পূজার সময় যাতে আইনশৃঙ্খলার বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজর রাখবে বলে জানিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১২তম সভা শেষে তিনি এ কথা জানান।
মোজাম্মেল হক বলেন, পূজা আসন্ন, সে সময় যাতে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন না হয়, নির্বিঘ্নে যাতে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করতে পারেন; সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজর রাখবে। সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছি। এটি নিশ্চিত করতে ডিসি-ইউএনওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আমাদের বড় সমস্যা হচ্ছে সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ। বিশ্বের তুলনায় আমরা ভালো অবস্থায় আছি। মুসলিম অধ্যুষিত অন্যান্য দেশে যেভাবে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেই জঙ্গিবাদকে পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। হলি আর্টিজানের ঘটনার পর এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। ভবিষ্যতেও যাতে না ঘটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর আছে। জনগণও চায় না এমন ঘটনা আর ঘটুক।
তিনি বলেন, এখন নির্বাচনের সময়, পত্রপত্রিকায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে বাইরে থেকে অস্ত্র আসতে পারে। সেজন্য আমরা বিজিবিসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছি, হুন্ডি ব্যবসার কারণে দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। এ ব্যবসাকে বন্ধ করার জন্য আরও তৎপর হওয়া এবং কীভাবে বন্ধ করা যায় সে বিষয়ে আমরা বলেছি। জুয়ার মাধ্যমে বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে। পত্রপত্রিকায় যেসব তথ্য এসেছে সেই আলোকে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, অল্পসংখ্যক এনজিও আছে যারা এ দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য এলার্মিং। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় তাদের যে কর্মকাণ্ড সেটি খুব উদ্বেগের বিষয়। রোহিঙ্গাদের কিন্তু মিয়ানমার নিতে আগ্রহী ছিল, আমরাও পাঠাতে রাজি হয়েছি। বিদেশিরাও কিছুটা কনভেন্স করেছে। যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, কিছু এনজিও আছে তারা নিরুৎসাহিত করছে, গুজব রটায় যে সেখানে গেলে নিগৃহীত হবে, আবার নির্যাতন করা হবে। এই অপপ্রচারের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হচ্ছে। গুজব রটনাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বিদেশে থেকে সাইবার ক্রাইম বন্ধ করতে পারছি না। মিথ্যাচার ও গুজব রটানো হচ্ছে। এনটিএমসিকে আরও সক্রিয় হয়ে গুজবের পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। সত্যি ঘটনা তুলে ধরে প্রচার করার জন্য বলা হয়েছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি নিয়ে রাজনৈতিক দল বুঝবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব না কোনো দলকে নিয়ন্ত্রণ করা। তাদের দায়িত্ব জনগণের সব কিছু যাতে স্বাভাবিক হয় সেটি দেখা।
তিনি বলেন, সংবিধান অনুসারে সাধারণ নির্বাচন আসন্ন। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে টেনটেটিভ সময় ঘোষণা করেছে যে, নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে তারা ইলেকশনের শিডিউল ঘোষণা করবে। এরপর সরকার নতুন কোনো পরিকল্পনা নিতে পারবে না, শুধু রুটিন ওয়ার্ক করে যাবে। অন্তবর্তীকালীন সরকার হিসেবে কাজ করে।
নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে সব কিছু থাকে। নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনকে পূর্ণ সহায়তা করবে, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে যা যা করার তা পালন করবে। ভোটের পরিবেশ যাতে সুষ্ঠু থাকে সেটি নিশ্চিত করার জন্য সচেতন থাকবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া। তারা জনগণের জন্য, কোনো দলের জন্য না। তারা সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য