-->
শিরোনাম

নির্বাচনে ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী অনুমোদন দলের কৌশল : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নির্বাচনে ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী অনুমোদন দলের কৌশল : কাদের

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টিকে দলীয় কৌশল বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সোমবার শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলন দিবসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডা. মিলন চত্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

 

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়েছে রোববার। দুটি আসন ফাঁকা রেখে ২৯৮ আসনে প্রার্থী দিয়েছে তারা। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছিল তিন হাজার ৩৫৬টি। যারা মনোনয়ন পাননি তাদেরও সুযোগ থাকছে প্রতিদ্বন্দ্বিতার। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়া ঠেকাতে ‘ডামি’ প্রার্থী রাখার পরামর্শ দিয়েছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘স্বতন্ত্র’ প্রার্থী অনুমোদনের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের স্ট্র্যাটেজি ঠিক করে দলের অবস্থান অনুযায়ী ভবিষ্যৎ মাথায় রেখে দলীয় নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন এবং সিদ্ধান্ত দেন। নতুন নতুন সময়ে নতুন নতুন স্ট্র্যাটেজিও দলকে গ্রহণ করতে হয়। এসময় যে কৌশল দরকার আমাদের, আমাদের নেত্রী সেই কৌশলই ঠিক করেছেন এবং গতকাল তার বক্তব্যে প্রকাশ করেছেন।

 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েও পরপর দুদিন চেষ্টা করেও বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কাজেই এ নির্বাচনের ব্যাপারে আগ্রহ কতটা, সেটা এখানেই পরিষ্কার হয়ে যায়। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গী খোঁজার দরকার নেই। আওয়ামী লীগের সঙ্গী বাংলাদেশের জনগণ, জনগণই আমাদের সঙ্গী জনগণই আমাদের বন্ধু। জনগণই আমাদের শক্তির উৎস।

 

‘বিএনপি দুষ্কর্মের বন্ধু খুঁজে বেড়ায়। তারা যেটা করছে এখন তারা রাজনৈতিক আন্দোলনের ব্যর্থ হয়ে চোরাগোপ্তা, অলিগলি খুঁজে বেড়াচ্ছে। নাশকতা করে নির্বাচন পণ্ড করতে চাইছে। তাদের স্বপ্ন দুঃস্বপ্নই রয়ে যাবে।’ ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, সারা বাংলায় আজ জনগণের যে জাগরণ, নির্বাচনের পক্ষে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে, মনোনয়ন ঘোষণার পর সারা বাংলায় উপচে পড়া ঢল। আমি বিশ্বাস করি ভোটার টার্নওভারও খুব ভালো হবে। বিচ্ছিন্ন বোমাবাজি, অগ্নিসন্ত্রাস করে নির্বাচনের পক্ষে যে গণজোয়ার তা রুখতে পারবে না। তাদের সব স্বপ্ন এখানেও ব্যর্থ হবে। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ২৫ থেকে ৩০টি দল নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে। বিএনপি পার্টি হিসেবে অংশ না নিলেও, দলটির অনেক প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কার সঙ্গে কি এডজাস্টমেন্ট হবে, কাকে কত সেট দেবো, আমরা কীভাবে জোট করব, জোটটা নির্বাচনের স্বার্থে কোন পথে সুবিধাজনক, অনেক কিছু আমাদের ভাবতে হবে। নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম জমা এবং প্রত্যাহারেও সময় আছে। তিনি বলেন, বিরোধীরাই সহিংসতা করছে। চোরাগুপ্তা হামলা করছে। সরকারি দল দেশের শান্তির জন্য নির্বাচনকে বেছে নিয়েছে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন দরকার, আমরা নির্বাচন চাই। আমরা কেন শান্তিপূর্ণ জায়গাটাকে ডিস্টার্ব করবো। কেন সহিংস পরিবেশ চাইব?

 

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছি। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশে নির্বাচন হয়, একসঙ্গে সবার মনোনয়ন কে ঘোষণা করেছে? আপনারা প্রতিবেশী দেশগুলোর থেকে একটু জানুন। আমরা মাত্র দুইটা বাকি রেখেছি। সেটা আমাদের টেকনিক্যাল বিষয় থাকতে পারে। কৌশলগত বিষয় থাকতে পারে। সে কারণে আমরা দুইটা প্রকাশ করিনি। কৌশলগত দিক থেকে এখানে কোনো ত্রুটি হয়নি। বর্তমান ৭১ এমপি বাদের প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, সংখ্যাটা বড় কিংবা ছোট, সেটা আমাদের দলের মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্ত। আমরা কাকে বাদ দেবো, কাকে রাখবো বোর্ডের সিদ্ধান্ত। আমাদের একটাই কথা, উইনেবল এবং ইলেক্টেবল যে প্রার্থী তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। সেই বিচারে যারা এসেছে তারা মনোনয়ন পেয়েছে। যারা আসেনি, ধরে নিতে পারেন তারা পায়নি। আমাদের ক্যাটাগরির মধ্যে যারা পড়েনি তাদের দেওয়া হয়নি।

 

নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, কেউ অংশ নিলে নির্বাচন ফেয়ার, অংশ না নিলেই নির্বাচনের বৈধ নয়, অংশগ্রহণমূলক নয়, এই কথা দিয়ে কী জাস্টিফাই করবে।

 

আমারও তো জানি, ২৫ থেকে ৩০টি দল নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে। বিএনপি পার্টি হিসেবে অংশ না নিলেও, বিএনপির অনেক প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সব শেষ হওয়ার আগে এ প্রশ্নের ব্যাপারে কিছু না বলাই ভালো। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উৎসাহী করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর রেওয়াজ আছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন করতে পারে। সেটা করবে। দলীয় নেতা কর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করলে শাস্তির কোন ব্যবস্থা রয়েছে কি না —এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলীয় নেতাদের ব্যাপারে এখনো সুনির্দিষ্ট কিছু বলা হয়নি। এটা আমাদের আরো কিছু বিষয় নিয়ে ভাবনা-চিন্তার ব্যাপার আছে। আমাদের শরিক কারা হবে, যদি আমরা শরিকদের নিয়ে নির্বাচন করি, অথবা অপজিশন কে হয়, সবকিছু বিবেচনা করে, আমাদের ভোটারের উপস্থিতি বিষয়টা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত হবে। গতকালকে ঘোষণার পরপরই সারা বাংলাদেশে উৎসব, মিছিল হচ্ছে, মনে হচ্ছে না সেখানে আওয়ামী লীগ আছে, বিরোধী দল নেই। পরিবেশটা একদম নির্বাচনের অনুকূলে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে যে রূপ সেই রূপই দেখা যাচ্ছে। ডামি প্রার্থীর প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে কথাটা বলেছেন সেই বিষয়টা কেস টু কেস হতে পারে।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version