ভবিষ্যত নিয়ে দ্বিধায় থাকা কেন্দ্রীয় ১৪ দলের শরিকদলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে নির্বাচন পরবর্তী জোটের অবস্থান, ভূমিকা ও সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। একই সঙ্গে ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা ঠিক হবে বলে আশা জোট নেতাদের।
কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাসময়ে সভায় উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিহত করতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কয়েকটি রাজনৈতিক দল নিয়ে ২০০৪ সালে গঠিত হয় রাজনৈতিক জোট কেন্দ্রীয় ১৪ দল। জোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগ। শুরু থেকেই এই জোটের সমন্বয়ক ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা মোহাম্মদ নাসিম। তাঁর মৃত্যুর পর এ দায়িত্ব পান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু।
বৃহস্পতিবার ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার ১৪ দলের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন শেখ হাসিনা মূলত তিনটি বিষয় মাথায় রেখে গঠন হয় ১৪ দল। এগুলো হলো জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অবস্থান; উন্নয়নমূলক কাজের ভিশন এবং সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান।
২০১৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে অনেকটাই নিষ্প্রভ ছিল এই জোট। তখনও জোট নেতাদের অভিযোগ ছিল, সবচেয়ে বড় শরিক আওয়ামী লীগের নিষ্ক্রিয়তার ১৪ দলও নিষ্ক্রিয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জোটের নেতারা কিছুটা সক্রিয় হন। তবে নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক আসন না পাওয়ায় হতাশ ছিলেন তারা। তার ওপর জোটের কয়েকজন নেতা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের কাছে। এতে হতাশা আরও বেড়েছে।
টানা চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নিলেও আওয়ামী লীগ বাদে সব দলেই আছে অসন্তোষ ও চাপা ক্ষোভ। নির্বাচনের আগে আগে জোট নেতাদের কিছুটা দৌড়ঝাঁপ দেখা গেলেও নির্বাচনের পর জোট আছে কি নেই তা বোঝার উপায় নেই। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জোটের কোনো কর্মসূচি এখনও চোখে পড়েনি।
ভবিষ্যৎ নিয়ে দ্বিধায় কেন্দ্রীয় ১৪ দলভবিষ্যৎ নিয়ে দ্বিধায় কেন্দ্রীয় ১৪ দল ২০০৯ সালে এক তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বৃহত্তর জোট মহাজোট ক্ষমতায় আসে। এ সময় ১৪ দলের শরিক দলগুলোর কয়েকজন নেতা মন্ত্রিসভায়ও স্থান পান। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও এ ধারা অব্যাহত ছিল। টানা দুই মেয়াদে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং জাতীয় পার্টির (জেপি) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
তবে ২০১৮ ও ২০২৩ সালের নির্বাচনের পর গঠিত আওয়ামী সরকারের মন্ত্রিসভায় ১৪ দলের কোনো নেতাকে আর দেখা যায়নি।
১৪টি দলের সমন্বয়ে রাজনৈতিক এ জোট গঠিত হলেও বর্তমানে দল আছে ১২টি। আওয়ামী লীগ, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দল, জাসদ, গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাপ, গণ আজাদী লীগ, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল(বাসদ), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (বিটিএফ), জাতীয় পার্টি(মঞ্জু)—এগুলোর মাঝে কয়েকটি দল বাদে বাকি দলগুলোর অস্তিত্ব মূলত প্যাডসর্বস্ব।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য