তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া এখন বিএনপি এবং তার পরিবারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার স্বাস্থ্যের যদি কোনো হানি হয় তাহলে বিএনপি নেতারাই আসামি হবেন।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক মন্তব্য ‘খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারের সবাই আসামি হবে’ এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
বুধবার বিএনপির 'গণতন্ত্র হত্যা দিবস' পালন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপিই গণতন্ত্র হত্যা করতে চেয়েছিল, পারে নাই। তারা ৫০০ ভোট কেন্দ্র আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিল। ৫০০ স্কুলের ভোট কেন্দ্রে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বিতরণের জন্য যেসব বই সংরক্ষিত ছিলো সেগুলোও জ্বালিয়ে দিয়েছিল।
‘ঐ দিন তারা গণতন্ত্র হত্যা করতে চেয়েছিল, যাতে নির্বাচন না হয়। নির্বাচন না হওয়ার মধ্য দিয়ে দেশে একটি গণতন্ত্রহীন পরিবেশ তৈরি হয় এবং অন্যকিছু ঘটে, তারা সেই চেষ্টা করেছিলো কিন্তু সফল হয়নি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি গণতন্ত্র হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত। জিয়াউর রহমান বন্দুকের নল উঁচিয়ে মানুষের লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল, মানুষের লাশের ওপর দিয়েই ক্ষমতায় টিকে ছিল।’
বিএনপির বুধবারের মানববন্ধনসহ বিভিন্ন সমাবেশে নিজেদের মধ্যে মারামারির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মির্জা ফখরুলের মতো মহাসচিবের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক এবং লজ্জাকর যে, তার সামনে নেতাকর্মীদের মারামারি, বাকবিতণ্ডা হয় এবং তা থামানোর জন্য তাকে উচ্চস্বরে চিৎকার করতে হয়।
‘এটি বিএনপির জন্য সত্যিই লজ্জাকর এবং যারা নিজেদের শৃঙ্খলা রাখতে পারে না, একটি সমাবেশের শৃঙ্খলা রাখতে পারে না, সারাদেশে সমাবেশ করতে গিয়ে নিজেরা নিজেরা মারামারি করে, তারা কিভাবে দেশ চালাবার স্বপ্ন দেখে, এটিই হচ্ছে প্রশ্ন।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব-অসত্য রটনার বিষয়ে জবাবদিহিতার বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে স্থায়ী কমিটির সদস্য মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘গতকাল সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ, বিশেষ করে দুর্গাপূজার সময় ফেসবুকের মাধ্যমে গুজব-বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে বিভিন্ন পূজামণ্ডপে হামলা ও হানাহানি সৃষ্টিসহ পূর্বাপর ঘটনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
‘তখন প্রশ্ন এসেছে, কোনো পত্রিকায় ভুল বা অসত্য সংবাদ পরিবেশিত হলে সম্পাদক ও প্রকাশককেও দায়ী করা হয়, দুজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তেমনিভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে যখন গুজব রটনা বা অসত্য বিষয় প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয় সেটির দায়ও তো সেই মাধ্যমের সার্ভিস প্রোভাইডারকে নিতে হবে।
‘সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে আলোচনাক্রমে গতকাল সিদ্ধান্ত আকারে এটি এসেছে যে, সংসদীয় কমিটির আগামী যে কোনো বৈঠকে যোগ দেয়ার জন্য নোটিশ দিয়ে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যাদের এখানে সার্ভিস প্রোভাইডার আছে, তাদেরকে সংসদীয় বৈঠকে ডাকা হবে। এ বিষয়টি তাদেরকে বলা হবে এবং ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।’
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি যে চিঠি গ্রহণ করেছে, সেটি ভালো দিক। আমি আশা করবো বিএনপি সংলাপে অংশগ্রহণ করবে। তাদের ওজর আপত্তি কিংবা সংলাপ প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের যে প্রশ্ন সেগুলো তারা সেখানে বলে আসতে পারেন। তাহলেই সেটি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের আচরণ হবে।’
সূত্র: বাসস
মন্তব্য