আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিএনপি নেতাদের কটূক্তির প্রতিবাদে ঢাকাসহ সারাদেশে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ক্ষমতাসীন দল ও সহযোগী সংগঠনগুলো।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার রাজধানীর একাধিক স্থানে সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগ অনুকম্পা দেখাচ্ছে বলে বিএনপি টিকে রয়েছে, এমন মন্তব্য করেছেন।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপি হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। শেখ হাসিনা মহানুভবতা দেখিয়েছেন বলেই পৃথিবীর একমাত্র বন্দি হিসেবে খালেদা জিয়া জেলখানায় কাজের লোক রেখে আরাম আয়েশে থাকতে পেরেছেন।
বিরোধী দলে থাকতে আমরা (আওয়ামী লীগ) অনুকম্পা চাইনি, আমরা অনুকম্পা দেখাচ্ছি বলে বিএনপি টিকে রয়েছে। অপরদিকে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করে মাঠে ছিলাম।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রসঙ্গে মতিয়া চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা গৃহহীনদের লাল-সবুজের ঘর উপহার দিচ্ছেন।
কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ২০টি ওষুধ ফ্রি পাচ্ছেন। শেখ হাসিনা তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করে চলেছেন বলেই বাংলার কৃষক ও মেহনতি মানুষ ভোট দিয়ে বারবার নির্বাচিত করছে। বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্রের সভাপতিত্বে দলের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, বাংলাদেশ কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এদিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, আবার সন্ত্রাসের পথে হাঁটলে বিএনপিকে কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে বিএনপি। দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে তারা। বিএনপি আবারো সন্ত্রাসের পথে হাঁটলে কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বিএনপি জামায়াত সন্ত্রাসীদের কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য, হত্যার হুমকি ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে’-এই সভার আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ।
বিএনপি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসী দল উল্লেখ করে কামরুল ইসলাম বলেন, আবার সন্ত্রাসের পথে হাঁটলে বিএনপিকে কোনোভাবেই ছাড় দেয়া হবে না।
আগামী জাতীয় নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে বিতাড়িত করতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বলেন, ‘বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা খুনি জিয়াউর রহমান একাত্তরের ঘাতকদের সঙ্গে আঁতাত করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তির মদদে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
সেদিন হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক ছিলো জিয়াউর রহমান। এখন তাদের উত্তরসুরিরা আজকে স্লোগান দিচ্ছে পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার।
যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, যারা জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে, তাদের উত্তরসুরিরাই দিচ্ছে এই ধরনের স্লোগান।
সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে।’অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, একাত্তরের খুনি, পঁচাত্তরের খুনি ও ২১ আগস্টের খুনি-এরা এখন অভিন্ন শক্তি।
এই খুনিদের বাংলাদেশের রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। তারা এখন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর জন্য উস্কানিমুলক বক্তব্য দেয়, উস্কানিমুলক কথাবার্তা বলে।তিনি বলেন, আজকে যখন বাংলাদেশে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, তখন তারা শেখ হাসিনাকে হত্যার কথা বলছে।
কি তাদের উদ্দেশ্য, কি তাদের লক্ষ্য? তাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য একটাই, দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের উন্নয়নের বিপক্ষে দাড়ানো।
তারা দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির বিরুদ্ধে।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি কামরুল হাসান রিপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, সাধারণ সম্পাদক একেএম আফজালুর রহমান বাবু প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক তারিক সাঈদ।
বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
মন্তব্য