বিএনপির বিরুদ্ধে বড় অঙ্কের অর্থপাচারের অভিযোগ উত্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। বৈশ্বিক বেশ কিছু সংস্থার প্রকাশিত তথ্যকে ভিত্তি করে তৈরি এক ভিডিও পোস্ট করে এই দাবি জানান তিনি।
জয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে রোববার রাতে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। কে, কীভাবে, কখন এবং কোথায় অর্থপাচার করেছে বাংলাদেশ থেকে- এমন প্রশ্ন করে জয় বিএনপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, ২০০১-০৬ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপি বড় অঙ্কের অর্থপাচার করেছে।
তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক জিয়া তার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের অ্যাকাউন্টে ২০ কোটি টাকা প্রেরণ করে। এ ঘটনায় এফবিআই এক কর্মকর্তা তারেক জিয়ার অর্থপাচার মামলায় সাক্ষ্য প্রদান করেছে।
জয় বলেন, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান (কোকো) ২০০১-০৬ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে সিঙ্গাপুরে বড় অঙ্কের অর্থপাচার করেছে। তার মাধ্যমে পাচার হওয়া অর্থের মধ্যে থেকে তিন ধাপে ৩০ লাখ সিঙ্গাপুর ডলার ফেরত আনতে সক্ষম হয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তার দুর্নীতির তথ্য এফবিআই ওয়েব সাইটেও রয়েছে বলে মন্তব্য করেন সজীব ওয়াজেদ।
প্যারাডাইজ পেপারেও অসংখ্য বিএনপি নেতার নাম এসেছে একথা উল্লেখ করে জয় বলেন, তাদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করা আব্দুল আওয়াল মিন্টু এবং তার স্ত্রীসহ তিন ছেলের নাম রয়েছে। সজীব ওয়াজেদ বলেন, বিশ্বের যেখানেই দুর্নীতি নিয়ে কোনো তদন্ত হয়েছে সেখানেই বিএনপি নেতাদের নাম উঠে এসেছে।
তিনি বলেন, ফাঁস হওয়া পানামা পেপারস-এ অর্থ পাচার করা ৩৪ বাংলাদেশি ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে একজন বিএনপির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোর্শেদ খান এবং তার ছেলে ফাইসাল মোর্শেদ খান। তারা ৪ কোটি মার্কিন ডলার এবং এক কোটি হংকং ডলার পাচার করেছে হংকং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে।
শ্রীলঙ্কার আমানা ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে এই ফাইসাল মোর্শেদের অধীনে একাধিক নামের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেখানে এবি ব্যাংকের ১৮ কোটি শেয়ার রয়েছে। বিদেশে এভাবেই হাজার হাজার কোটি টাকা সংরক্ষণ করেছে ফাইসাল মোর্শেদ। সে বিভিন্ন বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে বিদেশে অর্থপাচার করেছে যা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দুর্নীতি বিরোধী প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সজীব ওয়াজেদ বলেন, এই বৈশ্বিক অনুসন্ধানকারীদের আসলে কে ক্ষমতায় আছে তাতে কিছু যায় আসে না। তারা আওয়ামী লীগ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একই রকম দুর্নীতির তথ্য পেলে এভাবেই প্রচার করবে। কিন্তু তেমন কিছু তারা করেনি।
স¤প্রতি সময়ে প্যান্ডোরা পেপারস ফাঁস হওয়ার পর সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে ১ দশমিক ২ কোটির বেশি গোপন নথি সেখানে রয়েছে। কিন্তু পানামা পেপারস বা প্যান্ডোরা পেপারস কোনোটিতেই দুর্নীতি অনুসন্ধানে আওয়ামী লীগের শীর্ষ কোনো নেতৃত্বের নাম উঠে আসেনি।
কিন্তু প্রতিটি পেপারসে মিলেছে বিএনপি নেতাদের নাম। বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ভেবে দেখার মতো বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
মন্তব্য