শান্তিপূর্ণভাবে ঢাকায় বিএনপির গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি কাকরাইল মোড়, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক হয়ে মগবাজার গিয়ে শেষ হয় বিকেল ৫টার পর। এদিকে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে যোগ দেয়া জামায়াত ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোটসহ দলগুলোও একই সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গণমিছিল করেছে।
মিছিল শুরুর আগে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর-উত্তম, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত ও গণমিছিল বাস্তবায়নের প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্বে রয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। পূর্ব ঘোষিত এ মিছিলকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা। ফকিরাপুল মোড় থেকে কাকরাইল ও শান্তিনগর মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে অবস্থান নেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। আগেই নির্ধারণ করে দেয়া মূল দলের পাশাপাশি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ১৩টি পয়েন্ট থেকে এ মিছিলে অংশ নেন।
বিকেল সাড়ে ৩টায় নয়াপল্টন থেকে এ গণমিছিল শুরু হয়। মিছিল শুরুর পর সাময়িকভাবে নয়াপল্টনের দুই দিকের রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। স্বতঃস্ফূর্ত নেতাকর্মীদের অংশ গ্রহণে মিছিলটি কাকরাইল মোড়, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক ও মগবাজার গিয়ে শেষ হয়। এদিকে বিএনপির এ কর্মসূচিকে যুগপৎভাবে পালন করেছে দলটির সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেয়া দলগুলো। জামায়াতে ইসলামী গণমিছিল করেছে রাজধানীর কয়েকটি পয়েন্ট। জুমার নামাজের পর জামায়াত নেতাকর্মীরা রামপুরা থেকে মিছিল বের করে। এর আগে বায়তুল মোকাররম এলাকায় ও মৌচাকে মিছিলে চেষ্টা করলে পুলিশ দলটির নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। আটক করা হয় কয়েকজনকে।
গণতন্ত্র মঞ্চও একই সময়ে এ গণমিছিল কর্মসূচি পালন করে। মিছিলটি পুরানা পল্টন থেকে শুরু বিজয়নগর হয়ে কাকরাইল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা সাইফুল হক, জোনায়েদ সাকি, শহীদুল্লাহ কায়সার, রাশেদ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। গতকাল বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগর মোড় থেকে গণমিছিল শুরু করে সরকার ২০ দলীয় জোট ভেঙে গঠন করা ১২ দলীয় জোট।
জোটটির সরকার পতনসহ ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি গণমিছিলটি শেষ হয় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে। জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার কল্যাণ পার্টির সভাপতি সমাবেশে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহীম বীরপ্রতীকসহ এনডিপির চেয়ারম্যান ক্বারী মোহাম্মদ আবু তাহের, মুসলিম লীগের মহাসচিব জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ ইকরাম, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম ও বাংলাদেশ ইসলামী পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম মিছিলে অংশ নেন। গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গোলাপবাগ মাঠে বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে ১০ দফা ঘোষণা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ২৪ ডিসেম্বর একযোগে সারা দেশে বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে গণমিছিল কর্মসূচি পালনের কথা ছিল। কিন্তু ওইদিন ঢাকায় আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন থাকায় ঢাকায় এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারণে রংপুর মহানগরের কর্মসূচি পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়।
মন্তব্য