জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, নির্বাচন এখন প্রহসন হয়ে গেছে। নির্বাচনের প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলছে।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দলের চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের তিন ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, সরকারি দলের নেতারা বলে বেড়ান নারায়ণগঞ্জে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। কিন্তু সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদের ভোট কেমন হয়েছে- তা বলতে চান না। বিয়য়টি এমন হয়েছে, সরকার চাইলে ভোট সুষ্ঠু হবে, আর না চাইলে হবে না- এটা হতে পারে না। নির্বাচনে কার সঙ্গে জোট হবে তা নির্বাচনের সময় দেখা যাবে।
এ সময় দলকে আরো শক্তিশালী করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেন তিনি।
দেশের মানুষ আর আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে বিশ্বাস করে না মন্তব্য করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ১৯৯১ সালের পর দল দুটি বারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে সুবিধামতো সংবিধান কাটাকাটি করে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। এখন কেউ গণতন্ত্রের কথা বললে মানুষ প্রতারণা মনে করে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ১৯৯১ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার পর বিএনপি এসে দেশের আরো ক্ষতি করেছে। বিএনপির পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে রাজনৈতিক অবস্থা আরো খারাপ করেছে। এভাবেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় গিয়ে গণতন্ত্র ধংস করেছে। এ কারণেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থায় অনেকটাই গণতন্ত্র ছিল। কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে যা চলছে তাকে কোনোভাবেই গণতন্ত্র বলা যায় না। এখন কতৃত্ববাদী শাসনে দেশের মানুষ অতিষ্ঠ।
এখন কিছু মানুষ দ্রুত ধনী থেকে আরো ধনী হচ্ছে উল্লেখ করে জিএম কাদের বলেন, দেশের বেশিরভাগ মানুষই প্রতিদিন আরো গরীব হচ্ছে। এমন বাস্তবতায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই এখন আর নৌকায় ভোট দেয় না। আবার বিএনপির রাজনীতি অনেকটাই অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। তাই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মর্যাদাসম্পন্ন নেতাকর্মীরাই এখন দলে দলে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিচ্ছে। অনেকেই যোগাযোগ রাখছে, তারাও জাতীয় পার্টিতে যোগ দেবে।
দেশের মানুষ এখন জাতীয় পার্টির দিকে তাকিয়ে আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা জাতীয় পার্টিকে আবারো রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায়।
জিএম কাদের বলেন, দুটি দলের সর্বোচ্চ অপপ্রচারও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দেশের মানুষের অন্তর থেকে মুছে ফেলতে পারেনি। তিনি এখনো গণমানুষের হৃদয়ে চিরঞ্জীব হয়ে আছেন। যারা ঈর্ষা করে পল্লীবন্ধুকে গালাগাল দিচ্ছে, অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা কখনোই সফল হবে না।
সভায় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, দলে আরো গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় মানুষ যোগ দেবে। আাগমী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সঙ্গে। দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণের রাজনীতি নিয়ে জাতীয় পার্টি গণমানুষের আস্থা অর্জন করবে।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি বলেন, আগামী দিনের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রমাণ হয়েছে, শুধু জাতীয় পার্টিই দেশের মানুষের কষ্টের কথা বোঝে। তাই দেশের মানুষ জাতীয় পার্টির সঙ্গেই আছে। উজ্জ্বল ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে চলছে জাতীয় পার্টি।
মন্তব্য