দেখতে দেখতে শেষের পথে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। রাউন্ড রবিন লিগের আর মাত্র চারটি ম্যাচ বাকি। এরপর শুরু হবে প্লে অফ রাউন্ড। তারপর ফাইনাল। ইতোমধ্যে সিলেট ঘুরে এসেছে বিপিএল। সেই পর্বে দুটি দল প্লে অফ রাউন্ড নিশ্চিত করেছে। প্রথম দল হিসেবে প্লে অফে নাম লেখায় সাকিবের ফরচুন বরিশাল। এরপর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। বাকি রয়েছে দুটি দলের প্লে অফ রাউন্ড নিশ্চিত করা। এই লড়াইয়ে রয়েছে তিনটি দলÑ ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা। হারের চক্রে থাকা সিলেট সানরাইজার্স প্লে অফের লড়াই থেকে ছিটকে পড়েছে আগেই।
ছয় দলের টুর্নামেন্ট। রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে প্রত্যেক দল সবার সঙ্গে খেলবে দুটি করে ম্যাচ। সেই হিসেবে প্রত্যেক দলের ম্যাচের সংখ্যা ১০টি। ৯ ম্যাচে ছয় জয় ও দুই হারে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে ফরচুন বরিশাল। ৮ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এই দুই দলের প্লে অফ নিশ্চিত। তৃতীয় স্থানে রয়েছে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা। ৯ ম্যাচে দলটির পয়েন্টও ৯। ৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় চতুর্থ স্থানে মুশফিকের খুলনা টাইগার্স। পঞ্চম স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ৯ ম্যাচে দলটির পয়েন্ট ৮। সবার নিচে সিলেট। ৯ ম্যাচে দলটির জয় মাত্র একটিতে। একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে পয়েন্ট ভাগাভাগি হওয়ায় সাকুল্যে তিন পয়েন্ট বোপারা ব্রিগেডের।
শুক্রবার মিরপুরে দিনের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দলটির প্রতিপক্ষ খুলনা টাইগার্স। কুমিল্লার প্লে অফ নিশ্চিত। দলটির লক্ষ্য জয় দিয়ে আরো ওপরের দিকে নিজেদের নিয়ে যাওয়া। তবে খুলনার জন্য ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচে জয় পেলে খুলনার পয়েন্ট হবে ১০। বাকি থাকবে একটি ম্যাচ। প্লে অফের খুব কাছাকাছি চলে যাবে মুশফিকরা। হেরে গেলেও সুযোগ থাকবে তাদের। সে ক্ষেত্রে জিততে হবে পরের ম্যাচ। আর তাকিয়ে থাকতে হবে চট্টগ্রামের ম্যাচের দিকে। ওই ম্যাচে সিলেটের বিরুদ্ধে জিতলে খুলনার সঙ্গে পয়েন্ট হবে সমান হবে চট্টগ্রামের। নেট রান রেটের হিসেবে এগিয়ে থাকা দল যাবে প্লে অফ রাউন্ডে। তবে শেষ ম্যাচে চট্টগ্রাম হেরে গেলে একটি মাত্র জয়ে প্লে অফ নিশ্চিত হবে খুলনার।
দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা। তাদের প্রতিপক্ষ ফর্মে থাকা সাকিবের ফরচুন বরিশাল। বরিশালের প্লে অফ আগেই নিশ্চিত। তবে ঢাকার জন্য ম্যাচটি মহাগুরুত্বপূর্ণ। প্লে অফে যেতে হলে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই তাদের। ফলে মাহমুদউল্লাহরা জয়ের জন্য কঠোর মানসিকতা নিয়ে মাঠে নামবে, তা সহজেই অনুমেয়। তবে এই ম্যাচে হেরে গেলেও ঢাকার সুযোগ থাকবে প্লে অফ রাউন্ডে যাওয়ার। সে ক্ষেত্রে খুলনাকে হারতে হবে বাকি দুই ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সঙ্গে। অন্যদিকে সিলেটের সঙ্গে হারতে হবে চট্টগ্রামকেও। সে ক্ষেত্রে ঢাকার পয়েন্ট থাকবে ৯, খুলনা ও চট্টগ্রামের পয়েন্ট থাকবে ৮ করে।
খুলনা এক ম্যাচ জিতলেও ঢাকার সুযোগ থাকবে। খুলনার পয়েন্ট হবে তখন ১০। এরপর শনিবার চট্টগ্রাম যদি হেরে যায় ৯ পয়েন্ট নিয়েই চতুর্থ দল হিসেবে প্লে অফে যাবে ঢাকা। তৃতীয় দল হিসেবে যাবে খুলনা। সেই হিসেবে বেশ চাপে রয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। শনিবার মিরপুরে দিনের প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম মাঠে নামবে সিলেটের বিরুদ্ধে। ধারেভারে এগিয়ে থাকছে অবশ্য চট্টগ্রাম। আর সিলেট তো হারের চক্রে ঘূর্ণায়মান। সব আশা শেষ হয়ে যাওয়ায় সিলেট অনেকটাই চাপহীন। তারা খেলবে ভয়ডরহীন ক্রিকেট। সে ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের পা হড়কাতেও পারে। তবে শেষ ম্যাচ জিতে থাকতে পারলে চট্টগ্রামের আশা বেঁচে থাকবে। চট্টগ্রাম শেষ ম্যাচ জিতেও বাদ পড়তে পারে, সে ক্ষেত্রে ঢাকা ও খুলনাকে নিজেদের সব ম্যাচ জিততে হবে।
সব মিলিয়ে শেষ বেলায় প্লে অফে যাওয়ার লড়াইটা বেশ জমে উঠেছে। এখন দেখার বিষয় বরিশাল ও কুমিল্লার সঙ্গে কোন দুটি দল যায় প্লে অফ রাউন্ডে। আজ ও কালের চারটি ম্যাচ হওয়ার পরই সেই হিসেব পরিস্কার হবে। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে প্লে অফ রাউন্ড। দিনের প্রথম ম্যাচ এলিমিনেটর ম্যাচ, মানে পয়েন্ট তালিকায় তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান অধিকারী দল লড়বে। দ্বিতীয় ম্যাচ প্রথম কোয়ালিফায়ার। এখানে লড়বে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষ দুটি দল। ১৬ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচ। এই ম্যাচে লড়বে প্রথম এলিমিনেটর ম্যাচের জয়ী দল ও প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচের হেরে যাওয়া দল। ১৮ ফেব্রুয়ারি শিরোপা নির্ধারণী ফাইনাল।
মন্তব্য