-->
শিরোনাম
বিপিএল

দুরন্ত কুমিল্লার তিনে তিন

ক্রীড়া প্রতিবেদক
দুরন্ত কুমিল্লার তিনে তিন

প্রথম দুই ম্যাচে তার রান ছিল যথাক্রমে ২ ও ৬। তবে তৃতীয় ম্যাচেই খুনে মেজাজে দেখা গেল ফাফ ডু প্লেসিসকে। খেললেন ৮৩ রানের ঝলমলে অপরাজিত ইনিংস। বিশ^কাপ ব্যর্থতার পর রানের দেখা পেলেন লিটন দাসও। শেষদিকে ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন ডেলপোর্ট। সব মিলিয়ে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ার পর বোলাররাও দেখালেন সম্মিলিত প্রচেষ্টা। সব মিলিয়ে চলমান বিপিএলে দুরন্ত এক দলই যেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দেখা গেল কুমিল্লার সেই দাপট। দারুণ ফর্মে থাকা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৫২ রানে হারিয়েছে ইমরুল কায়েস শিবির। বিপিএলে কুমিল্লার এটি টানা তৃতীয় জয়। দারুণ জয়ে চট্টগ্রামকে পেছনে ফেলে ফের পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে কুমিল্লা। ৩ ম্যাচে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট ভিক্টোরিয়ান্সের। অন্যদিকে দ্বিতীয় স্থানে নেমে যাওয়া চট্টগ্রামের পয়েন্টও ৬। তবে ম্যাচ খেলেছে তারা কুমিল্লার চেয়ে ডাবল, ৬টি। সমান তিনটি করে জয় ও হার চট্টলা শিবিরের।

টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেটে ১৮৩ রান করে কুমিল্লা। জবাবে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স গুটিয়ে যায় ১৩১ রানে, ১৭.৩ ওভার। ব্যাট হাতে দারুণ ইনিংস খেলার সুবাদে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন কুমিল্লার প্রোটিয়া ব্যাটার ডু প্লেসিস। জিততে হলে চট্টগ্রামকে পাড়ি দিতে হতো চ্যালেঞ্জিং স্কোর। শুরুটা বাউন্ডারি হাঁকিয়ে চমকে দিয়েছিলেন ওপেনার কেনার লুইস। কিন্তু পরের বলেই বাউন্ডারি লাইনে ধরা পড়েন তিনি। এরপর ক্রমাগত উইকেট হারিয়েছে দলটি। এরপর অবশ্য এক প্রান্ত আগলে রেখে যা লড়াই করার তা একাই করেছেন উইল জ্যাকস। দলীয় ১২৩ রানের মাথায় জ্যাকস বিদায় নিলে জয়ের শেষ আশাও ধূলিসাৎ হয়ে যায় চট্টগ্রামের। ৪২ বলে জ্যাকস খেলেন ৬৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। তার ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ৩টি ছক্কার মার। চট্টগ্রামের টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান কেনার লুইস (৪), আফিফ হোসেন (৪) ও সাব্বির রহমান (৫) ছিলেন এদিন ব্যর্থ। যাকে নিয়ে অনেক নাটক হলো সেই মেহেদী হাসান মিরাজ ফেরেন ১০ রান করে। চট্টগ্রাম অধিনায়ক নাঈম ইসলামও (৮) জ¦লে উঠতে পারেননি। যাকে নিয়ে শেষের দিকে বড় আশা ছিল চট্টগ্রামের, সেই বেনি হাওয়েলও নিরাশ করেন ভক্তদের। তার ব্যাটে প্রতিনিয়তই ঝড় ওঠে। কিন্তু এদিন ওঠেনি। ৬ বলে ২ রান করে তানভিরের বলে বোল্ড। আগের ম্যাচে বল হাতে হ্যাটট্রিক করা মৃত্যুঞ্জয় ১২ বলে করেন ১৩ রান।

শেষের দিকে রাজা, নাসুম ও শরিফুল ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্কের রান। বল হাতে কুমিল্লার হয়ে ৪ ওভারে ১৭ রানে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন নাহিদুল ইসলাম। এছাড়া মোস্তাফিজ, তানভির, শহিদুল নেন দুটি করে উইকেট। এক উইকেট পান করিম জান্নাত। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে উইকেট হারায় কুমিল্লা। দ্বিতীয় ওভারে নাসুম আহমেদের বলে সাব্বিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় (১)। তবে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে কুমিল্লাকে বড় স্কোরের ভিত গড়ে দেন লিটন দাস ও প্রোটিয়া ব্যাটার ডু প্লেসিস। দুজনের বাহারি শটে তরতরিয়ে রান আসে কুমিল্লার। ভাগ্য খারাপ লিটনের। অল্পের জন্য পাননি ফিফটির দেখা। দলীয় ৮৪ রানে এ জুটি ভাঙেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। ৩৪ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৭ রান করে সাব্বিরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন দাস। দলীয় স্কোরে আর দুই রান যোগ হতেই বিদায় নেন কুমিল্লা অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ৩ বলে এক রান করে তিনি হাওয়েলের শিকার। তবে কুমিল্লাকে চ্যালেঞ্জিং স্কোরে পৌঁছে দেয় চতুর্থ উইকেট জুটিতে ডু প্লেসিস ও ক্যামেরন ডেলপোর্ট। অবিচ্ছিন্ন এ জুটিতে আসে ৪৯ বলে ৯৭ রান। প্রথম দুই ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া ডু প্লেসিস এ ম্যাচে জ¦লে ওঠেন পুরোদমে। খেলেন ৫৫ বলে ৮৩ রানের দারুণ অপরাজিত ইনিংস। তার ইনিংসে ছিল ৮টি চার ও ৩টি ছক্কার মার। শেষদিকে ডু প্লেসিসের সঙ্গে টর্নেডো ইনিংস খেলেন ডেলপোর্ট। ২৩ বলে তিনি থাকেন ৫১ রানে অপরাজিত। ৪টি চারের পাশাপাশি তিনি হাঁকান ৩টি ছক্কা। ৩ উইকেটে কুমিল্লার সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৮৩ রান। বল হাতে চট্টগ্রামের হয়ে নাসুম দুটি ও বেনি হাওয়েল নেন একটি করে উইকেট।

মন্তব্য

Beta version