-->
চট্টগ্রাম-১৫

হেভিওয়েট দুই প্রার্থীর প্রভাব প্রচারে হিমশিম খাচ্ছেন অন্য প্রার্থীরা

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
হেভিওয়েট দুই প্রার্থীর প্রভাব প্রচারে হিমশিম খাচ্ছেন অন্য প্রার্থীরা
প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে সাতজন প্রার্থী থাকলেও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রচারণা গণসংযোগ চলছে নৌকা ও ঈগল প্রতীকের দুই প্রার্থীর লড়াই। তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে রয়েছে বাকি পাঁচজন প্রার্থী। হেভিওয়েট দুই প্রার্থীর প্রভাব প্রচারে নিজেদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান অন্য প্রার্থীরা।

 

চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সাতজন প্রার্থীরা হলেন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী মুহাম্মদ আলী হোসাইন মোমবাতি প্রতীক, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মনোনীত প্রার্থী মুহাম্মদ সোলাইমান কাসেমী হাতঘড়ি প্রতীক, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ ছালেম লাঙ্গল প্রতীক, ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ হারুন মিনার প্রতীক, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট প্রার্থী মো. জসিম উদ্দিন ছড়ি প্রতীক।

 

আসনটি থেকে সাতজন প্রার্থী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূলত নির্বাচনী প্রচারণা থেকে শুরু করে পাল্টাপাল্টি হামলা অভিযোগে তুমুল লড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ড. প্রফেসর আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী এবং ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ মোতালেব সিআইপি। রাজনীতিতে আগে থেকেই বিরোধ চলে আসছে উভয়ের মধ্যে। সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তা চূড়ান্ত পর্যায়ে রূপ নেয়। মনোনয়ন ফরম জমা থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্রে চলে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অবস্থান।

 

নদভী মোতালেবের এ লড়াইয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। উভয়ের দাবি তাদের সাথেই রয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীবৃন্দ। এদিকে বিভক্তের বেড়াজালে হিমশিম খেয়ে কোনদিকে নিজেদের প্রকাশ্য অবস্থান প্রকাশ করতে পারছেন না বলে জানান আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। নৌকা ঈগলের তুমুল লড়াইয়ে তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে রয়েছে বাকি প্রার্থীরা। অনেকেই হেভিওয়েট দুই প্রার্থীর তুমুল লড়াইয়েও পেরে উঠতে পারছেন না বলেও জানান।

 

ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী মুহাম্মদ আলী হুসাইন জানান, প্রচারণা কম হচ্ছে এটা ঠিক আছে তবে শেষের দিকে করবো। পোস্টার লাগাচ্ছি বিভিন্ন জায়গায় ছিঁড়ে ফেলছে। ওদের দুই প্রার্থীর যে কর্মকাণ্ড মানুষ আতঙ্কের মধ্যে আছেন। পোস্টার ছেঁড়ার বিষয়ে কোন অভিযোগ করেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লোহাগাড়া সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে বলেছি তবে লিখিত কোন অভিযোগ করা হয়নি।

 

তুলনামূলক পিছিয়ে থাকার বিষয়টির জবাবে কল্যাণ পার্টির মনোনীত হাতঘড়ি প্রতীকের সোলাইমান কাসেমী বলেন, আমি যেভাবে প্রচারণা করতেছি অন্য কোন প্রার্থী সেভাবে প্রচারণা করছে না। নৌকা আর স্বতন্ত্র প্রার্থী বড় প্রার্থী হওয়ায় ওদেরটা চোখে বেশি পড়ছে।কল্যাণ পার্টি থেকে আসনটিতে আমি প্রথম নির্বাচন করতেছি। পেশিশক্তি কালো টাকার ব্যবহার না হলে আমি শতভাগ বিজয়ী হওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।

 

জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ ছালেম বলেন, আমরা আরম্ভ করতেছি। এখন জোড়ালো ভাবে সব আরম্ভ করতেছি।

 

বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট প্রার্থী জসীম উদ্দিন বলেন, পোস্টার লাগাচ্ছি এমনি।ওরা তো বড় দল আমরা তো ছোট দল।আমাদের প্রচারণা আমরা করতেছি।ওদের সাথে তো পেরে উঠতে পারছি না। আমরা পাড়ায় পাড়ায় যাচ্ছি,আমাদের মত আমরা ক্যাম্পিং করতেছি।

 

ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ হারুনকে একাধিক কল করা হলেও গ্রহণ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।

 

আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর বাইরে যারা দাঁড়িয়েছেন তাদের প্রচার-প্রচারণা বা গণসংযোগ নেই। এমনকি নির্বাচনী অফিসও কোথাও চোখে পড়েনি। এই প্রার্থীদের সম্পর্কে দুই উপজেলার মানুষের কোন ধরনের ধারণা নেই বললেই চলে।

 

এই আসনের ভোটার'রা জানান, তারা এমনিতেই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। মূলত তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আবু রেজা নদভীর নৌকা ও আবদুল মোতালেব এর ঈগল প্রতীকের মধ্যে।

 

এদিকে নির্বাচন বর্জন করতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোতালেবের প্রচারণায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে উপজেলা বিএনপির তিন আহ্বায়ক কমিটির সদস্যকে বহিষ্কার করেছে দলটি।

 

সাতকানিয়া নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ছাড়া বাকিদের বিষয়ে কোন ধরনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ হয়নি।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version