-->
আফ্রিকান নেশনস কাপ

সাদিও মানের গোলে সেনেগাল চ্যাম্পিয়ন

৬০ বছরের অপেক্ষার অবসান

ক্রীড়া ডেস্ক
সাদিও মানের গোলে সেনেগাল চ্যাম্পিয়ন

অবশেষে শিরোপা দেখা পেলো সেনেগাল। গত আসরের রানার্স আপ তেরাঙ্গার সিংহরা এবার জয় করেছে আফ্রিকান নেশনস কাপের শিরোপা। সর্বাধিকবার চ্যাম্পিয়ন মিসরকে টাইব্রেকারে হারিয়ে প্রথমবারের মতো মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে সেনেগাল। অবসান হয়েছে ৬০ বছরের অপেক্ষার। গোলশূন্য ম্যাচে টাইব্রেকারে মিসরকে ৪-২ গোলে হারিয়ে সেনেগাল শিরোপা জয় করেছে।

তেরেঙ্গা সিংহদের নায়ক ছিলেন সাদিও মানে। টাইব্রেকারের শেষ শটটা তিনি নেন। তার শট জালে স্পর্শ করতেই সেনেগালরা আনন্দে নেচে ওঠে। অন্যদিকে মিসর হতাশায় মুষড়ে পড়ে। একদিকে সাদিও মানের ঘাড়ে চড়ে সাফল্যের বৈতরণী পার হয়েছে সেনেগাল। অন্যদিকে মিসরের মোহাম্মদ সালাহ শট নেওয়ার সুযোগ পাননি।

সাদিও মানে গোল করে নায়ক হয়েছেন। অথচ তিনিই হয়ে যেতে পারতেন খলনায়ক। ম্যাচের শুরুতেই সপ্তম মিনিটে পেনাল্টি পেয়েছিল সেনেগাল। কিন্তু তা থেকে সাদিও মানে গোল করতে পারেননি। তার শট মিসরের গোলরক্ষক গাবাস্কি রুখে দিয়েছিলেন। শুধু এই পেনাল্টি নয়, গাবাস্কি সেনেগালের সামনে চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। অতিরিক্ত সময়ে অন্তত তিনবার তিনি সেনেগালকে গোল থেকে বঞ্চিত করেছেন।

সেনেগাল ও মিসরের মধ্যে ফাইনালের ম্যাচে আরও এক লড়াই ছিল। সাদিও মানে ও মোহাম্মদ সালাহ। ক্লাব ফুটবলে তারা সতীর্থ। দুইজনই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের খেলোয়াড়। ক্লাবে সতীর্থ হলেও ইয়াউন্দেও ওলেম্বে স্টেডিয়ামে তারা শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নেমেছিলেন। সে লড়াইয়ে সাদিও মানের জয় হয়েছে।

আফ্রিকান নেশসন কাপে সেনেগালের রেকর্ড খুব একটা সমৃদ্ধ নয়। গতবারের রানার্স আপ হলেও এবার নিয়ে ৬০ বছরেরও বেশি পুরানো এ প্রতিযোগিতায় আগে মাত্র দুইবার ফাইনালে খেলার সুযোগ পেয়েছে। ২০০২ সালে প্রথমবার ফাইনাল খেলেছিল তারা। বেশির ভাগ সময় তারা প্রথম রাউন্ডেই নিজেদের দৌঁড়ঝাপ সীমাবদ্ধ রেখেছে। অন্যদিকে মিসরের সামনে ছিল রেকর্ড অষ্টমবারের মতো শিরোপা জয়ের হাতছানি। তবে সালাহর জন্য প্রথম। কিন্তু সালাহ’র অপেক্ষা শেষ হলো না।

নক আউট পর্বে চার ম্যাচের একটাতে মোহাম্মদ সালাহ’র দল স্বাভাবিক জয় পায়নি। প্রত্যেকটি ম্যাচই অতিরিক্ত সময়ে গড়িয়েছে। এর মধ্যে একটা মাত্র ম্যাচে তারা অতিরিক্ত সময়ে জয় পেয়েছে। অন্য তিন ম্যাচ টাইব্রেকারে গড়িয়েছে। এ সময় গোলরক্ষক গাবাস্কি চারটি পেনাল্টি রুখে দিয়েছেন। দলের নায়কও হয়েছেন। কিন্তু শেষ ম্যাচে তিনি পারলেন না।

টাইব্রেকারে দুই দলই প্রথম শটে গোল করেছিল। সেনেগাল দ্বিতীয় শটেও লক্ষ্যভেদ করে। কিন্তু মিসর দ্বিতীয় শটে গোল করতে পারেনি। পিছিয়ে পড়লেও গাবাস্কি সেনেগালের তৃতীয় শট রুখে দিয়ে সমতা ধরে রেখেছিলেন। কিন্তু মিসর চতুর্থ শটে গোল করতে ব্যর্থ হয়। সেনেগালের হয়ে পঞ্চম শট নেওয়া সাদিও মানে গোল করলে মিসরের আর পঞ্চম শট নেওয়া হয়নি। রাউন্ড অব সিক্সটিনে মিসরের হয়ে পঞ্চম শট নিয়েছিলেন সালাহ। এ ম্যাচেও সে পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু সালাহ’র আর শট নেওয়ার দরকার পড়েনি।

তেরাঙ্গার সিংহরা শিরোপা উৎসব করলেও সালাহ’র সামনে প্রতিশোধ নেওয়ার একটা সুযোগ রয়েছে। কাতার বিশ্বকাপে আফ্রিকা অঞ্চল থেকে এখন কোন দলই বিশ্বকাপের টিকেট চূড়ান্ত করতে পারেনি। আগামী মাসেই এ অঞ্চলে তৃতীয় রাউন্ডের খেলা শুরু হবে। সেখানে সেনেগাল ও মিসর মুখোমুখি হবে। ২৪ মার্চ প্রথম লেগের খেলা। ২৭ মার্চ ফিরতি লেগ অনুষ্ঠিত হবে।

শিরোপা জিতে স্বাভাবিকভাবেই খুশি সেনেগাল কোচ আলিউ সিজে। তিনি বলেন, ‘এখানে প্রমাণিত হয়েছে যদি কেউ কঠোর পরিশ্রম করে তাহলে অবশ্যই তা পাবে। আমি এখন খুব আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছি। কেননা এই ট্রফির জন্য সেনেগালের মানুষ ৬০ বছর অপেক্ষা করেছে।

 

মন্তব্য

Beta version