-->
শিরোনাম

যাকাত দেয়া যাবে আট খাতে

নিজস্ব প্রতিবেদক
যাকাত দেয়া যাবে আট খাতে

যাকাতের নিসাব পরিমাণ হচ্ছে সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণ, অর্থাৎ ৮৭.৪৫ গ্রাম স্বর্ণ অথবা সাড়ে ৫২ তোলা রৌপ্য, অর্থাৎ ওই পরিমাণ স্বর্ণ বা রৌপ্যের দামের অর্থ অথবা সম্পদ। খাতের বাইরে অন্য কোনো খাতে যাকাতের অর্থ ব্যয় করা যাবে না।

 

যাকাত বণ্টনের নির্ধারিত আট খাত :

 

১. সেই ব্যক্তি যার নিসাব পরিমাণ সম্পদ নেই। যে ব্যক্তি রিক্তহস্ত, অভাব মেটানোর যোগ্য সম্পদ নেই, ভিক্ষুক হোক বা না হোক, এরাই এ তালিকাভুক্ত। যেসব স্বল্প সামর্থ্যরে দরিদ্র মুসলমান যথাসাধ্য চেষ্টা করা সত্তেও বা দৈহিক অক্ষমতাহেতু প্রাত্যহিক ন্যায়সঙ্গত প্রয়োজনটুকু মেটাতে পারে না, তারাই যাকাত পেতে পারেন।

 

২. সেই ব্যক্তি যার কিছুই নেই, যার কাছে একবেলা খাবারও নেই। যেসব লোকের অবস্থা এমন খারাপ যে, পরের কাছে সওয়াল করতে বাধ্য হয়, নিজের পেটের আহারও যারা জোগাতে পারে না, তারা মিসকিন। মিসকিন হলো যার কিছুই নেই। সুতরাং যার কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ অর্থ সম্পদ নেই, তাকে যাকাত দেয়া যাবে এবং সেও নিতে পারবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, ভিক্ষুক বা মিসকিন যাকেই যাকাত দেয়া হবে, সে যেন মুসলমান হয় এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক না হয়।

 

৩. আমেলিন-ইসলামী সরকারের পক্ষে লোকদের কাছ থেকে যাকাত, উসর প্রভৃতি আদায় করে বায়তুল মালে জমা প্রদান, সংরক্ষণ ও বণ্টনের কার্যে নিয়োজিত ব্যক্তিরা। এদের পারিশ্রমিক যাকাতের খাত থেকেই আদায় করা যাবে। কোরআনে বর্ণিত আটটি খাতের মধ্যে এ একটি খাতই এমন, যেখানে সংগৃহীত যাকাতের অর্থ থেকেই পারিশ্রমিক দেয়া হয়। এ খাতের বৈশিষ্ট্য হলো এতে ভিক্ষুক বা মিসকিন হওয়া শর্ত নয়। পক্ষান্তরে, অবশিষ্ট পাঁচটি খাতে দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত দূরীকরণে যাকাত আদায় শর্ত।

 

৪. মুআলস্নাফাতুল কুলুব (চিত্ত জয় করার জন্য) নতুন মুসলিম যার ঈমান এখনো পরিপক্ব হয়নি অথবা ইসলাম গ্রহণ করতে ইচ্ছুক অমুসলিম। যাদের চিত্ত (দ্বীন ইসলামের প্রতি আকর্ষণ করে) আকর্ষণ ও উৎসাহিতকরণ আবশ্যকীয় মনে করে যাকাত দান করা হয়, যাতে তাদের ঈমান পরিপক্ব হয়। এ খাতের আওতায় দুস্থ নওমুসলিম ব্যক্তিদের জাকাত প্রদানের ব্যাপারে ফকিহরা অভিমত প্রদান করেছেন।

 

৫. ক্রীতদাস বা বন্দি মুক্তি এ খাতে ক্রীতদাস-দাসী বা বন্দি মুক্তির জন্য যাকাতের অর্থ ব্যয় করা যাবে। অন্যায়ভাবে কোনো নিঃস্ব ও অসহায় ব্যক্তি বন্দি হলে তাকেও মুক্ত করার জন্য যাকাতের অর্থ ব্যয় করা যাবে।

 

৬. ঋণগ্রস্ত এ ধরনের ব্যক্তিকে তার ঋণ মুক্তির জন্য যাকাত দেয়ার শর্ত হচ্ছে সেই ঋণগ্রস্তের কাছে ঋণ পরিশোধ পরিমাণ সম্পদ না থাকা। আবার কোনো ইমাম এ শর্তারোপও করেছেন, সে ঋণ যেন কোনো অবৈধ কাজের জন্য যেমন মদ কিংবা নাজায়েজ প্রথা অনুষ্ঠান ইত্যাদির জন্য ব্যয় না করে।

 

৭. আল্লাহর পথে সম্বলহীন মুজাহিদের যুদ্ধাস্ত্র বা সরঞ্জাম উপকরণ সংগ্রহ এবং নিঃস্ব ও অসহায় গরিব দ্বীনি শিক্ষারত শিক্ষার্থীকে এ খাত থেকে যাকাত প্রদান করা যাবে।

 

এছাড়া ইসলামের মাহাত্ম্য ও গৌরব প্রচার ও প্রসারের কাজে নিয়োজিত থাকার কারণে যারা জীবিকা অর্জনের অবসর পান না এবং যে আলিমরা দ্বীনি শিক্ষাদানের কাজে ব্যাপৃত থাকায় জীবিকা অর্জনের অবসর পান না। তারা অসচ্ছল হলে সর্বসম্মতভাবে তাদেরও যাকাত দেয়া যাবে।

 

৮. অসহায় মুসাফির যে অর্থ কষ্টে নিপতিত তাদের মৌলিক প্রয়োজন পূরণ হওয়ার মতো এবং বাড়ি ফিরে আসতে পারে এমন পরিমাণ অর্থ যাকাত থেকে প্রদান করা যায়।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version