবিহ, ইসতেগফার ও দোয়ার মাধ্যমে নিজেকে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণে পরিপূর্ণভাবে তৈরি করতে পারেন।
হাদিসে এরশাদ আছে, হজরত সালমান ফারসি (রা.) এর বর্ণনা মতে, শাবান মাসের শেষ দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের উদ্দেশ্য বক্তব্য দেন যে, ‘হে লোক সকল! অবশ্যই তোমাদের সামনে মহান মাস, বরকতময় মাস উপস্থিত। এ মাসে তোমরা ৪টি কাজ বেশি বেশি আদায় কর। এর মধ্যে দুটি কাজ আল্লাহর জন্য আর দুটি কাজ তোমাদের নিজেদের জন্য। আল্লাহর জন্য দুটি কাজ হলো (তাসবিহ) এ সাক্ষ্য দেয়া যে, তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। আর নিজের জন্য যে দুটি কাজ করতে বলেছেন, তা হলো- জান্নাত লাভের দোয়া করা এবং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি চাওয়া।’
হাদিসে এরশাদ তাসবিহ পড়া অর্থাৎ এ সাক্ষ্য দেওয়া যে, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। ইসতেগফার করা অর্থাৎ ক্ষমা চাওয়া। হাদিসে অনেক ইসতেগফার এসেছে। এর উচ্চারণ : আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম ইন্নাল্লাহা গাফুরুর রাহিম। অর্থ : মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, দয়ালু।
উচ্চারণ : আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহুয়াল হাইয়্যুল কাইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলাইহি। অর্থ : মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি এক ব্যতিত কোনো ইলাহ নেই। তিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী এবং তার দিকেই আমরা ফিরে যাব।’
উচ্চারণ : রাব্বিগফিরলি ওয়া তুব্ আলাইয়্যা ইন্নাকা আংতাত তাওয়াবুর রাহিম।‘অর্থ : হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা করে দিন, আমার তাওবা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি অতিশয় তাওবাকবুুুুুলকারী, দয়াবান।’
জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির দোয়ার উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আদখিলনাল জান্নাতা ওয়া আঝিরনা মিনান নার। অর্থ : হে আল্লাহ! আমাদের জান্নাতে প্রবেশ করান এবং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দিন।
হাদিসে আরো এসেছে, ‘যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা ৩ বার জান্নাতের আশা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করবে, জান্নাত-জাহান্নাম আল্লাহর কাছে ওই ব্যক্তির দোয়া কবুলে সুপারিশ করবে।
প্রিয় নবী রাসুল (সা.) রমজান মাসজুড়ে বেশি বেশি তাওহিদের ঘোষণা, ইসতেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করা, জান্নাতের আশা ও জাহান্নাম থেকে নাজাতের দোয়া করার কথা বলেছেন। আল্লাহ তাআলা রমজানজুড়ে হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী উল্লেখিত তাসবিহ, ইসতেগফার ও দোয়াগুলো আমাদের বেশি বেশি পড়ার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করে রমজানের রহমত, বরকত, মাগফেরাত ও নাজাত লাভের তাওফিক দান করুন।
লেখক: উপ-পরিচালক ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। [email protected]
মন্তব্য