ফুটবল মাঠে খেলোয়াড় হিসেবে যে আর ফিরতে পারবেন তা কল্পনাও করতে পারেননি ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেন। গত বছর অনুষ্ঠিত ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার সময় হঠাৎ করে মাঠের মধ্যে অস্স্থু হয়ে পড়েছিলেন ডেনমার্কের এই খেলোয়াড়। পরীক্ষায় হার্টের সমস্যা ধরা পড়ে এরিকসেনের। এ অবস্থায় আর কখনও মাঠে ফিরতে পারবেন তা ভাবতেই পারেননি। মাঠে না ফেরার প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেছিলেন। তাই তো একজন ফুটবল খেলোয়াড়ের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস বুট জোড়া ডাক্তারকে নিয়ে নিতে বলেছিলেন এরিকেসন।
মাত্র আট মাস ব্যবধানে এরিকসেন আবার মাঠে ফিরেছেন। মূলত ২০০০ সালের টুর্নামেন্ট হলেও করোনাভাইরাসের কারণে এটি ২০২১ সালের জুন মাসে মাঠে গড়ায়। ফলে এ ঘটনার আট মাস পর আবার মাঠে ফেরা এরিকসেন খেলবেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল ব্রেন্টফোর্ডের হয়ে। গত শুক্রবার তিনি ব্রেন্টফোর্ডের হয়ে নিজের পরিচয় তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে এরিকসেন বলেন, ‘আমি মাঠ থেকে যখন হাসপাতালে যাই তখন অ্যাম্বুলেন্সে থাকা ডাক্তারকে বলেছিলাম আমার বুট রেখে দেন। এগুলো আর আমার দরকার হবে না। কয়েকদিন পর আমার বান্ধবীকেও আমি একই কথা বলেছিলাম। একই সঙ্গে তাকে আমি আরও বলেছিলাম যদি সবকিছু ভালোভাবে হয় তাহলে হয়তো এটি পরিবর্তন হতে পারে। এ ঘটনার দ্রুত পরিবর্তন হয়েছে তবে আমি যে এখানে এসেছি তার জন্য আমাকে অনেক পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। মাঠে ফেরার জন্য ডাক্তারের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেতে এবং আবার আমি খেলায় ফিরতে চাই এটা তাকে বোঝাতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে।’
এরিকসেন আরও বলেন, একটা আইসিডি নিয়ে খেলতে আমার নিজেকে প্রমাণ করতে হবে এটা আমি শুরু থেকেই বুঝতে পেরেছিলাম। ফুটবল কিভাবে খেলতে হয় তা আমি ভুলে যায়নি। আমার শরীর এখনও আগের অবস্থায় আছে। আমার লক্ষ্য এবং আমার সামর্থ্য একই পর্যায়ে থাকবে। এর কোনো পরিবর্তন হয়নি। আমি প্রমাণ করতে চাই, আমি আগে যেমন ছিলাম এখনও তেমন খেলোয়াড় রয়েছি।’
জুন মাসে ফিনল্যান্ডের বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচে অসুস্থ হয়েছিলেন এরিকসেন। মাঠেই তাকে জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা দেওয়া হয়। তারপর থেকে তিনি মাঠের বাইরে ছিলেন। ২৯ বছর বয়সী এরিকসেন ব্রেন্টফোর্ডের সঙ্গে স্বল্প মেয়াদের চুক্তি করেছেন। এ মৌসুমের শেষ সময় পর্যন্ত তার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে ব্রেন্টফোর্ডের। সোমবার তিনি একটা প্রদর্শনী ম্যাচ খেলবেন।
অসুস্থ হওয়ার আগে এরিকসেন ইন্টার মিলানের খেলোয়াড় ছিলেন। গত ডিসেম্বরে সে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। তারপর ব্রেন্টফোর্ডে যোগ দেওয়ার আগে আয়াক্সের হয়ে অনুশীলন করেছিলেন। এরিকসেনের শরীরে ইম্প্যালানট্যাবল কার্ডিওভার্টার ডেফিব্রিলেটর (আইসিডি) বসানোর পরই ইন্টার মিলান তার চুক্তির ইতি টানে। কেননা ইতালিয়ান লিগে আইসিডি নিয়ে পেশাদার ফুটবল খেলার অনুমোদন দেয় না।
এরিকসেন বলেন, ‘আমাকে রক্ষার জন্য যে এই আইসিডি। যদি খারাপ কিছু ঘটে তাহলে আমার আর ডেফিব্রিলেটর দরকার হবে না, কেননা এটি আমার কাছে আছে। এটা শুধুমাত্র অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য। আমি অন্য কারো তুলনায় বেশি সুরক্ষিত। এটি নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই। আমি স্বাভাবিক বোধ করি। একটা মাত্র আমার সমস্যা, আর তা হচ্ছে যখন কোনো বিমানবন্দরে যাব তখন স্ক্যানার ব্যবহার করা যাবে না। আমাকে ভিন্ন পথ ব্যবহার করতে হবে।’
মন্তব্য