মাঠে ছিলেন লিওনেল মেসি, নেইমার আর কিলিয়ান এমবাপে। তারকাখচিত দলটির সামনে ২৪ ম্যাচে মাত্র ১০ জয় পাওয়া নতের উড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু ফ্রেঞ্চ লিগে শনিবার রাতে নতে ও প্যারিস সেন্ট জার্মেই ম্যাচে ঘটেছে উল্টো ঘটনা। তারকাসমৃদ্ধ দল পিএসজিকে উড়িয়ে দিয়েছে নতে। ৩-১ গোলে জয় পেয়েছে স্বাগতিক দলটি।
নতে-পিএসজি ম্যাচে ঘটেছে সব অভাবনীয় ঘটনা। নেইমার পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছেন। সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি এমবাপে। নতে লাল কার্ড দেখেও রেহাই পেয়েছে। ম্যাচের সিংহভাগ সময় বলের দখল রেখেছে পিএসজি। ৭২ ভাগ বলের নিয়ন্ত্রণ রেখেছে তারা, আর ২৮ ভাগ নিয়ন্ত্রণ করেছে নতে। তারপরও লজ্জার হার সঙ্গী করতে হয়েছে পিএসজিকে। এ নিয়ে এ মৌসুমে ঘরোয়া লিগে তারা দ্বিতীয়বার হারের মুখ দেখল। অবশ্য এই হার পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ২৫ ম্যাচ শেষে ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে তারা শীর্ষে রয়েছে। তবে জয়ে নতের অবস্থানের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। ম্যাচের আগে তারা শীর্ষ দশের বাইরে ছিল। এক জয়ে তারা পাঁচ নম্বরে উঠে এসেছে।
আবার পিএসজির হার অন্য দলের জন্য তেমন কোনো সুবিধা বয়ে আনেনি। তাদেরকে দ্বিতীয় স্থানের লড়তে হবে। কেননা দ্বিতীয় স্থানে থাকা মার্শেই ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
ম্যাচের শুরু থেকেই মাঠে ছিলেন মেসি, নেইমার, এমবাপে। খেলা শুরু হতেই নতের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পিএসজি। গোলের সুযোগও তৈরি করেছিল। কিন্তু ঘটে ভিন্ন ঘটনা। নিজেদের মাঠে পিএসজিকে চমকে দিতে মোটেও দেরি করেনি নতে। ম্যাচের বয়স চার মিনিট হতে না হতেই রেফারিকে গোলের বাঁশি বাজাতে হয়। পিএসজি নয় গোল পেয়ে যায় নতে। র্যান্ডল কোলো মুয়ানি গোল করে নতেকে এগিয়ে নেন। বা দিকে থাকা মোসেস সিমনের কাছ বল পেয়ে ঝড়ের বেগে পিএসজি ডিফেন্ডারদের পেছনে ফেলে হালকা টোকায় বলকে পিএসজির গোলরক্ষকের দুই মাঝ দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন।
শুরুর এই গোল সত্যিকারভাবেই পিএসজিকে চমকে দিয়েছিল। এমনভাবে তারা চমকে গিয়েছিল যে, নতে যে ১২ মিনিট ব্যবধানে আবার গোল উৎসব করবে তা তারা কল্পনা করতে পারেনি। ১৬ মিনিটে নতে দ্বিতয়ি গোল পেয়ে যায়। দলের টিনএজার সদস্য কোয়েন্টিন মার্লিন গোল করেন। এটি ছিল নতের হয়ে তার প্রথম গোল। এ গোলের আগে যেন পিএসজিকে আতঙ্কও পেয়ে বসেছিল।
মার্লিনের গোলের রূপকার ছিলেন ওসমান বুকারি।। মার্লিনের গোলের সময় পিএসজি’র বক্সের মধ্যে পিএসজি’র সাত খেলোয়াড় ছিলেন। তারপরও তার মার্লিনকে গোল থেকে বঞ্চিত করতে পারেনি। বুকারির ছোট্ট টোকায় পাওয়া বলে জোরালো শটে মার্লিন গোল করেন।
বিরতির দুই মিনিট আগে কিলিয়ান এমবাপেকে ফাউল করার অপরাধে নতের ডিফেন্ডার ডেনিস আপিয়াকে লাল কার্ড দেখিয়েছিলেন রেফারি। তবে রেফারি শেষ পর্যন্ত তার সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পারেননি। ভিএআর দেখে লাল কার্ডের পরিবর্তে তাকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করেন। তবে প্রথমার্ধের চমক তখনও শেষ হয়নি। এ অর্থ শেষ হওয়ার আগে নতে আরও একবার পিএসজির গোলে বল পাঠায়। আর তাতেই নতে তিন গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায়।হ্যান্ডবলের সুবাদে পেনাল্টি পায় নতে। আর তা থেকে লুডোভিচ ব্লাস গোল করে দলকে তৃতীয়বার আনন্দে নেচে ওঠার সুযোগ করে দেন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে পিএসজির হয়ে গোল ব্যবধান কমায় নেইমার। মেসির তৈরি করা সুযোগটি কাজে লাগিয়ে গোল করেন এ ব্রাজিলিয়ান। তবে কয়েক মিনিট পর তিনি দলকে হতাশায় ডোবান। এমবাপেকে ফাউলের কারণে পেনাল্টি পেয়েছিল পিএসজি। কিন্তু পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারেননি নেইমার। পিএসজির হয়ে আগের ম্যাচে একই ব্যর্থতায় নাম লিখিয়েছিলেন মেসি। ব্যর্থতার তালিকায় নাম লেখান এমবাপেও। তবে পেনাল্টি মিস নয়, ব্যবধান কমানোর দারুণ সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারেননি। একাধিক সুযোগ পেয়ে গোল করতে না পাওয়ার ব্যর্থতায় হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় পিএসজিকে।
মন্তব্য