-->
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ

ভারতের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের

ক্রীড়া ডেস্ক
ভারতের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের

বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের মিশন শুরু করেছিল বাংলাদেশের যুবারা। স্বপ্ন ছিল বিশ্বকাপ ধরে রাখার। কিন্তু স্বপ্ন পূরণের ধারেকাছেও যেতে পারেনি বাংলাদেশ। কোয়ার্টার ফাইনালে থমকে গেছে স্বপ্ন পূরণের মিশন। শনিবার ভারতের কাছে ৫ উইকেটে হারিয়ে মূলত বাংলাদেশের শিরোপা ধরে রাখার সব সম্ভাবনার ইতি হয়েছে। বাংলাদেশের করা ১১১ রানের জবাবে ভারত ৩০.৫ ওভারে ৫ উইকেটের জয় নিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছেছে। শিরোপা পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে তারা অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে। ২ ফেব্রুয়ারি এ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম সেমিফাইনাল মাঠে গড়াবে ১ ফেব্রুয়ারি। এ ম্যাচে ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ এশিয়ার আর এক দল আফগানিস্তান।

গত আসরে এই ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। তখন থেকেই ভারত প্রতিশোধের নেশায় উম্মত্ত হয়ে ছিল। প্রথম সুযোগেই সেই ছোবলটা দিয়েছে ভারতের যুবারা। আর এতটাই বিষাক্ত সে ছোবল যা থেকে আর বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।

টস জয়ের পর ভারত অধিনায়ক বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু শুরুতেই ভারতের বোলাররা যে এমনভাবে বিষ উগড়ে দেবে তা হয়তো বাংলাদেশের ব্যাটাররা কল্পনা করতে পারেননি। তাদের বোলাররা এতটাই তাণ্ডব ছড়িয়েছেন যে, বাংলাদেশের কোনো বোলার ক্রিজে স্থির হওয়ারও সময় পাননি। শুধুমাত্র এসএম মেহরাব হাসান কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। আর তাতেই বাংলাদেশ বড় লজ্জার হাত থেকে রেহাই পায়। মেহরাব ৩০ রান করেছেন। এমন একটা ইনিংস তিনি খেলতে ব্যর্থ হলে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের সামনে আরও বড় লজ্জা এসে হাজির হতো। ১০০ রানের আগেই ইনিংস গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছিল।

মেহরাব হাসানের ৩০ রানই ছিল ইনিংসের সর্বোচ্চ রান। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ১৮ এসেছে ভারতীয় বোলারদের বদান্যতায়। তারা ১২টি ওয়াইড বল করেছে। বাই থেকে এসেছে ৪ রান আর লেগবাই থেকে দুই রান। বাংলাদেশের প্রথম সাত ব্যাটারদের মধ্যে মাত্র একজন দুই অংকের রানের দেখা পেয়েছেন। টু ডাউন ব্যাটার আইচ মোল্লা ১৭ রান করেন। দুর্ভাগ্য তার। এমন বিপর্যয়ের মাঝে রান আউটে শেষ হয় তার ইনিংসটি। এছাড়া আশিকুর জামান ১৬ রান করেছেন। রান আউট হয়েছেন তিনিও।

ভারতীয় বোলারদের মাঝে সফল ছিলেন রাভি কুমার। সাত ওভারে এক মেডেনসহ ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। এছাড়া ভিকি ২৫ রানে নিয়েছেন দুই উইকেট।

প্রতিপক্ষের সামনে যখন লক্ষ্যটা ছোট হয় তখন বোলারদের আর লড়াই করার কিছু থাকে না। মানসিকভাবেই আগে থেকে পিছিয়ে পড়তে হয়। বাংলাদেশের বেলায় তার থেকে ব্যতিক্রম কিছু হয়নি। তারপরও বোলাররা যথেষ্ঠ চেষ্টা করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় তানজিম হাসান সাকিব শুরুতেই ভারতের ইনিংসে ধাক্কা দিয়ে বাংলাদেশের সামনে একটা স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। ভারতীয় ইনিংসে রানের ঘরে সংখ্যা পরিবর্তনের আগেই ওপেনার হারনুর সিংকে বিদায় করেছিলেন তানজিম হাসান। স্বাভাবিকভাবে হারনুর রানের খাতা খুলতে পারেননি। শুরুর এই সাফল্যটা তানজিম যেমন ধরে রাখতে পারেননি তেমনি অন্যরা। ফলে শুরুর এই আঘাত সামলে নিয়ে ভারত ঠিকই সামনের দিকে এগিয়ে গেছে। ধীরে ধীরে শক্ত জুটি গড়ে তুলেছে। বিনা রানে প্রথম উইকেটের পতন হলেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তারা ৭০ রান করে ম্যাচকে বাংলাদেশের আয়ত্ত্বের বাইরে নিয়ে যায়।

তারপরও ভারত যে খুব স্বস্তিতে ছিল না তা নয়। স্কোর বোর্ডে ৭০ রান জমা হওয়ার পর তাদের ওপর দিয়ে একটা ঝড় বইয়ে যায়। সে ঝড়ে মাত্র ১২ রানে ৩ উইকেটের পতন হয়। আর ২৭ রানে ৪ উইকেট। আর তখন বাংলাদেশের বোলার ও ব্যাটারদের সামনে আফসোসটা বড় হতে থাকে। ইস! আমরা যদি আর একটু রান স্কোর বোর্ডে জমা করতে পারতাম। তাহলে বোলাররা আরও লড়াই করতে পারতো। আমাদের সামনেও জয়ের সুযোগ আসতো। এভাবে অসহায় আত্মসমর্পন করতে হতো না। এসব ভাবনার মধ্যে অধিনায়ক যশ ধুলের ২০ রান ও কুশল টাম্বেও ১১ রান ভারতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেয়। চমৎকার বোলিং করে রাভি কুমার ম্যাচ সেরা হয়েছেন।

বাংলাদেশের বোলার রিপন মন্ডলের আফসোসটা একটু বেশিই। তানজিম প্রথম আঘাত হানলেও রিপনের ভান্ডারে জম হয়েছে ৪ উইকেট। ৯ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন তিনি। স্কোর বোর্ডে আরও একটু বেশি রান থাকলে আরও একটা ওভার বোলিং করতে পারলে রিপনের ভান্ডারটাও সমৃদ্ধ হতে পারতো।

 

মন্তব্য

Beta version