-->

চেলসি ধনকুবের আব্রামোভিচের স্বপ্ন পূরণ

ক্রীড়া ডেস্ক
চেলসি ধনকুবের আব্রামোভিচের স্বপ্ন পূরণ

পালমেইরাসের বিপক্ষে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনাল চলছে। আবুধাবীর মোহাম্মদ বিন জায়েদ স্টেডিয়ামের ভিআইপি এলাকায় বসে অন্যদের সঙ্গে খেলা উপভোগ করছেন চেলসির মালিক বিশিষ্ট ধনকুবের রোমান আব্রামোভিচ। সঠিক সময়টা যখন আসলো, রেফারির শেষ বাঁশিটা বেজে উঠলো তখন এই ধনকুবের আনন্দে হাততালি দিয়ে উঠলেন। স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় মুখে বিজয়ের হাসি ফুটে উঠলো। সহকারীর সঙ্গে হাই ফাইভও করলেন। এরই ফাঁকে মুখের কালো মাস্কটা সরিয়ে একটু গলাটা ভিজিয়ে নিলেন।

মুখে বিজয়ের হাসি বা সহকারীর সঙ্গে হাই ফাইভ যে স্বাভাবিক তা কিন্তু নয়। এ সময়ের জন্য রোমান আব্রামোভিচকে একটা বা দুটো বছর প্রায় দুশক অপেক্ষা করতে হয়েছে। রাশিয়ান এ ধনকুবের ২০০৩ সালে চেলসির মালিকানা গ্রহণ করেছিলেন। একটাই উদ্দেশ্য ছিল। আর তা হচ্ছে সাফল্যের মাধ্যমে বিশ্ব ফুটবলে আধিপত্য। পালমেইরাসকে ফাইনালে হারিয়ে সেই উদ্দেশ্য সফলের আরও একটা ধাপ পার হয়েছেন তিনি। অন্যভাবে বললে লক্ষ্যে পৌঁছে গেছেন তিনি। কেননা বিশ্ব ক্লাব কাপ ক্লাব শ্রেষ্ঠত্বেরই টুর্নামেন্ট। এবার সেই টুর্নামেন্টরই শিরোপা জিতেছে চেলসি।

ইউরোপে অবশ্য বিশ্ব ক্লাব কাপের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে একটু প্রশ্ন থাকতে পারে। তারপরও পালমেইরাসকে হারিয়ে সেই শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে চেলসি। এ জন্য অবশ্য কম পথ পাড়ি দিতে হয়নি। খরচটা একবারে কম নয়। চেলসির ইতিহাসে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকে খেলোয়াড় দলে ভেড়াতে হয়েছে। রোমেলু লুকাকুকে ৯৭.৫ মিলিয়ন পাউন্ডে দলে ভেড়ানো হয়েছে। মিডফিল্ডার কাই হাভের্টজে দলে ভেড়াতে খরচ হয়েছে ৭১ মিলিয়ন পাউন্ড। ফাইনালে দুইজনই তাদের পারফরম্যান্সের স্বাক্ষর রেখেছেন। লুকাকু গোলে এগিয়ে গিয়েছিল চেলসি। ম্যাচের শুরুতেই তিনি দলকে আনন্দে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। পরে পালমেইরাস সমতা ফেরালেও চেলসিকে জয় থেকে দূরে রাখতে পারেনি। টাইব্রেকারের জন্য যখন উভয় দল প্রস্তুতি নিচ্ছিল তখন হাভের্টজ করেন জয়সূচক গোল।

রোমান আব্রামোভিচ দায়িত্ব নেওয়ার পর চেলসির এটা ২১তম ট্রফি জয়। ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের আগে স্বাভাবিকভাবে আব্রামোভিচ জয় করেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা। পরপর দুই বছরে দুটো বড় শিরোপা জয়টা আব্রামোভিচকে অন্যরকম আনন্দে ভাসিয়ে দেয়।এ জয়ের আনন্দে তিনি ক্লাবের নির্বাহী পরিচালক মারিনা গ্রানোভস্কিয়াকে সঙ্গে করে আব্রামোভিচ মাঠে চলে আসেন। সেখানে তিনি কোচ টমাস টুখেলকে অভিনন্দন জানিয়ে বুকে টেনে নেন। সেখানে ক্লাবের টেকনিক্যাল ও পারফরম্যান্স ডিরেক্টর পিটার চেকের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। তিনি চেকের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন এবং খেলোয়াড়রা একত্রিত হয়ে ট্রফি তুলে ধরেন।

চেলসি এক দশক আগে যখন বিশ্ব ক্লাব কাপের ফাইনালে খেলেছিল তখন পিটার চেক গোলপোস্টের দায়িত্বে ছিলেন। চেক চেলসির হয়ে একের পর এক শিরোপা জিতেছেন কিন্তু কখনই বিশ্ব ক্লাব কাপের শিরোপার দেখা পাননি। এবারের জয়ের মাঝ দিয়ে ইউরোপের গর্বিত পাঁচ ক্লাবের একটিতে নাম লেখালো চেলসি। তাদের আগে এ শিরোপা জয় করেছে জুভেন্টাস, আয়াক্স, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও বায়ার্ন মিউনিখ।

চেলসি সমর্থকরা একটা গান সব সময় গেয়ে থাকেন ‘আমরা সবকিছু জয় করেছি।’ বিশ্ব ক্লাব কাপ জয়ের মধ্যে দিয়ে তাদের সে গান বাস্তবে রূপ নিয়েছে।

ক্লাবের মালিক তিনি, অথচ খেলোয়াড়দের সঙ্গে খুব একটা দেখা সাক্ষাতের সুযোগ পান না আব্রামোভিচ। ইংল্যান্ড ও রাশিয়ার মধ্যে কুটনৈতিক সম্পর্ক স্বস্তিদায়ক না হওয়ার তার ভিসা নিয়ে জটিলতা রয়েছে। চেলসির খেলা দেখার যখন সুযোগ হয় তখন সে সুযোগ তিনি হাতছাড়া করেন না। গত বছর ফাইনাল দেখার সুযোগ তিনি নষ্ট করেননি। কোচ টমাস টুখেলও জানেন, ফাইনাল দেখার স্বপ্ন আবারও দেখছেন আব্রামোভিচ।

 

মন্তব্য

Beta version