-->

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান চাই : ফখরুল

অজয় ঘোষ, রাজশাহী
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান চাই : ফখরুল

অজয় ঘোষ, রাজশাহী: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ এখন আর রাজনৈতিক দল নেই। আপনারা আমার চেয়ে ভালো জানেন নিজেরা লুট করে করে পাহাড় গড়ে তুলছে আর সাধারণ মানুষকে গরিব থেকে গরিব করছে। এই আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে ১৭৩ দিন হরতাল করেছিল।

 

শনিবার দুপুরে রাজশাহী মাদরাসা মাঠে রাজশাহী বিভাগীয় বিএনপির আয়োজনে ‘চাল, ডাল, জ্বালানি তেল, গ্যাস-বিদ্যুৎ, সারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, দুর্নীতি-দুঃশাসন, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পাঁচটা নির্বাচন হয়ে গেল। সবাই খুশি ছিল যে, অন্তত নিজের ভোট নিজে দিতে পারব। তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থায় মানুষ তার ভোট নিজে দিতে পারবে। যাকে খুশি তাকে দিতে পারবে। এরা ক্ষমতায় আসার পরে কী করল- সে ব্যবস্থা পাল্টে দিল। কেন? তারা কিছুদিন পরে টের পেল যে, জনগণ তো তাদের পছন্দ করছে না। তারা তো জনগণের সঙ্গে ভালোভাবে মিশতে পারছে না। জনগণের টাকা তারা লুট করে নিচ্ছে, জনগণ তাদের ধিক্কার দিচ্ছে। তখন তারা সেটাকে বদল করে দিয়ে আবার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা এ কথা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছি, আমরা আবার সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান চাই। আবার নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। অযথা এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। খুব ঢোল পেটাচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব।

 

তিনি বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। ইচ্ছামতো তোমাদের ক্ষমতায় রাখার জন্য একদলীয় শাসন ব্যবস্থাকে একটা গণতন্ত্রের লেবাস দিয়ে রাখার জন্য তোমরা বারবার চেষ্টা করেছ। যে সংবিধানে তোমরা তিনটা অনুচ্ছেদ রেখেছ।

 

দুপুরে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও রাতেই নেতাকর্মীরা মাঠে চলে আসায় সকালে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ মঞ্চে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য দুটি চেয়ার ফাঁকা রাখা হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশার সভাপতিত্বে সমাবেশের শুরুতে স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন। তার আগে ইথুন বাবুর নেতৃত্বে দলের শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করে কর্মী-সমর্থকদের উজ্জীবিত করেন।

 

গত ১ ডিসেম্বর থেকে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় পরিবহন ধর্মঘট চলছে। ফলে সমাবেশে যোগ দিতে বিভিন্ন জেলার হাজার হাজার নেতাকর্মী তিন দিন আগেই রাজশাহীতে সমবেত হন। পুলিশি নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা সভাস্থল মাদরাসা ময়দানে ঢুকতে না পারলেও অবস্থান নেন পাশের ঈদগাহ মাঠে। সব বাধা উপেক্ষা করে জনসভায় যোগ দেয়ায় নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।

 

রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ সঞ্চালনা করেছেন। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা। প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সেলিমা রহমান, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দীন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিনু, সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, রাজশাহীর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য জি এম সিরাজ, অ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফাসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় শীর্ষ নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেন।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version