-->

৯ বছর পর হচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের কমিটি

রুবেল খান, চট্টগ্রাম
৯ বছর পর হচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের কমিটি
যুবলীগের লোগো

অবশেষে ৯ বছর পর নতুন কমিটি হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের। সাংগঠনিক কার্যক্রম আরো গতিশীল ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় যুবলীগের পক্ষ থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের কমিটিও গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ তিন সাংগঠনিক জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের আগামী ২ থেকে ৫ এপ্রিলের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের দপ্তরে জীবন বৃত্তান্ত, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও সর্বশেষ শিক্ষা সনদের ফটোকপি জমা দিতে বলা হয়েছে। গত ২৬ মার্চ বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল, যুবলীগ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা এবং চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রম আরো গতিশীল ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে উল্লেখিত জেলাগুলোয় শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ-প্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্ত আহ্বান করেছেন।

আগামী ২ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, যুবলীগের প্রধান কার্যালয়, দপ্তর শাখায় জীবন বৃত্তান্ত জমা নেওয়া হবে। সেইসঙ্গে জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ও সর্বশেষ শিক্ষা সনদের ফটোকপি সংযুক্ত করতে হবে। এ চিঠি আসার পর চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের শীর্ষ পদ-প্রত্যাশীদের মধ্যে চাঙা ভাব বিরাজ করছে। খুব শিগগির নতুন কমিটির হওয়ার ব্যাপারে তারা আশাবাদী হয়ে উঠেছেন। ইতোমধ্যে তাদের অনেকেই জীবন বৃত্তান্ত জমা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। তাদের অনেকেই আবার কেন্দ্রীয় যুবলীগের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করাও শুরু করে দিয়েছেন। নতুন কমিটি গঠনের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উচ্ছ্বাস।

প্রসঙ্গত, সাবেক মেয়র মরহুম এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী গ্রুপ ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন গ্রুপের কোন্দলের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই স্থবির রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের রাজনীতি। এ কোন্দলের কারণে ৯ বছর পরও পূর্ণতা পায়নি চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের ১০১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি। ওই আহ্বায়ক কমিটিকে ৯০ দিনের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় যুবলীগের সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পদ-পদবি নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে কোন্দল এতটাই চরম পর্যায়ে গিয়েছিল, বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কায় এখন পর্যন্ত সম্মেলনের আয়োজন করা যায়নি। দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সম্মেলন না হওয়ায় এতদিন হতাশা বিরাজ করছিল তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে।

বন্দর নগরী চট্টগ্রামে সর্বশেষ যুবলীগের সম্মেলন হয়েছে ১৮ বছর আগে ২০০৪ সালের অক্টোবরে। ওই সম্মেলনের পর যুবলীগ নেতা চন্দন ধরকে সভাপতি ও মশিউর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করে কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ২০০৪ সালের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১৩ জুলাই চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের ১০১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয় কেন্দ্র থেকে। এ কমিটির আহ্বায়ক করা হয় সাবেক মেয়র মরহুম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী মহিউদ্দিন বাচ্চুকে। এছাড়া চারজনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। তারা হলেন- দেলোয়ার হোসেন খোকা, ফরিদ মাহমুদ, মাহাবুবুল হক সুমন ও দিদারুল আলম। সাবেক মেয়র মহিউদ্দীন চৌধুরীর অনুসারীর নেতারাই মূলত স্থান পান ১০১ সদস্যের ওই কমিটিতে। তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের মধ্যে মাত্র সাতজন স্থান পান ওই কমিটিতে। এ কারণে ওই আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর চট্টগ্রাম মহানগরীতে যুবলীগের কোন্দল চরম আকার ধারণ করে।

মন্তব্য

Beta version