-->

৫ সিটি ভোটে নাশকতা দেখছে না ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
৫ সিটি ভোটে নাশকতা দেখছে না ইসি

পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৈঠকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ইসির পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্টদের কাছে সার্বিক সহযোগিতা দেয়ার জন্য আহব্বান জানানো হয়েছে।

 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতার কথাও বলা হয়েছে।বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে এ বৈঠকত অনুষ্ঠিত হয়।

 

বৈঠক শেষে ইসব সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, মাঠ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পর্যবেক্ষণ দিয়েছে, পাঁচ সিটি নির্বাচন নিয়ে নাশকতা বা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির এখন পর্যন্ত কোনো শঙ্কা নেই। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি যদি নির্বাচনের আইনকানুনের পরিপন্থি কোনো কাজ করে, সেক্ষেত্রে ইসি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানায়।

 

গাইবান্ধা নির্বাচনে যাদের বিরুদ্ধে তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এখনো যাদের বিষয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, তাদের বিষয়টা ত্বরান্বিত করতে বলা হয়েছে।

 

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বৈঠকেও বলা হয়েছে, যদি কেউ নির্বাচনের আইনের পরিপন্থি কোনো কাজ করে, তিনি যে বাহিনীর হোক কিংবা যে ব্যক্তিই হোক, তাকে আইনের আওতায় আনতে ইসি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

 

সুতরাং সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে কমিশনের পক্ষ থেকে সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। সবাই এ বিষয়ে সবাই ইসিকে আশ্বস্থ করেছেন, যে যার অবস্থান থেকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য তাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন।

 

এর আগে ৫ সিটি নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ইসির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশের মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

 

তিনি এ সময় তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় পুলিশ বাহিনী নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে থাকবে। ইসি যে নির্দেশনা দেবে সে অনুযায়ী কাজ করব। নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের যে নির্দেশনা দিয়েছে উল্লেখ করে বলেন সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে ইসি সবার কাছ থেকে তথ্য নিয়েছে। সহযোগিতা চেয়েছে। সহযোগিতা দেয়ার বিষয়ে ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের আশ্বাস দিয়েছি।

 

পাঁচ সিটিতে সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নিশ্চিতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। প্রয়োজনে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যখন যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার, তখন সে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

 

স্থানীয় প্রার্থীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পুলিশ পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করে এমন অভিযোগের বিষয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, আমি এমনটি মনে করি না। আইনানুযায়ী আমাদের যে দায়িত্ব, দীর্ঘদিন ধরে আমরা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি এবং অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে যে দায়িত্ব পালন করা দরকার, আমরা বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য দায়িত্ব পালন করছি।

 

তিনি বলেন, পাঁচ সিটি ভোটে বৈঠকে আমরা গোয়েন্দা সংস্থার কথাবার্তা শুনেছি, ওইরকম কোনো কথা কেউ বলেননি। আমরা আশা করছি, একটা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওইরকম কোনো শঙ্কা আমরা দেখছি না। তবে যেকোনো ধরনের পরিস্থির জন্য সেটা বিবেচনায় রেখে আমরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সব ব্যবস্থা নেব। প্রত্যেকটা বিষয় গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিই।

 

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জঙ্গি যা কিছু আছে সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। ভোটাররা নিঃসন্দেহে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্য নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, র‌্যাব, বিজিবি ও আনসারের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

 

ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন, ১২ জুন খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশন এবং ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এসব নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে এবং ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরাও থাকবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে। সার্বিক আগে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতেই মূলত ইসির পক্ষ থেকে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version