-->

রমজানে বেশি করে সদকা দিতে হয়

অনলাইন ডেস্ক
রমজানে বেশি করে সদকা দিতে হয়

১৪তম রোজায় এই দোয়া পড়তে হয়; ‘হে আল্লাহ! এ দিনে আমাকে আমার ভ্রান্তির জন্যে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন না। আমার দোষ-ত্রুটিকে হিসাবের মধ্যে ধরবেন না। আপনার মর্যাদার উসিলায় আমাকে বিপদ-আপদ ও দুর্যোগের লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত করবেন না। হে মুসলমানদের মর্যাদা দানকারী।’

 

আজ ১৪ রমজান। এ দিনে আমরা সদকা বিষয়ে আলোচনা করব। যাদের ওপর জাকাত ফরজ নয়, তারা রমজান মাসে বেশি বেশি সদকা করতে পারেন। যাদের ওপর জাকাত ফরজ, তারাও জাকাত আদায়ের পর অতিরিক্ত সদকা করতে পারেন। সদকার মাধ্যমে মহান আল্লাহ রিজিকে বরকত এনে দেন। বিপদাপদ দূর করে দেন। মানুষের হায়াতে বরকত হয়, অপমৃত্যু কমে ও অহংকার-অহমিকা থেকে মুক্ত থাকা যায়। (আত্তারগিব ওয়াত তারহিব : ২/৬৫)আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার ঈদুল আজহা অথবা ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের জন্য আল্লাহর রাসুল (সা.) ঈদগাহের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি মহিলাদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেন, হে মহিলা সমাজ! তোমরা সদকা করতে থাক। কারণ আমি দেখেছি, জাহান্নামের অধিবাসীদের মধ্যে তোমরাই বেশি। তারা জিজ্ঞেস করলেন, কী কারণে, হে আল্লাহর রাসুল? তিনি বলেন, তোমরা বেশি পরিমাণে অভিশাপ দিয়ে থাক আর স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ হও। (বুখারি, হাদিস : ৩০৪)

 

শুধু বিপদাপদ নয়, সদকার মাধ্যমে গুনাহ থেকে পবিত্র হওয়া যায়। অন্তরের নিফাক দূর হয়ে যায়। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, হে নবী! তাদের ধন-সম্পদ থেকে সদকা নিয়ে তাদেরকে পাক পবিত্র করুন, (নেকির পথে) তাদের এগিয়ে দিন এবং তাদের জন্য রহমতের দোয়া করুন। (সুরা তাওবা, আয়াত : ১০৩)।

 

দান বা সদকা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করার গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। যা বাধ্যতামূলক জাকাত ও ওয়াজিব সদকা ব্যতীত আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশে দান করা হয় তাকেই সদকা বলা যায়। সদকার বলয় থেকে হাদিয়া ও উপঢৌকন বের হয়ে যাচ্ছে, যা মিল-মহব্বত ধরে রাখা ও বাড়ানোর উদ্দেশে একে অপরকে দিয়ে থাকে। এটা সদকার অন্তর্ভুক্ত নয়। নফল সদকা সবসময় দেওয়া উত্তম। বিশেষ করে যখন প্রয়োজন দেখা দেয়। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে অনেক উৎসাহব্যঞ্জক বাণী এসেছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, কে আছে, যে আল্লহকে উত্তম ঋণ দেবে, ফলে তিনি তার জন্য বহুগুণে বাড়িয়ে দেবেন? (সূরা আল বাকারা : ২৪৫)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি হালাল উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণ সদকা করে আর আল্লাহ হালাল ব্যতীত অন্যকিছু গ্রহণ করেন না, আল্লাহ তা তার ডান হাতে গ্রহণ করেন এরপর তিনি তা লালন করেন, যেমন তোমাদের কেউ তার ঘোড়ার বাচ্চাকে লালন করে, এমনকি একসময় সে সদকা পাহাড়তুল্য হয়ে যায় (বুখারি ও মুসলিম)। যে ব্যক্তি গোপনে সদকা দেয় তাকে রাসুলুল্লাহ (সা.) ওই সাতজনের মধ্যে হিসাব করেছেন যাদেরকে আল্লাহ তার আরশের ছায়ায় ছায়া দেবেন, যেদিন তার ছায়া ব্যতীত অন্য কোনো ছায়া থাকবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন এবং এমন ব্যক্তি যে সদকা করল, অতঃপর তা গোপন করল, এমনকি তার বাম হাত জানল না, তার ডান হাত কি দান করছে (বুখারি ও মুসলিম)।

 

কাআব ইবনে উজরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, সদকা পাপ নিভিয়ে দেয় যেভাবে পানি আগুন নেভায় (তিরমিজি)। যারা গোপনে দান করবেন মহান আল্লাহ কঠিন কিয়ামতের দিন তাদের আরশের ছায়াতলে স্থান দেবেন (বুখারি, হাদিস : ৬৬০)। আসুন পবিত্র রমজানে আমরা বেশি বেশি সদকা করে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের মন থেকে বেশি বেশি সদকা দেওয়ার তৌফিক এনায়েত করুন। আমিন।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version