-->
শিরোনাম

ময়মনসিংহে ৭৪২ কেন্দ্রে বাড়তি নজর

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
ময়মনসিংহে ৭৪২ কেন্দ্রে বাড়তি নজর

ময়মনসিংহের ১১টি সংসদীয় আসনের ১ হাজার ৩৬০টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৭৪২টি ভোটকেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তায় বাড়তি নজরদারি ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে।

 

জেলার ১১টি আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দল ও স্বতন্ত্র হিসেবে ৭২ জন প্রার্থী। জেলায় মোট ভোটার রয়েছেন ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার ৯১ জন। এর মধ্যে নারী ২২ লাখ ২ হাজার ৪৭০ জন, পুরুষ ২২ লাখ ৪০ হাজার ৫৮৬ জন এবং হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৩৫ জন। ১১টি আসনের ১৪টি উপজেলায় ১ হাজার ৩৬০টি ভোটকেন্দ্রের ৯ হাজার ২১৭টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

 

সুষ্ঠু ভোট অনুষ্ঠানের জন্য ২ হাজার ৮৫৬ জনের পুলিশের টিম, ১৯ প্লাটুন বিজিবি, ১১ প্লাটুন সেনাবাহিনী, ২১৬ সদস্য নিয়ে র‍্যাবের ১১টি টিম, ১৬ হাজার ৪৪৮ জন নিয়ে আনসার ও ব্যাটালিয়ন আনসারের টিম কাজ করবে। এছাড়া ৫০ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, ২৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ইলেক্টোরাল ইনকোয়ারি কমিটির ১১ জন বিচারক থাকবেন ভোটের মাঠে।

 

ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনের ১৪৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৮৭টি গুরুত্বপূর্ণ, ৫৬টি সাধারণ কেন্দ্রের তালিকায় রয়েছে। এ আসনে মোট ৭ প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বর্তমান এমপি ও আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী জুয়েল আরেং এর সঙ্গে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক সায়েমের মধ্যে। ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনে ১৭৪টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ১১৩টি এবং ৬১টি ভোটকেন্দ্র সাধারণ তালিকায় রয়েছে। এ আসনে ৭ জন প্রার্থী থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বর্তমান এমপি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের সঙ্গে বিএনপির সাবেক এমপি শাহ শহীদ সারোয়ারের।

 

ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে ৯২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫৬টি গুরুত্বপূর্ণ এবং সাধারণ ৩৬টি। এ আসনে ৯ জন প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী সোমনাথকে সমর্থন দিয়ে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মোর্শেদুজ্জামান সেলিম নির্বাচনের আগ মুহূর্তে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিলুফার আনজুম পপির সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ সাহার।

 

ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনে ১৭৭টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১২৪টি গুরুত্বপূর্ণ এবং ৫৩টি সাধারণ। এ আসনে ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মো. আমিনুল হক শামীমের মধ্যে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। এ আসনেই উত্তাপ সবচেয়ে বেশি।

 

ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসনে ১০৪টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫৯টি গুরুত্বপূর্ণ এবং ৪৫টি সাধারণ। এ আসনে ৭ জন প্রার্থীর মধ্যে জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি সালাহউদ্দিন আহমেদ মুক্তির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহ সভাপতি কৃষিবিদ নজরুল ইসলামের। ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে ১২১টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫৪টি গুরুত্বপূর্ণ ও ৬৭টি সাধারণ। এ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মোসলেম উদ্দিনের সঙ্গে লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মালেক সরকারের।

 

ময়মনসিংহ-৭ (ত্রিশাল) আসনে ১২০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪০টি গুরুত্বপূর্ণ ও ৮০ টি সাধারণ। এ আসনে ৪ জন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বর্তমান এমপি হাফেজ রুহুল আমীন মাদানীর সঙ্গে লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক পৌর মেয়র এবিএম আনিছুজ্জামানের। ময়মনসিংহ-৮ (ঈশ্বরগঞ্জ) আসনে ৯২টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৯টি গুরুত্বপূর্ণ ও ৪৩টি সাধারণ। এ আসনে ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে মাঠে আছেন জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান সুমন। দুই প্রার্থীর মধ্যে সুমনের অবস্থা অনেকটাই ভালো।

 

ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনে ১২১টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৬টি গুরুত্বপূর্ণ ও ৭৫টি সাধারণ। এ আসনে ৫ প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক এমপি মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আব্দুস সালামের সঙ্গে বর্তমান এমপি আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিনের লড়াই জমেছে বেশ। হাড্ডাহাড্ডি অবস্থা থাকায় এ আসনেও বেশ উত্তাপ রয়েছে। ময়মনসিংহ-১০ (গফরগাঁও) আসনে ১১১টি কেন্দ্রের মধ্যে ৭৩টি গুরুত্বপূর্ণ ও ৩৮টি সাধারণ। এ আসনে ৫ জন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল অনেকটা এগিয়ে। তবে ভোটের মাঠ জমানোর চেষ্টা করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা ডা. আবুল হোসেন দীপু ও অ্যাডভোকেট কায়সার আহমেদ। ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) আসনে ১০৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪১টি গুরুত্বপূর্ণ ও ৬৪টি সাধারণ। এ আসনে ৭ প্রার্থীর মধ্যে বর্তমান এমপি কাজিম উদ্দিন আহমেদ ধনুর সামনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এম.এ

 

ওয়াহেদ থাকায় ঝুঁকিতে পড়েছেন। আসনগুলোর একাধিক প্রার্থীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ভোটকেন্দ্রে যেন ভোটার যায় তারা সেই চেষ্টাই করছেন।

 

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নজর রয়েছে। সেসব কেন্দ্রগুলোতে ফোর্সের সংখ্যাও বেশি থাকবে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

 

পুলিশ সুপার (এসপি) মাছুম আহম্মদ ভূঁইয়া বলেন, গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে সশস্ত্র পুলিশ থাকবে। কেন্দ্রে দায়িত্বে পাশাপাশি বিভিন্ন ধাপে দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ। এছাড়া র‍্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীও থাকবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে কেউ বিঘ্ন ঘটাতে চাইলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version