টাইব্রেকারে স্বাগতিক ক্যামেরুনকে হারিয়ে মিসর আফ্রিকান নেশনস কাপের ফাইনালে উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত খেলায় গোলশূন্য ড্র’র পর টাইব্রেকারে মিসর ৩-১ গোলে জয় পায়। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মোহাম্মদ সালাহ’র মিসর সাদিও মানের সেনেগালের মুখোমুখি হবে।
টাইব্রেকারে ক্যামেরুন দর্শকদের হতাশায় ডুবতে হয়েছে। একের পর এক তাদের খেলোয়াড়রা গোল করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। প্রথম চার শটের তিনটিতে তারা গোলের দেখা পায়নি। তাদের যেমন ব্যর্থতার ছিল তেমনি দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন মিসরের গোলরক্ষক আবু গাবাল। ক্যামেরুনের দুটো শট তিনি রুখে দিয়েছেন।
ক্যামেরুন প্রথম শটে গোল করে দর্শকদে আশাবাদী করে তুলেছিল। কিন্তু পরের তিন শটে তারা গোল করতে ব্যর্থ হয়। ক্যামেরুনের হয়ে দ্বিতীয় শট নিয়েছিলেন হারল্ড মোউকোদি। তার শট মিসরের গোলরক্ষক বাম দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন। পরের শটে মিসর গোল করে এগিয়ে যায়। ক্যামেরুন তৃতীয় শটেও গোল করতে ব্যর্থ হয়। এবারও আবু গাবাল দক্ষতার পরিচয় দেন। ক্যামেরুনের তৃতীয় শট রুখে দিয়ে তিনি দলের জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেন। মিসর তৃতীয় শটে গোল পায়। ক্যামেরুনের চতুর্থ শটে আবু গাবালের আর কোনো কষ্ট করতে হয়নি। ক্লিনটন এন ঝি বল বাইরে মেরে মিসরকে আগেভাগে আনন্দে মেতে ওঠার সুযোগ করে দেন। মিসর তাদের নেওয়া তিন শটেই গোল করেন। তাদের প্রতি শটেই ক্যামেরুনের গোলরক্ষক ভুল দিকে ঝাঁপিয়েছেন।
এ জয়ের ফলে মিসর শিরোপা জয়ের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো। এবার তাদের সামনে রেকর্ড সংখ্যক অষ্টমবারের মতো শিরোপা জয়ের হাতছানি।
মিসর ও সেনেগালের ফাইনালে মানে দুই সতীর্থ মোহাম্মদ সালাহ ও সাদিও মানের লড়াই। দুইজনই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের খেলোয়াড়।
টাইব্রেকার শেষে মিসর হাসলেও এই হাসিটা তারা অক্তিরিক্ত খেলা শেষেই হাসতে পারতো। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাদের, নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে যে সুযোগটা তারা পেয়েছিল তা কাজে লাগাতে পারেনি। ক্যামেরুনের পোস্টের ডান পাশ থেকে রামাদান সোবি দারুণ একটা ক্রস করেছিলেন। ক্যামেরুনের গোলপোস্টের সামনে মিসরের তিনজন খেলোয়াড় থাকলেও তাদের কেউ বলে পা লাগাতে পারেননি। বল তাদের ফাঁকি দিয়ে আয়ত্ত্বের বাইরে চলে যায়।
আবার ফলটা অন্যরকম হতে পারতো। ক্যামেরুন হাসতে পারতো শেষ হাসি। প্রথমার্ধেই ক্যামেরুন গোলের দারুণ একটা সুযোগ পেয়েছিল। ১৮ মিনিটের সময় কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে ক্যামেরুনের মাইকেল এনগাদিউ যে হেড নিয়েছিলেন তা ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে শট নিয়ে তিনি গোল করতে পারেননি। কয়েকমিনিট পর স্বাগতিকদের এগিয়ে যাওয়ার আরও একটা সুযোগ এসেছিল। কিন্তু কার্ল টোকো একাম্বির দুর্বল শট আবু গাবালের জন্য কোনো সমস্যা তৈরি করতে পারেনি। বরং স্বস্তির সঙ্গে বল তিনি নিয়ন্ত্রণে নেন।
সেমিফাইনালের এই হার স্বাগতিকদের জন্য বড় এক আঘাত। কেননা টুর্নামেন্টের মাঝে স্টেডিয়ামে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার পর শিরোপা জয়ের মাঝ দিয়ে সে দুঃখ তারা ভুলতে চেয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি। উল্টো সেই ওলেম্বে স্টেডিয়ামে তাদের আরও একটা হতাশা হজম করতে হলো। দুর্ঘটনার পর ওলেম্বে স্টেডিয়ামে এটা ছিল প্রথম ম্যাচ। গত সপ্তাহে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় আটজন নিহত হয়েছিল। সেই ঘটনার পর এই হার স্বাগতিক দলের জন্য আর এক আঘাত হয়ে দেখা দিয়েছে।
মন্তব্য