ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে বড় লজ্জায় ডুবেছে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। আড়াই দিনেরও কম সময়ের মধ্যে ইংনিস ব্যবধানে হেরেছে। টিম সাউদির বিধ্বংসী বোলিংয়ের তোপে দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১১১ রানে অল আউট হয়ে ইনিংস ও ২৭৬ রানের বড় ব্যবধানে হারের লজ্জায় ডুবেছে। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ইনিংসে ৯৫ রানের জবাবে নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৪৮২ রান করেছিল। এ জয়ের মাঝ দিয়ে নিউজিল্যান্ড সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথমবার সিরিজে জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের পরিসংখ্যানটা তেমন সমৃদ্ধ নয়। এ পর্যন্ত ৪৬ লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ড মাত্র পাঁচ ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেছে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে শেষবার নিউজিল্যান্ড যে জয় পেয়েছিল তা অনেকেরই স্মৃতিতে নেই। আর নতুন প্রজম্মের তো তা দেখার সুযোগই হয়নি। কেননা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ জয়টা এসেছির ১৮ বছর আগে ২০০৪ সালে। তারপর এই ক্রাইস্টচার্চে জয়। দক্ষিণ আফ্রিকার এ হার টেস্ট ক্রিকেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ হার। দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারটা ইনিংস ও ৩৬০ রানে। ২০০২ সালে জোহানেসবার্গে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছিল তারা।
দক্ষিণ আফ্রিকার হারটা আগের দিনেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। পেস বান্ধব পিচে টিম সাউদি তৃতীয় দিনের শুরুতেই তা নিশ্চিত করে ফেলেন। একে একে পাঁচ উইকেট তুলে নেন তিনি। দুর্দান্ত সব সুইংয়ে প্রোটিয়া ব্যাটারদের নাস্তানাবুদ করেন তিনি। ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়ে তিনি কিউই বোলার হিসেবে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েন।
এ ইনিংসে অবশ্য খুব বেশি আতঙ্ক ছড়াতে পারেননি প্রথম ইনিংসের নায়ক ম্যাট হেনরি। প্রথম ইনিংসে সাত উইকেট নেওয়া হেনরি এ ইনিংসে দুই উইকেট নিয়েছেন। ৫৫ রানে ৯ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় দিন ৩ উইকেটে ৪৩ রান নিয়ে খেলা শেষ করেছিল। তখনই তাদের বড় হার অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। তৃতীয় দিনের শুরুতে টিম সাউদির তোপে ৭৭ রানে বাকি সাত উইকেট হারায়। দিনের দ্বিতীয় বলেই তারা প্রথম উইকেট হারায়। আগের দিন ৯ রান করা ভ্যান ডার ডুসেন তার সংগ্রহকে বাড়াতে পারেননি। ম্যাট হেনরির বলে আউট হন তিনি। আর তখনই নিউজিল্যান্ড বোলাররা প্রোটিয়া ব্যাটারদের লোয়ার অর্ডারদের দেখতে পায়।
কিউই বোলারদের দাপটে প্রোটিয়া ব্যাটাররা এতটাই নিজেদের গুটিয়ে রেখেছিলেন যে, ব্যাট চালানো যেন ভুলে গিয়েছিলেন। প্রথম ১০ ওভারে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় মাত্র ১২ রান। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি হয়। এর মাঝে টেম্বা বাভুমা কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তবে সতীর্থদের এমন আত্মাহুতির মধ্যে এক পর্যায়ে তিনিও পথ হারান। শেষ পর্যন্ত ৭৩ বলে ৪১ রান জমা হয় তার নামের পাশে। ছয়টি বাউন্ডারি ছিল তার ইনিংসে।
বাভুমার পাশে কিছুটা ব্যাট চালিয়েছেন কাইল ভেরেনে। তবে লজ্জা থেকে দলকে রক্ষার জন্য তা মোটেও যথেষ্ঠ ছিল না। ৩০ রান করেছেন তিনি। ৩৮ বলে এ রান করেছেন।
টিম সাউদির এ ইনিংসের পাঁচ উইকেট নিয়ে তার শিকার সংখ্যা ৬। ম্যাট হেনরি পেয়েছেন মোট ৯ উইকেট। কাইল জেমিসন শিকার করেছেন এক উইকেট। আর নিল ওয়াগনারের শিকার সংখ্যা দুই।
মন্তব্য