-->
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

কোয়ার্টার ফাইনালের পথে এক ধাপ এগিয়ে চেলসি

ক্রীড়া ডেস্ক
কোয়ার্টার ফাইনালের পথে এক ধাপ এগিয়ে চেলসি

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইটা দারুণভাবে শুরু করেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল চেলসি। মঙ্গলবার নিজেদের মাঠের খেলায় তারা লিলকে ২-০ গোলে হারিয়েছে। কাই হাভের্টজ ও ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিক করেন মূল্যবান এই গোল দুটি।

জয়ের ফলে দারুণ এক স্বস্তি কাজ করছে কোচ টমাস টুখেলের মনে। ম্যাচে রেকর্ড ট্রান্সফার ফিতে দলে আনা রোমেলু লুকাকু প্রথম একাদশে না রাখার মতো সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত বদলি খেলোয়াড় হিসেবেও তাকে নামাননি। গত শনিবার ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে ভালো খেলতে না পারায় এ ম্যাচে লুকাকুকে মাঠে না নামানোর সিদ্ধান্ত নেন টুখেল। ক্রিস্টালের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয় পাওয়া ম্যাচে লুকাকু মাত্র সাতবার বল স্পর্শ করার সুযোগ পেয়েছিলেন। ২০০৩-০৪ মৌসুম থেকে বল স্পর্শ করার রেকর্ড রাখা হচ্ছে। সে অনুযায়ী পুরো ৯০ মিনিট খেলে একজন খেলোয়াড় সবচেয়ে কম বল স্পর্শ করার কীর্তি গড়েছেন লুকাকু।

ফলে লুকাকুকে মাঠে না নামানোর বিষয়ে যে বাজি তিনি ধরেছিলেন তাতে তার জয় হয়েছে। তার বাজি যে ঠিক আছে তা বুঝতেও খুব বেশি সময় চেলসি সমর্থকদের অপেক্ষা করতে হয়নি। কেননা মাত্র অষ্টম মিনিটেই চেলসি গোল উৎসব করেছে।

কাই হাভের্টজ করেন গোলটি। অষ্টম মিনিটে তিনি চেলসিকে উৎসব করার সুযোগ করে দেন। অবশ্য আরো আগেই টমাস টুখেল স্বস্তি পেতে পারতেন। এই হাভের্টজই গোল করার আগে আরও দুইবার উৎসব করার সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন। কিন্তু সুযোগ দুটো তিনি কাজে লাগাতে পারেননি। একবার তো তার শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে কোনোমতো গোল হজম থেকে রক্ষা পান লিল গোলরক্ষক। তবে অষ্টম মিনিটে হাভের্টজের হেড আর রুখতে পারেননি। হাকিম জিয়েখের কর্নার কিক থেকে পাওয়া হেডে গোল করে তিনি দলকে এগিয়ে নেন।

বিরতি পর্যন্ত এই এক গোলেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল চেলসিকে। ৬৬ মিনিটে তারা ম্যাচে দ্বিতীয় ও শেষবারের মতো গোল উৎসব করার সুযোগ পায়। ক্রিস্টিয়ান পুলিসিস এ গোলটি করেন।

স্ট্যাম্পফোর্ডে অনুষ্ঠিত এ ম্যাচে চেলসিকে খুব বেশি জটিলতায় ফেলার সুযোগ পায়নি লিল। বিশেষ করে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা লিলের সব আক্রমণ সাফল্যের সঙ্গে রুখে দিয়েছেন। ৩৭ বছর বয়সী সিলভা অসাধারণ খেলা উপহার দিয়েছেন। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ভালোভাবে নিজের হাতে রেখেছিলেন। শুধু তাই নয়, অভিজ্ঞতা আর সঠিক সময়ে সঠিক অবস্থান নিয়ে প্রতিপক্ষের সব আক্রমণ রুখে দিয়েছেন। আর কন্তে খেলেছেন অসাধারন, যা টুখেলের দুঃশ্চিন্তা অনেকটা কমিয়ে দিয়েছিল।

এমন স্বস্তির দিনে অস্বস্তিও কম নয় টুখেলের। আগামী রোববার ইএফএল কাপের ফাইনাল তাদের। ওয়েম্বলিতে লিভারপুল তাদের প্রতিপক্ষ। কিন্তু সে ম্যাচে টুখেল পাবেন না এ ম্যাচের প্রথম গোলের রূপকার জিয়েখ ও মিডফিল্ডার মাতেও কোভাসিসকে। দুইজনই ইনজুরিতে পড়েছেন। ফলে নতুন করে তাকে দল সাজাতে হবে। আর এ ম্যাচে সুযোগ পেতে পারেন লুকাকু।

টুখেল বলেন, ‘বিরতির সময় মাতেওকে পরিবর্তন করা উচিত ছিল। আমি জিয়েখের ব্যাপারে এখনও ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলিনি। আশা করছি তার ইনজুরিটা তেমন মারাত্মক কিছু হবে না। রোববারের ম্যাচের আগে আমি যথেষ্ঠ সময় পাচ্ছি। আশা করছি তারা এ সময়ের আগে সুস্থ হয়ে উঠবে।

ম্যাচ শেষে হাভের্টজ বলেন, আমরা জানতাম এটি একটি কঠিন ম্যাচ হবে। তারা খুব ভালো খেলেছে। বিশেষ করে প্রথমার্ধ আমাদের জন্য খুবই কঠিন ছিল। যাহোক এখন ম্যাচের বিরতি চলছে। দ্বিতীয়ার্ধে অর্থাৎ অ্যাওয়ে ম্যাচেও আমাদের জয় পেতে হবে।’

স্ট্রাইকার সমস্যার ব্যাপারে হাভের্টজ বলেন, ‘আমাদের দলে ভালো মানের একাধিক স্ট্রাইকার রয়েছে। এ কারণে খেলোয়াড় পরিবর্তনেরও সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগ থাকা আমাদের খেলাটা প্রতিপক্ষের পক্ষে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে এ ম্যাচে আমরা সেরা খেলা খেলতে পারিনি। যাহোক আমরা জয় পেয়েছি। সামনে আমাদেরও আরও একটা পরীক্ষা রয়েছে। লিভারপুলের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচ। ফলে রোববার আমাদের আরও একটা ট্রফি জয়ের সুযোগ রয়েছে। আশা করছি এ ম্যাচেও আমরা জয় পাব।’

মন্তব্য

Beta version