১৫তম রোজার দোয়ার অর্থ- হে আল্লাহ! এই দিনে আমাকে আপনার বিনয়ী বান্দাদের মতো আনুগত্য করার তাওফিক দিন। আপনার আশ্রয় ও হেফাজতের উসিলায় আমার অন্তরকে প্রশস্ত করে খোদাভীরু ও বিনয়ী বান্দাদের অন্তরে পরিণত করুন। হে খোদাভীরু মুত্তাকিদের আশ্রয়দাতা!
আজ ১৫ রমজান। এই দিনে আমরা নফল সালাত বা নফল নামাজ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। রোজায় নফল এবাদতের গুরুত্ব অপরিসীম। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এরশাদ করেন, ‘যখন শাবানের মধ্য দিবস আসবে, তখন তোমরা রাতে নফল এবাদত করবে ও দিনে রোজা পালন করবে।’ (ইবনে মাজাহ)। এবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নামাজ। সুতরাং নফল এবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নফল নামাজ। প্রতিটি নফল এবাদতের জন্য নতুনভাবে অজু করা মুস্তাহাব। রাতের নিয়মিত নফল এবাদতের মধ্যে রয়েছেÑ বাদ মাগরিব ৬ থেকে ২০ রাকাত আউওয়াবিন নামাজ। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর ৬ রাকাত নামাজ আদায় করবে; এসবের মাঝে কোনো মন্দ কথা না বলে, তার এ নামাজ ১২ বছরের এবাদতের সমতুল্য গণ্য হবে।’ হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের পর ২০ রাকাত নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তায়ালা তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করবেন।’ (সুনানে তিরমিজি)।
পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘রাতের শ্রেষ্ঠতম এবাদত হলো তাহাজ্জুদ নামাজ।’ (সূরা বনি ইসরাইল : ৭৯)। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি নফল নামাজ আদায় করে, সে ব্যক্তি নামাজের মাধ্যমে তার পালনকর্তার অতি ঘনিষ্ঠতা লাভ করে।’ এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন, ‘সিজদা করো আর আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করো। নফল নামাজের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবেÑ নামাজটা যেন একটু দীর্ঘ হয় এবং সিজদায় দীর্ঘ কাটানো যায়।’ এ বিষয়ে হাদিসের বর্ণনা পাওয়া যায়।
নফল নামাজের পরিচয় ও প্রকারভেদ : দৈনিক পাঁচ ওয়াক্তে ১৭ রাকাত ফরজ নামাজ, ৩ রাকাত ওয়াজিব বিতির নামাজ, চার ওয়াক্তে ১২ রাকাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা নামাজ, দুই ওয়াক্তে ৮ রাকাত সুন্নতে জায়েদা নামাজ ছাড়া অন্যান্য নামাজ হলো নফল। নফল নামাজের মধ্যে পাঁচ ওয়াক্ত হলো নির্ধারিত নফল নামাজ; যথা তাহাজ্জুদ নামাজ, ইশরাক নামাজ, চাশত নামাজ, জাওয়াল নামাজ, আউওয়াবিন নামাজ। এছাড়া রয়েছে আরো কিছু অনির্ধারিত নফল নামাজ। ফরজ ও ওয়াজিব নামাজ ছাড়া বাকি সব নামাজকেই নফল নামাজ বলা হয়। (কিতাবুস সালাত)।
নফল নামাজের নিষিদ্ধ সময় : সূর্যোদয়ের সময় সব নামাজ নিষিদ্ধ, সূর্য মাথার ওপর স্থির থাকা অবস্থায় নামাজ পড়া মাকরুহে তাহরিমি, সূর্যাস্তের সময় চলমান আসর ব্যতীত অন্য কোনো নামাজ বৈধ নয়। এছাড়া ফজর নামাজের ওয়াক্ত হলে তখন থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত এবং আসর ওয়াক্তে ফরজ নামাজ পড়া হলে তখন থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোনো ধরনের নফল নামাজ পড়া নিষেধ। এ পাঁচটি সময় বাদে অন্য যেকোনো সময় নফল নামাজ পড়া যায়। (আওকাতুস সালাত)।
লেখক: উপ-পরিচালক ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়। [email protected]
মন্তব্য