দারুণ এক জয়ে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছে পেরু। শুক্রবার রাতে কলম্বিয়ায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে স্বাগতিক দলকে তারা ১-০ গোলে হারিয়েছে। প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাওয়া ড্র ম্যাচে ৮৫ মিনিটে পেরুকে আনন্দে ভাসিয়ে দেওয়ার গোলটি করেন এডিনসন ফ্লোরেস। এ জয়ের ফলে ১৫ ম্যাচ শেষে ২০ পয়েন্ট নিয়ে পেরু চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে। অন্যদিকে কলাম্বিয়ার সংগ্রহ ১৭ পয়েন্ট। এ হার তাদেরকে কঠিন পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। ষষ্ঠ স্থানে তারা। এখনও তিনটি করে খেলা বাকি তাদের।
এডিনসন ফ্লোরেস প্রথম একাদশে ছিলেন না। বিরতির পর বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে এসেছিলেন। ৮৫ মিনিটে করেন সেই আকাঙ্খিত গোলটি। এটি ছিল পেরুর টানা তৃতীয় জয়। টানা তিন জয়ই পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থানের দারুণ পরিবর্তন হয়েছে। পেছনে ঠেলে দিয়েছে লুই সুয়ারেজের উরুগুয়েকে।
পেরু ও কলাম্বিয়া সমান অবস্থান নিয়ে মাঠে নেমেছিল। ম্যাচের আগে উভয় দলের সংগ্রহ ছিল ১৭ পয়েন্ট। নিজ দর্শকের সামনে চমৎকার খেলা উপহার দিয়েছে কলাম্বিয়া। পেরুকে সীমানায় একের পর এক আক্রমণ রচনা করেছে। পেরু যেখানে কলাম্বিয়ার পোস্ট লক্ষ্য করে চারটি শট নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে সেখানে কলাম্বিয়া পেয়েছে ২০ বার। কিন্তু কাজের কাজটি তারা করতে পারেনি। গোলের সামনে তারা দক্ষতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তাইতো সিংহভাগ সময় বলের দখল রেখেও পয়েন্ট পায়নি। তাছাড়া আক্রমণভাগে তাদের দুর্বলতা প্রতি ম্যাচেই প্রকট হয়ে উঠছে। তাদের অবস্থা এতটা নাজুক যে টানা ছয় ম্যাচে তারা গোল করতে পারেনি। এ ম্যাচে অবশ্য পেরুর গোলরক্ষক তাদের সামনে চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। বেশ কয়েকটি দারুণ আক্রমণ তিনি রুখে দিয়েছেন।
শুক্রবার অনুষ্ঠিত অন্য ম্যাচে অবশ্য গোলের সমস্যা হয়নি। ভেনেজুয়েলা ৪-১ গোলে বলিভিয়াকে বিধ্বস্ত করেছে। হ্যাটট্রিক করেছেন সোলোমন রন্ডন। তবে হ্যাটট্রিকের আনন্দটা তিনি সেভাবে উদযাপন করতে পারেননি। কেননা তাদের এ জয় এখন একটা সংখ্যা মাত্র। পয়েন্ট টেবিলে তারা সবার নিচে। মাত্র ১০ পয়েন্ট তাদের ভান্ডারে। ফলে বিশ্বকাপে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের একমাত্র দল তারাই, যারা কখনও বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলতে পারেনি। তবে বলিভিয়া তুলনামূলক ভালো অবস্থানে রয়েছে। তাদের সংগ্রহ ১৫ পয়েন্ট। তারা পয়েন্ট টেবিলে অষ্টম স্থানে রয়েছে। এ ম্যাচে হারের ফলে বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন অনেকটা ম্লান হয়ে গেছে তাদের।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে সরাসরি চারটি দল কাতার বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে। পঞ্চম দলের জন্য বিশ্বকাপে যাওয়ার সুযোগ থাকবে। তবে সে ক্ষেত্রে তাদেরকে অতিরিক্ত দুটো ম্যাচ খেলতে হবে। এশিয়া অঞ্চল থেকে পঞ্চম হওয়া দলের বিরুদ্ধে প্লে অফ ম্যাচ খেলবে। সে ম্যাচের ফলাফলের ওপরই তাদের ভাগ্য নির্ভর করবে।
দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে এরই মধ্যে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা চূড়ান্ত পর্বে খেলা নিশ্চিত করেছে। ১৪ ম্যাচ শেষে ব্রাজিল ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে রয়েছে। সমসংখ্যক ম্যাচে চির প্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার পয়েন্ট ৩২। ১৫ ম্যাচ থেকে ইকুয়েডর ২৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে তৃতীয় স্থানে। শুধু তাই নয়, সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার টিকেট পাওয়ার খুব কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে তারা।
মন্তব্য