বিপিএলের শুরু থেকে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে গত শনিবার রাতের ম্যাচে ঘটে বিপত্তি। সিলেটের বিরুদ্ধে ম্যাচে চট্টগ্রামের অধিনায়ক হিসেবে লিস্টে নাম আসে নাঈম ইসলামের। তখন দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অধিনায়কত্ব নয়, খেলায় পূর্ণ মনোযোগ দিতে চান মিরাজ। সেই ম্যাচে দারুণ জয়ও পায় চট্টগ্রাম। তবে গতকাল সেই ঘটনা মোড় নেয় ভিন্ন দিকে। জানা যায়, আসলে মতের মিল না হওয়ায় অধিনায়ক হিসেবে মিরাজকে সরিয়ে দিয়েছে চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ। এ অভিমানে বিপিএল না খেলেই ঢাকায় ফেরার ইচ্ছা পোষণ করে দল বরাবর মেইলও করেছেন মিরাজ। সব মিলিয়ে মিরাজকে নিয়ে বিপাকে চট্টগ্রাম।
প্রথম দিকে চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, বিদায়ি কোচ পল নিক্সনের পরামর্শে নেতৃত্বে আনা হয়েছে বদল। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিক্সন নন মিরাজকে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেয় দলের মালিকপক্ষই। মিরাজ নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন গণমাধ্যমে। যেখানে তিনি বলেন, ‘আমি এরই মধ্যে বিসিবির সিইওর কাছে ই-মেইল করে জানিয়েছিÑ মায়ের চিকিৎসার জন্য আমি ঢাকায় ফিরে যাচ্ছি।’ নেতৃত্বের বদল নিয়েও তিনি ক্ষুব্ধ। বলেন, ‘খেলার কয়েক ঘণ্টা আগে যখন জানলাম, আমাকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা ছিল খুবই বিব্রতকর। আমার নেতৃত্বে দল ভালো করছে, তবু তারা কেন আমাকে সরিয়ে দিল, তা আমি জানি না। এমনকি দলের ম্যানেজমেন্ট ও কোচও খুশি ছিলেন।’ বিপিএলে এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচে ৩ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে আছে চট্টগ্রাম। মিরাজের নেতৃত্বে চার ম্যাচে তারা পেয়েছিল দুই জয় ও দুই হার। মিরাজ সরে যাওয়ার পর নাঈমের নেতৃত্বে সিলেটকে হারায় তারা। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ইংলিশ ওপেনার উইল জ্যাকসকে সরিয়ে নিজে ওপেন করতে চেয়েছিলেন মিরাজ। তার এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে মিল হয়নি টিম ম্যানেজমেন্টের।
মিরাজ অনেকটা অনড় চট্টগ্রামের হয়ে না খেলার। তবে দল চাইছে তিনি খেলুক। এ ব্যাপারে দলের ম্যানেজার ফাহিম মুনতাসির সুমিত জানান, ‘আমরা চেষ্টা করছি, তাকে ধরে রাখার। সে যদি চলে যায়, সেটা তো খুব খারাপ হবে। কারণ বিপিএলের ইতিহাসে এমনটা হয়নি যে টুর্নামেন্টের মাঝপথে একজন খেলোয়াড় দল ছেড়ে দিয়েছে।’ তিনি জানান, মালিকপক্ষের সঙ্গে দল ব্যবস্থাপনা নিয়ে চিন্তায় মিল না হলেও মিরাজ ঢাকায় যাচ্ছেন একদমই পারিবারিক কারণে। সুমিত আরো বলেন, ‘আমি এবং টিম ম্যানেজমেন্ট তারপর মিরাজের সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে মানানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। প্রয়োজনে তার মাকে চট্টগ্রাম এনে একই হোটেলে কাছাকাছি রাখার প্রস্তাবও দিয়েছি। তার মায়ের চিকিৎসার সবকিছু আমরা দেখভাল করব, এমন নিশ্চয়তাও দিয়েছি।’ এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মিরাজের সঙ্গে বরফ গলেনি চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষের।
মন্তব্য