-->

ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সরকার ছাড়া ‘অন্য কিছুই’ বদলায়নি

-গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সরকার ছাড়া ‘অন্য কিছুই’ বদলায়নি

ছাত্র-জনতার বিপ্লবে শুধু সরকার পরিবর্তন ছাড়া ‘অন্য কিছুই’ বদলায়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, ‘মান্না দের একটি গান তুমি কি সেই আগের মতোই আছো, নাকি অনেকখানি বদলে গেছো...। গানে শুরুটা এরকম যদি বলি সরকার বদলিয়ে গেছে, তুমি-আমি একই আছি, আগে যা ছিলাম।’ গতকাল রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে ‘দুর্যোগ প্রশমনে বিএনপির ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এক-এগারোর সময়ে আওয়ামী লীগের সব মামলা যদি উঠে যেতে পারে, তাহলে এখন কেনো আমাদের মামলা উঠছে না। আপনারাই বলেছেন, আমাদের ওপরে মিথ্যা মামলা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে অপমানিত করা হয়েছিল, এতে গোটা জাতি ক্ষুব্ধ হয়েছে। তাহলে আমাদের ওপরে এত অত্যাচার-নির্যাতন-মিথ্যা মামলা কেন আপনাদের বিবেচনায় আসছে না। তিনি বলেন, আপনাদের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা) মিথ্যা মামলার ব্যাপারে যদি আমরা সমব্যথিত হতে পারি, সোচ্চার হতে পারি। তাহলে আপনারা দায়িত্ব গ্রহণ করার পরে আমাদের মামলাগুলো আগের মতোই আছে, আমাদের আগের মতোই আদালতে যেতে হচ্ছে। এই কারণেই আমি বলেছি, সরকার বদলে গেছে কিন্তু তুমি-আমি একই আছি, যা ছিলাম আগে।

গয়েশ্বর বলেন, এখনো নির্বাচন কমিশন পরিবর্তন করতে পারেননি। কিন্তু জনগণের ভোট করতে হলে তো নির্বাচন কমিশন লাগবে। যেখানে এখনো উইদআউট নির্বাচন কমিশন সেখানে আমি কীভাবে বিশ্বাস করব আপনি নির্বাচন করবেন... কীভাবে বিশ্বাস করব? কমিশনের পর কমিশন... আরেকটা কমিশন হলো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা.. জাস্ট ইজ এ টাইম কিলিং, নাথিং মোর। নির্বাচন যত শিগগিরই হবে জনগণের পার্টিসিপেশনের জোয়ারের রায়ের মধ্যে হবে। এই মুহূর্তে যদি নির্বাচন হয় তাহলে বাংলাদেশে নির্বাচনের অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করে জনগণ ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হবে। কিন্তু মরা মানুষ উপস্থিত হবে না।

২০০৭ সালে এক এগারোর ঘটনা প্রবাহের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক এগারোর যে বিরাজনীতিকরণ বা রাজনীতিবিদদের অপসারণ করা বা রাজনীতি অঙ্গন থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া... তখন রাষ্ট্র শক্তি গ্রহণ করা সংস্কারের নামে কুসংস্কারের মধ্য দিয়ে এগুলো অতিক্রম করার মধ্য দিয়ে বাস্তবরূপ এখনো সংস্কার শব্দ ঘুরছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনার দায়িত্ব একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য যেটুকু রিফর্ম দরকার হয় সেইটুকু রিফর্মের জন্য বিবেচনা করবেন। আর আপনাদের ভাবনাগুলো আর আমাদের ভাবনাগুলো। আমরা তো ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়ে রেখেছি। এসব সংস্কার রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে আগামী দিনে জনগণের প্রতিনিধিরা পার্লামেন্টে আসবে, তারা ঐকমত্যের ভিত্তিতে যেসব সংস্কার করবে। আমরা বলছি, আপনারা যদি ব্যর্থ হন জাতি ব্যর্থ হবে, আপনারা ব্যর্থ হওয়া মানে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল ব্যর্থ হওয়া। আমরা দেখতে চাই আপনারা সফল হন। আমরা আপনাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে... আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা দেব। মানুষের তবে স্পষ্ট করেন আপনারা নির্বাচন করবেন।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য কতটুকু সময় লাগবে বলেন না কেন? সেনাবাহিনী প্রধান বলেছেন ১৮ মাস, তার কথা বলেছেন বলুক। পরের দিন কেন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটা সরকারের কথা না। তাহলে সরকারের কথাটা কী? ৩৬ মাস, ৩০ মাস তাও বলেন না, বলতে তো হবে আপনাকে। আপনাকে তো সময় বলতে হবে। কোনো বিয়ে ঠিক হলে তিন মাস আগে তারিখ ঠিক হয়। আমি যদি জানতে পারি আপনারা এত মাস পরে নির্বাচন করবেন আমাদের তো কাজ আছে। আমাকে জনগণের কাছে যেতে হবে, তাদেরকে বুঝাতে চেষ্টা করব যে আমি এই করব, সেই করব। আমি তো একটা রাজনৈতিক দল করি। আমাদেরও তো আকাক্সক্ষা আছে জনগণকে কনভেন্স করা। সুতরাং আপনাদের টার্গেট ঠিক করতে হবে।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য

Beta version