আ.লীগ মনোনীত প্রার্থী বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, নৌকা প্রতীক নিয়ে এবার নির্বাচনী লড়াইয়ে রয়েছেন। এর আগেও তিনি এ আসনে পরপর তিন বারের এমপি ও প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। এবার তিনি নির্বাচিত হলে টানা চতুর্থবার এমপি হবেন।
অন্যদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকে চ্যালেঞ্জ করে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মনোনয়নবঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারউজ্জামান। আরেকজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সতন্ত্র প্রার্থী আমজাদ হোসেন স্বপন।
এ কারণে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীরাই এখন তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। ফলে দ্বিমুখী চাপে রয়েছেন নৌকার প্রার্থী। আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে নির্বাচনী পথসভা, গণসংযোগে পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে মাঠ ততই গরম হয়ে উঠছে।
এ আসনে আ’লীগের মনোনয়ন দেয়া হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক জাতীয় বীর শহীদ ময়েজউদ্দিনের মেয়ে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকিকে। এ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারউজ্জামান ‘ট্রাক’ প্রতীক নিয়ে মেহের আফরোজ চুমকির ‘নৌকা’ প্রতীকের বিপরিতে নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গাজীপুর-৫ আসনটি রাজধানী ঢাকার খুবই সন্নিকটে। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা, গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের তিনটি ওয়ার্ড নিয়ে গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ) সংসদীয় আসন গঠিত।
এ আসনে আটজন প্রার্থী প্রতিযোগিতা করলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে তিন প্রার্থীর মধ্যে। এই তিনজনই জয়ের জন্য সমানতালে তাদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা তিনজনই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
এ আসনে মুসলিম ভোটারদের পাশাপাশি নাগরী, তুমলিয়া, পূবাইল ও বাড়িয়া ইউনিয়নে প্রচুর খ্রিস্টান ও হিন্দু ভোটারও রয়েছেন। তাই এ আসনটিতে কর্মীবান্ধব ও এলাকার উন্নয়নে যিনি সবচেয়ে বেশি অবদান রাখবেন তার পক্ষেই সাধারণ ভোটারা রায় দিবেন বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেন।
আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী ও প্রার্থীদের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা রাত-দিন নিজ নিজ প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ভোটারদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। আগামীতে কালীগঞ্জের উন্নয়নে প্রার্থীরা কি ভূমিকা রাখবেন তারা সে সব প্রতিশ্রুতি পৌঁছে দিচ্ছেন ভোটারদের কাছে।
সরেজমিন ও বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ (ট্রাক প্রতীক) প্রতিদ্বন্ধী হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী ঢাকসুর সাবেক ভিপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতারউজ্জামান। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল প্রতীক) আমজাদ হোসেন স্বপন নির্বাচনী মাঠে এই দু’জনেরই রয়েছে শক্ত অবস্থান। সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সাথে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছেন সাবেক এমপি আখতারউজ্জামান।
ইতোমধ্যে ইউনিয়নের বেশ কিছু স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ আখতারউজ্জামানের সাথে জোট বেধে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। তাই ভোটের সমীকরণ পাল্টে দিতে পারেন তারা। মূলত এখানে আওয়ামী লীগের সাথে লড়াই হবে আওয়ামী লীগের।
এদিকে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মীরা জানান, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। দল এবার নির্বাচনকে উৎসবমুখর ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে।
বিভিন্ন উঠান বৈঠকে আখতারউজ্জামান জানান, গাজীপুর-৫ আসনের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে আমি একজন পরিচিত ও পরীক্ষিত মানুষ। নির্বাচিত হলে সকল সমস্যা নিরসনে কাজ করব। প্রতিদিনই আমার জনসমর্থন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন বলে আমি আশাবাদী।
এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৬১৫ জন। কেন্দ্র সংখ্যা ১২৪টি, বুথ সংখ্যা ৬৯৫টি। এখানে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬৯ হাজার ৭২ জন, মহিলা ভোটার সংখ্যা হলো ১ লাখ ৬৪ হাজার ৫৩৯ জন।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য