যথাযথ মর্যাদায় ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্রবাহিনী কল্যাণ সংস্থা ফুলবাড়ী উপজেলা শাখা দিনাজপুরের উদ্যোগে ২১শে নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস সফল ভাবে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকাল ৯ টায় সুজাপুর চৌধুরী মোড় সংগঠনের কার্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা ও সশস্ত্রবাহিনী পতাকা উত্তোলন এবং এক বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এতে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি, অগ্রগতি এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। সে সঙ্গে তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
দিবসটি সফলভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে সংগঠনের কার্যালয় থেকে একটি বর্ণিল শোভাযাত্রা বের হয়ে উপজেলা চত্বর হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জিএম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় গিয়ে উপস্থিত হন। সেখানে বিদ্যালয়ের মিলনায়তনে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের মনোজ্ঞ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা প্রশাসক মীর মো. আল কামা তমাল। আলোচনা সভায় ফুলবাড়ী শাখার সভাপতি সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ মনজুরুল হকের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য প্রদান করেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মানিত লেফটেন্যান্ট আব্দুল হান্নান, উপদেষ্টা ওয়ারেণ্ট অফিসার আব্দুল হাই, বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন ইসলামী ব্যাংক ফুলবাড়ি শাখার ব্যবস্থাপক মো. তরিকুল ইসলাম সিরাজী, উপজেলা জুয়েলারি মানিক সমিতির সভাপতি মোঃ সাহাজুল ইসলাম ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ মর্তুজা সরকার মানিক। স্বাগত বক্তব্য দেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সার্জেন্ট মোঃ খাইবুর রহমান চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, কর্পোরাল সোহরাব, ল্যান্স কর্পোরাল মাহফিজার রহমান প্রমূখ। এ সময় সংগঠনের সকল সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনাসভা শেষে সকলে দুপুর ২ টায় মধ্যাহ্ন ভোজে মিলিত হন।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর তাণ্ডবলীলার জবাবে অস্ত্র তুলে নেয় বিপ্লবী ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস, পুলিশ, আনসার ও অন্য সদস্যরা। পরবর্তী সময়ে এগিয়ে আসেন পূর্ব পাকিস্তানের কর্মরত বাঙালি নাবিক ও নৌ-অফিসার, সেনা ও বিমান কর্মকর্তারা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেয় সর্বস্তরের হাজার হাজার মুক্তিপাগল জনতা। বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম ধারণ করে সশস্ত্র সংগ্রামের রূপ। জাতির ঐ ক্রান্তিলগ্নে পাকিস্তানি শাসকদের স্বপ্ন নস্যাৎ ও তাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন দেখা দেয় একটি সুসংগঠিত সশস্ত্র বাহিনীর। এর মাধ্যমেই স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে ও পাক-ভারত যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। প্রসঙ্গত, মুক্তিযুদ্ধের অগ্রযাত্রা ও বিজয়ের স্মারক হিসেবে প্রতি বছর ২১ নভেম্বর “সশস্ত্রবাহিনী দিবস” পালন করা হয়। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী ভারতীয় মিত্র বাহিনীর সহযোগিতায় সম্মিলিতভাবে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণের সূচনা করে।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য