দেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে একসঙ্গে কাজ করতে ঐকমত্য হয়েছে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চ। এদিকে ক্ষমতা থেকে আওয়ামী লীগ সরকারকে সরাতে আন্দোলন ও পরবর্তী কার্যক্রমের রূপরেখা ঠিক করতে একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বেলা ১১টা ৪০ মিনিট থেকে দুই ঘণ্টার অধিক সময় এ বৈঠক হয়। বৈঠকে গণতন্ত্র মঞ্চের প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে জেএসডির আ স ম আবদুর রব ও শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না ও শহীদুল্লাহ কায়সার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক ও আকবর খান, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি ও আবুল হাসান রুবেল, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ফারুক হাসান, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু ও হাবিবুর রহমান রিজু এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের ইমরান ইমন ও সৈয়দ হাসিব উদ্দিন হোসেন প্রমুখ অংশ নেন। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
জেএসডি, নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদ ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন- এই সাতটি দল নিয়ে গত ৮ আগস্ট গণতন্ত্র মঞ্চ আত্মপ্রকাশ করে। এই মঞ্চ নেতারা বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছে। সরকার পতনের আন্দোলনের দাবিনামা চূড়ান্ত করতে গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে এই প্রথম সংলাপে বসল বিএনপি।
‘লিয়াজোঁ কমিটি গঠন হবে’ : পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ সরকারের পতন ঘটাতে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে প্রচণ্ড রকমের একটা আগ্রহ-উদ্যম সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণেই বিষয়টি ত্বরান্বিত করতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে আমরা একটা লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করব। এই কমিটির মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য, আমাদের দফাগুলো, আমাদের কর্মসূচি, রূপরেখা সবগুলো থাকবে। এ ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি।
তিনি বলেন, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে একটা গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করতে আমরা একযোগে যুগপৎ আন্দোলন করব- এ ব্যাপারে বৈঠকে আমরা একমত হয়েছি। ইতোমধ্যে এ কাজ আমরা শুরু করেছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা রাষ্ট্রের পরিবর্তনের যে কথা বলেছি, সেই পরিবর্তনগুলো আরো বিস্তারিত আলোচনা করে আশা করি একমত হতে পারব। আমরা এই বিষয়টাকে দ্রুত করার জন্য পরবর্তী সময়ে আরো আলোচনায় বসব এবং শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাব বলে আমরা নিশ্চিত।
বৈঠকের পর সাবেক মন্ত্রী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য আজকের এ দিনটি একটি ঐতিহাসিক দিন। সারা পৃথিবীর কাছে আজকে একটি বার্তা যাবে যে, রাতের অন্ধকারে যারা ভোট চুরি করেছে, অনৈতিক ও অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছে, তাদের বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের সৃষ্টির মাধ্যমে সরানোর জন্য রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি, আজকে (মঙ্গলবার) থেকেই আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে যুগপৎভাবে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলব। আমরা আন্দোলনে আছি, সেই আন্দোলনে থাকব।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা কেউ এ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে যাব না।
ভোরের আকাশ/আসা
মন্তব্য